নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
লক্ষ্য ২১৬ রান, ম্যাচের মাঝপথে কাজটা সহজই মনে হয়েছিল বাংলাদেশের জন্য। ফজলহক ফারুকির তোপে বাংলাদেশ এরপর পথ হারায় শুরুতেই। ১৮ রানে তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেটের পর ২৮ রানে হারায় পঞ্চম উইকেট। এরপর ৪৫ রানে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহও ফেরেন ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে।
আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতে এরপর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিতেছে বাংলাদেশ। আফিফ হোসেন অপরাজিত ছিলেন ৯৩ রানে, মিরাজ করেছেন অপরাজিত ৮১ রান। দুজনের সপ্তম উইকেট জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল ১৭৪ রানে। প্রত্যাবর্তনের দারুণ গল্প লেখার সঙ্গে এ ম্যাচে বেশ কিছু রেকর্ডও নতুন করে লেখা হলো আফিফ-মিরাজের সৌজন্যে।
১৭৪*
রান তাড়ায় বা দ্বিতীয় ইনিংসে সপ্তম উইকেটে বিশ্ব রেকর্ড জুটি এখন আফিফ-মিরাজের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল তারা গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের জুটি। এর আগে এ রেকর্ডটি ছিল ইংল্যান্ডের জস বাটলার ও ক্রিস ওকসের। ২০১৬ সালে নটিংহ্যামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওকস-বাটলার করেছিলেন ১৩৮ রান। ওয়ানডেতে যে কোনো ইনিংসে সপ্তম উইকেটে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ জুটিটি বাটলার ও আদিল রশিদের, ২০১৫ সালে এজবাস্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
১
রানতাড়ায় ৪৫ বা কম রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারানোর পরও জয়- এমন ম্যাচে এর আগে সর্বোচ্চ জুটিটি ছিল ৫৫ রানের। সেটিও ১৯৭৫ সালের। বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৩ রান তাড়ায় ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল গ্যারি গিলমোর ও ডগ ওয়াল্টার্সের ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে। মিরাজ-আফিফের জুটি গতকাল ছাড়িয়ে গেল সেটিকেও।
০
এর আগে কখনোই রান তাড়ায় এতো কম রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজ বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায় মাত্র ৪৫ রানে। এর আগে সবচেয়ে কম রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের জেতার রেকর্ডটি ছিল ২০০৬ সালের। কেনিয়ার বিপক্ষে নাইরোবিতে ১৮৪ রান তাড়ায় ১১২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ জিতেছিল নবম উইকেটে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও আব্দুর রাজ্জাকের ৫০ বলে ৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে। মাশরাফি অপরাজিত ছিলেন ৫৩ বলে ৪৩ রানে, রাজ্জাক ২৩ বলে করেছিলেন অপরাজিত ১৪ রান। সে ম্যাচে ৮৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ, গতকাল হারিয়েছে ২৮ রানেই। এটিও নতুন রেকর্ড।
১২৭
সপ্তম উইকেটে যে কোনো ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি (ছিল) ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের- ১২৭ রানের। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সে জুটি গড়েছিলেন ইমরুল-সাইফউদ্দিন, বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ২৭১ রান তুলে জিতেছিল ২৮ রানে।
