পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রেলওয়ের ২৮৩টি ইঞ্জিনের মধ্যে ৬১ শতাংশই নির্ধারিত আয়ুষ্কাল পার করে ফেলেছে। ২০ বছরের আয়ুষ্কাল পার করায় সেগুলোকে ডুয়েল ফুয়েলে রূপান্তরের প্রস্তাব নিয়ে সংশয়ে পড়েছে রেলওয়ে। সম্প্রতি রেল ভবনে জি-ভলিউশনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনায় রেলের ইঞ্জিনগুলোর বেহাল চিত্র উঠে আসে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশে ১ হাজার ৮৪৬ কিলোমিটার মিটারগেজ এবং ৬৭৬ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইনে দৈনিক ৩৭১টি যাত্রীবাহী কোচ এবং ৫০টির বেশি মালবাহী কোচ চলছে। এদেশে রেলের প্রচলন হয়েছিল ১৮৬২ সালে বাষ্পীয় ইঞ্জিন দিয়ে। এ অঞ্চলের ট্রেনে প্রথম ডিজেল ইঞ্জিন যুক্ত হয় ১৯৫৩ সালে। তবে ১৯৬১ সালেও তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে ৪১৬টি বাষ্পীয় ইঞ্জিন দিয়ে যাত্রীসেবা দেয়া হত। ১৯৮০ সালে সবগুলো বাষ্পীয় ইঞ্জিন তুলে নেয়া হয়।
এখন রেলওয়ের কাছে মিটারগেজ লাইনে চলার জন্য ১৯১টি এবং ব্রডগেজে চলার জন্য ৯২টি লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে চালু রয়েছে ২৬৭টি লোকোমোটিভ। এসব ইঞ্জিনের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর। সেই হিসাবে ৬১ শতাংশ মেয়াদ পার করে ফেলেছে। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশ ইঞ্জিনের বয়স ৪০ বছরের বেশি। সচল মিটারগেজ ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে ৯টি তৈরি হয়েছে ১৯৫৩ সালে। এছাড়া ১৯৬১ থেকে ১৯৬৩ সালের মধ্যে ৩১টি এবং ১৯৬৯ সালে ২১টি তৈরি হয়। ১৯৭৮ সালে তৈরি ১১টি, ১৯৮১ সালে তৈরি ১৫টি, ১৯৮৮ সালে তৈরি ১৬টি, ১৯৯৫ সালে তৈরি ২১টি, ১৯৯৬ সালে তৈরি ৫টি ইঞ্জিন রয়েছে রেলওয়ের বহরে। এছাড়া ১৯৯৩ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে তৈরি ৩৯টি, ২০২০-২০২১ সালে তৈরি ২০টি ইঞ্জিনের হিসাব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে।
গত নভেম্বর মাসে রেল সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাজ্য, জার্মানি, স্পেন এবং ফ্রান্সের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখতে যান। সেখানে জি-ভলিউশনের সঙ্গেও ডুয়েল ফুয়েল প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। তখন তাদের বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে রেলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তার অংশ হিসাবেই এ প্রতিনিধি দলটি রেল ভবনে আসে।
রেলওয়ের ইঞ্জিনের ৬১ শতাংশই নির্ধারিত আয়ুষ্কাল পার করে ফেলায় সেগুলোকে ডুয়েল ফুয়েলে রূপান্তরের প্রস্তাব নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেছেন, রেলওয়েতে এ প্রযুক্তি চালু করা হলে তা লাভজনক হবে কি না, আপাতত পাইলট প্রকল্পে সেটা হয়ত যাচাই করে দেখা যেতে পারে। যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জি-ভলিউশন বাংলাদেশের রেল ইঞ্জিনগুলোকে ডিজেলের পাশাপাশি গ্যাসে চালানোর উপযোগী করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। ডিজেল ও গ্যাস দুটোই জীবাশ্ম জ্বালানি। এ ধরনের জ্বালানি পোড়ালে যে কার্বন গ্যাস পরিবেশে মুক্ত হয়, তাকেই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হচ্ছে। তবে ডিজেলের চেয়ে গ্যাস পোড়ালে কার্বন নির্গমণের মাত্রা অনেক কমে আসে।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের রেলের অধিকাংশ ইঞ্জিনের বয়স ৪২ বছরের ওপরে। এখানে আমাদের তেল গ্যাস দুটোই কিনতে হয়। দুটোই আমদানিনির্ভর। তাই কতটা সাশ্রয়ী হবে সেটাই আমাদের দেখতে হবে।
রেলমন্ত্রী প্রস্তাব করেন, জি-ভলিউশন ও রেলওয়ের একটি যৌথ প্রতিনিধিদল পাহাড়তলী, পার্বতীপুর, ঢাকা এসব এলাকায় রেলের ওয়ার্কশপগুলোতে ঘুরে দেখতে পারে। তারা সরেজমিন দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, এ ধরনের কাজ এখানে করা সম্ভব কিনা।
রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, ডুয়েল ফুয়েল ইঞ্জিন নিয়ে কিংবা পরিবেশবান্ধব রেলপথের বিষয়ে সরকারেরও প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তবে ৬০/৭০ বছরের পুরোনো ইঞ্জিনও রেলের বহরে রয়ে গেছে।
জি-ভলিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস স্মিথ বলেন, কার্বন গ্যাস নির্গমন কমাতে ডুয়েল ফুয়েল ইঞ্জিন একটা ভালো পদক্ষেপ হবে। বাংলাদেশ চাইলে এ উদ্যোগ নিয়ে সামনে এগোনো যেতে পারে।
এ কোম্পানির বাংলাদেশি এজেন্ট আম্বভান সোর্সিংয়ের প্রধান নির্বাহী এবিএম ওবায়দুল বারী বলেন, ব্রিটেন ও স্পেনে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি ইঞ্জিন ডুয়েল ফুয়েল করেছে তাদের কোম্পানি। কিন্তু সেখানে যেসব লোকোমোটিভে এ প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে, তার সবগুলোই নতুন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।