পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামের নামে প্রচারিত সহিংস ওয়াহাবিবাদ এবং সউদী আরবের মধ্যকার সম্পর্ক অনেক আগেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্তু এর চ‚ড়ান্ত রূপটি ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। কারণ, ১৭৪৪ সালের সউদী রাষ্ট্রের গোড়া পত্তনকারী মুহাম্মদ বিন সউদ এবং ওয়াহাবিবাদের জনক মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাবের উপজাতীয়-ধর্মীয় জোটের অনৈসলামিক অনুশীলন বিরোধী যুদ্ধের সাথে সউদী রাষ্ট্রের গোড়া পত্তনের গল্পটির সংযোগ এবং ইতোমধ্যেই ফাঁপা হয়ে যাওয়া আদর্শর্টির প্রতি আনুগত থাকার প্রয়োজন সউদী আরবের আর নেই।
দুই বছর আগে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে সউদী শিক্ষাবিদ খালেদ আল-দাখিল বলেন, ‘আপনারা লোকেদের বলেছেন যে, পুরো গল্পটি ছিল শিরক সম্পর্কে: শেখ মুহাম্মদ বিন আব্দেল ওয়াহাব শিরকবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিলেন, মুহাম্মদ বিন সউদ তার সাথে যোগ দিয়েছিলেন এবং তারা একসাথে শিরকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এটি বলে, আপনারা রাষ্ট্রকে অবনমিত করেছেন। আমাদের বরং রাষ্ট্রের ইতিহাস শেখানো উচিত, যা তার চেয়েও বড়। আমরা আমাদের দেশের ইতিহাস অধ্যয়ন করিনি; আমাদেরকে শুধুমাত্র ইবনে গান্নাম এবং ইবনে বিশর (ওয়াহাবিজমের জীবনীকার) এর বাণী শেখানো হয়েছে এবং আমরা এখনও তা করে যাচ্ছি।’
যতক্ষণ পর্যন্ত ওয়াহাবিবাদ এবং সউদী আরবের গল্প পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকছে, ততক্ষণ পর্যন্ত দেশে এবং বিদেশে ওয়াহাবিবাদের কারণে সউদীদের বিব্রত হতে হচ্ছে। তাই এই দু’টি বিষয়কে বিচ্ছিন্ন করে তার দেশের ইতিহাস পুনর্লিখনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন দাখিল। সম্প্রতি নিষিদ্ধ এ সংক্রান্ত বইয়ের লেখক দাখিল বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রের ইতিহাস ভুলভাবে লিখেছি, যে কারণে বেশিরভাগ সউদী দুর্ভাগ্যবশত নিজেদের দেশ বা আরব উপদ্বীপের ইতিহাস জানে না। আপনারা সব কিছুকে শিরক বানিয়ে ফেলেছেন।’
ওয়াহাবিবাদের বিরুদ্ধে দাখিলের সংশোধনবাদী মন্তব্য সউদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে বিরল নয়। এটি সউদী ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান বা এমবিএসের অভ‚তপূর্ব বিবৃতি এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের পটভ‚মিতে এসেছে, যা দেশটিতে ওয়াহাবিবাদের কার্যকলাপকে আমলে নিয়ে ধর্মগ্রন্থগুলোকে সংশোধন ও সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে কট্টর ধর্মগুরুদের বাধা দিতে শুরু করেছে।
ওয়াহাবিবাদকে মোকাবেলার লক্ষ্যে এসব পদক্ষেপের মধ্যে সর্বশেষ হ’ল, ২৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় দিবসের (আল-ইয়াওম আল-ওয়াতানি) পাশাপাশি ২২ ফেব্রæয়ারি সউদী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা (ইয়াওম আল-তাসিস) উপলক্ষে একটি নতুন আনুষ্ঠানিক তারিখ নির্ধারণ করা। সেপ্টেম্বরের জাতীয় দিবসটি ১৯৩২ সালে সউদী আরব রাষ্ট্রের নামে জাতি গঠন উদযাপন করে, আর নতুন তারিখটি মোহাম্মদ বিন সউদের দিরিয়াহ দখল উদযাপন করে, যা এখন ১৭২৭ সালে ‘রাজধানী প্রতিষ্ঠা’ হিসাবে ব্যাপকভাবে উল্লেখ করা হয়।
তবে, জাতীয় ইতিহাস পুনর্লিখনের একটি সাধারণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের চেয়ে যে বিষয়টি কট্টর সউদী আরবের গল্পটিকে আরো তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে, তা হ’ল, ওয়াহাবিবাদের ভাগ্য আর সউদী আরবের সাথে সম্পর্কিত নয়। ঠিক যেমন সউদী আরবের স্বার্থ আর ওহাবিবাদের সাথে আবদ্ধ নয়। ওয়াহাবিবাদের পতনের পথ বহু বছর ধরে তৈরি হয়েছে এবং এটি বিন সালমানের সাধিত রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে কিছুটা সম্পর্কিত। এর মানে হ’ল, সউদী আরব এবং বৃহত্তর অঞ্চল উভয়ই বিভিন্ন কারণে ওয়াহাবিবাদ দমনে অবদান রেখেছে এবং অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ ও পারিপাশির্^ক পরিবেশ ওয়াহাবিবাদের বর্তমান সমস্যাগুলোকে গভীর এবং স্থায়ী করে তুলেছে। সূত্র : নিউজ লাইন্স ম্যাগাজিন। (চলবে...)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।