রান তাড়া করে জেতা ম্যাচে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সপ্তম উইকেটের জুটি ছিল ৪৯ রানের। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে২৪৯ রানের লক্ষ্যে ১৮৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানোর পর মাহমুদউল্লাহ ও নাঈম ইসলামের ওই জুটিতে কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের, শেষ পর্যন্ত সে ম্যাচটি তারা জিতেছিল ৩ উইকেটে। রানতাড়ায় যে কোনো ম্যাচে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল ৮৫ রানের। ২০০২ সালে চট্টগ্রামে সে জুটি গড়েছিলেন এনামুল হক ও খালেদ মাসুদ। ২০৩ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অবশ্য সেবার থেমেছিল ১৫৩ রানেই।
৯৩* ও ৮১*
সাত বা এর নিচে নেমে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত ইনিংসটি ছিল মাহমুদউল্লাহর। ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনি ৭৩ বলে করেছিলেন অপরাজিত ৭৫ রান। গতকাল আফিফ ছাড়িয়ে গেলেন সেটিকে। মাহমুদউল্লাহর সে রেকর্ড ছাড়িয়ে দুইয়ে আছেন এখন মিরাজ, অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংসে।
স্কোর কার্ড
আফগান দলের বাংলাদেশ সফর
প্রথম ওয়ানডে, চট্টগ্রাম
টস : আফগানিস্তান
আফগানিস্তান ইনিংস রান বল ৪ ৬
গুরবাজ ক তামিম ব মুস্তাফিজ ৭ ১৪ ১ ০
ইব্রাহিম ক ইয়াসির ব শরিফুল ১৯ ২৩ ১ ১
রহমত ক মুশফিক ব তাসকিন ৩৪ ৬৯ ৩ ০
হাশমত ক মুশফিক ব রিয়াদ ২৮ ৪৩ ৩ ১
নাজিব ক রিয়াদ ব শরিফুল ৬৭ ৮৪ ৪ ২
নবি ক মুশফিক ব তাসকিন ২০ ২৪ ২ ০
গুলবাদিন এলবি ব সাকিব ১৭ ২১ ০ ১
রশিদ বোল্ড সাকিব ০ ৩ ০ ০
মুজিব ক শান্ত ব মুস্তাফিজ ০ ৪ ০ ০
ইয়ামিন ক রিয়াদ ব মুস্তাফিজ ৫ ১০ ০ ০
ফজল অপরাজিত ০ ০ ০ ০
অতিরিক্ত (লেবা ৫, ও ১৩) ১৮
মোট (৪৯.১ ওভারে) ২১৫/১০
উইকেট পতন : ১-১১ (গুরবাজ), ২-৫৬ (ইব্রাহিম), ৩-৭৯ (রহমত), ৪-১০২ (হাশমত), ৫-১৬৫ (নবি), ৬-১৯৪ (গুলবাদিন), ৭-১৯৪ (রশিদ), ৮-১৯৫ (মুজিব), ৯-২১৪ (নাজিব), ১০-১২৫ (ইয়ামিন)।
বোলিং : মুস্তাফিজ ৯.১-০-৩৫-৩, তাসকিন ১০-০-৫৫-২, সাকিব ৯-১-৫০-২, শরিফুল ১০-১-৩৮-২, মিরাজ ১০-৩-২৮-০, রিয়াদ ১-০-৪-১।
বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
তামিম এলবি ফজল ৮ ৮ ২ ০
লিটন ক গুরবাজ ব ফজল ১ ৮ ০ ০
সাকিব বোল্ড মুজিব ১০ ১৫ ১ ০
মুশফিক এলবি ব ফজল ৩ ৫ ০ ০
ইয়াসির বোল্ড ফজল ০ ৫ ০ ০
রিয়াদ ক গুলবাদিন ব রশিদ ৮ ১৭ ১ ০
আফিফ অপরাজিত ৯৩ ১১৫ ১১ ১
মিরাজ অপরাজিত ৮১ ১২০ ৯ ০
অতিরিক্ত (লেবা ১১, ও ৪) ১৫
মোট (৪৮.৫ ওভারে) ২১৯/৬
উইকেট পতন : ১-১৩ (লিটন), ২-১৪ (তামিম), ৩-১৮ (মুশফিক), ৪-১৮ (ইয়াসির), ৫-২৮ (সাকিব), ৬-৪৫ (রিয়াদ)।
বোলিং : ফজল ১০-১-৫৪-৪, মুজিব ১০-০-৩২-১, ইয়ামিন ৫-০-৩৫-০, রাশিদ ১০-১-৩০-১, নবি ১০-১-৩২-০, গুলবাদিন ৩.৫-০-২৫-০।
ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
মাচসেরা : মেহেদী হাসান মিরাজ/আফিফ হোসেন।
সিরিজ : ৩ ম্যাচে ১-০তে এগিয়ে বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।