মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মৃত্যুর পরও কি জীবনকে অনুভব করতে পারে মানুষ? হৃৎস্পন্দন, রক্তপ্রবাহ থেমে যাওয়ার পরেও কি সক্রিয় থাকে মস্তিষ্ক, অন্তত কিছুক্ষণ? মস্তিষ্কে আন্দোলিত হয় কোনো তরঙ্গ যা কি না মৃত্যুর অতলে তলিয়ে যাওয়ার সময়ও তুলে ধরে ফেলে আসা জীবনের ছবি? সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এসব প্রশ্নকেই উস্কে দিল। যা হৃৎস্পন্দন, রক্ত প্রবাহ পুরোপুরি থেমে যাওয়ার পরের কিছুক্ষণ ধরে মস্তিষ্কে কী কী ঘটে সেই সব ঘটনাই রেকর্ড করেছে।
হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে ৮৭ বছর বয়সী এক রোগীর হৃৎস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ থেমে যাওয়ার আগে ও পরের ৩০ সেকেন্ডে ঠিক কী কী ঘটনা ঘটে ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাফি (ইইজি) যন্ত্রে তার খুঁটিনাটি রেকর্ড করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিজ্ঞানীরা। সেই রেকর্ডিং চলার সময়েই রোগীর মৃত্যু হয় হৃদরোগে। ইইজি-তে জানা যায়, তার মৃগী হয়েছিল।
তার মৃত্যু-মুহূর্তের ইইজি রেকর্ডিং খতিয়ে দেখে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, মৃত্যুর সময় নানা ধরনের তরঙ্গে আলোড়িত হয়েছিল তার মস্তিষ্ক। তার চোখে ভেসে উঠেছিল সেই সব তরঙ্গের আন্দোলন। ভেসে উঠেছিল মানবমস্তিষ্কের বিশেষ ধরনের আলফা ও গামা তরঙ্গগুলোরও ছবি। রেকর্ডিং খতিয়ে দেখে গবেষকদের ধারণা, হৃৎস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরের ৩০ সেকেন্ডেও সচল সক্রিয় ছিল ওই রোগীর মস্তিষ্ক। তিনি অনেক কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন জীবনের, মস্তিষ্কের ওই তরঙ্গগুলোর আন্দোলনের মাধ্যমে। তরঙ্গগুলো একে অন্যের সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল। কোনো তরঙ্গ অন্য একটি তরঙ্গকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছিল। সেই রেকর্ডিংয়ের সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং নিউরোসায়েন্স’-এ।
গবেষকদের বক্তব্য, মৃত্যুর পরও কিছুক্ষণ ওই রোগীর মস্তিষ্কে আলফা ও গামা তরঙ্গের মতো যে তরঙ্গগুলোর প্রবল আন্দোলন রেকর্ডিংয়ে ধরা পড়েছে সেই তরঙ্গগুলো চেতনার দ্যোতক। সেই তরঙ্গগুলো মস্তিষ্কের স্মরণশক্তির কোষ (‘মেমরি সেল’)-গুলোরও সজীব সক্রিয় থাকার প্রমাণ। সেই তরঙ্গগুলোকে মৃত্যুর ৩০ সেকেন্ড পরও রোগীর মস্তিষ্কে প্রবলভাবে আন্দোলিত হতে দেখে গবেষকদের ধারণা, রোগীর জীবনের স্মৃতি সেই সময়ও জাগ্রত ছিল। রোগী দেখতেও পেয়েছিলেন সেই সময় তার ফেলে আসা জীবনের টুকরো বেশ কিছু ছবি। গাড়ি চলতে চলতে ব্রেক কষলেও যেমন গতিজাড্যের দরুন তার চাকা কিছুটা গড়িয়ে যায় তেমনই ওই তরঙ্গগুলোও হৃৎস্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ থেমে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিল।
যা একটা কথাই বলে— রোগী তখনও তার চেতনা হারাননি পুরোপুরি। জীবনের ফেলে যাওয়া দিনগুলোর ছবি তখনও তার চোখে ভেসে উঠছিল। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এ গবেষণা মৃত রোগীর চেতনা কতক্ষণ পর্যন্ত জাগ্রত থাকতে পারে সে সম্পর্কে আরও গবেষণার দরজা খুলে দিল। যারা মৃত্যুর পর তাদের অঙ্গদানের অঙ্গীকার করে যান তাদের অঙ্গ ঠিক কতটা সময় পর তুলে নেওয়া উচিত সে ব্যাপারেও নতুনভাবে ভাবনাচিন্তা করার পথ দেখাতে পারে এ গবেষণা। সূত্র : ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং নিউরোসায়েন্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।