পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রেলওয়েতে ভূতের আছর। নানা দুর্ভোগ ও অনিয়মের কারণে দিনদিন যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। ঈদ উপলক্ষে অগ্রিম টিকিটের জন্য হাজার হাজার মানুষের কষ্টের কোন কোন মূল্য নেই রেল কর্তৃপক্ষের। আবার টিকিট কাটা যাত্রীদের স্টেশনে রেখেই ট্রেন ছেড়ে চলে যাওয়াকে হঠকারিতা বলছেন যাত্রীরা। টিকিট কেটে নির্দিষ্ট বগিতে ওঠলেও তাদের রেখে ট্রেন চলে যায়। এটা রেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতাও বলছেন অনেক যাত্রী। গতকাল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেসের একটি বগি রেখেই স্টেশন ছেড়েছে ট্রেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে। ট্রেনটি ছাড়ার সঠিক সময় ছিল সকাল ১০টা দশ মিনিটে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে কমলাপুর রেল স্টেশনে হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছেন। গতকাল সোমবার বিক্রি হয় ৮ জুলাইয়ের টিকিট। টিকিট নামের এই সোনার হরিণ পেতে অনেকেই দুদিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। আবার কেউ কেউ ৯ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য এরই মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে গেছেন। কয়েকজন অভিযোগ করেন গত চারদিন দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পাননি। গরম থেকে বাঁচতে কেউ কেউ হাতপাখা নিয়ে এসেছেন। এরপরও ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে রক্ষা মিলছে না। গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এরপরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষা করছেন তারা।
কয়েক দিনের মতো গত রোববার রাতভর মানুষে ঠাসা কমলাপুর রেল স্টেশন। গতকাল সোমবার সকালেও সেই অপেক্ষা শেষ হয়নি। পরবর্তী দিনের জন্য অনেকেই আবার লাইন ধরে বসে আছেন। অনেকে কাগজ কলম নিয়ে নিজেদের মধ্যে নামের তালিকা করছেন। সাকালে অনেকে নাস্তা করছেন স্টেশনেই। রাতের খাবারও সারছেন এখানেই। তবুও মিলছে না গন্তব্যের ট্রেনের টিকিট। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষায় সোনার হরিণ হয়ে ওঠা টিকিট পাওয়া যাবে না। অনলাইনে টিকিট বিক্রি এখন শুধু নিয়মের বুলি হিসেবে পরিণত হয়েছে। অনলাইনে কারা টিকিট পাচ্ছেন জানের না অনেকেই। কিন্তু অনলাইনে ঢোকাই যায় না টিকিট কাটার জন্য। আর টিকিট শেষ ঘোষণার পর সচল হয় অ্যাপ। রেল সেবা অ্যাপ কাজ না করায় টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ অনেকের।
অনেকে বলছেন, কিভাবে, কারা টিকিট কেটে নিয়ে যায় বলতে পারি না। লাইনে দাঁড়ানো অবস্থাতেই শুনতে পাই টিকিট শেষ। এখানে কোনো কিছু সঠিক নিয়মে চলে না। অনলাইনে তো কোনোভাবেই টিকিট পাওয়া যায় না। সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেলে তারপর অ্যাপে ঢোকা যায়। সংশ্লিষ্টরা জেনেও কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যে কারণে আমাদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
টিকিটপ্রত্যাশী রাশিদুর রহমান প্রথম দিন থেকে অপেক্ষা করেও টিকেট পাননি। এখন তিনি পরিবার নিয়ে বাড়ি যাওয়ার চিন্তায় পড়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রথম দিন থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু টিকিট পাইনি। আমি কয়েকদিন ধরে বাসায় যাই না। এখানেই দিন রাত কাটাচ্ছি। এখানেই খাই। এতো কষ্টের পরও যদি টিকিট পেতাম তাহলেও খুশি থাকতাম। কিন্তু ট্রেনের টিকেট পেলাম না। আমার এই কয়েকদিনে অনেক টাকা লোকসান হয়ে গেলো। কয়দিন ধরে টিকিটের পিছনে ঘুরে কাজে যেতে পারছিনা। এখন আমার দুইকূলই গেলো।
এক নারী টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, এতো মানুষের ভিড়ে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছিনা। অনেক গরমের মধ্যেও দাঁড়িয়ে আছি। এখানে নারীরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট করছেন। অনেকে বাচ্চা নিয়ে এখানে এসেছেন। আর মানুষের এতো কষ্টোর কোন ব্যবস্থাই করছে না রেল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেসের একটি বগি রেখেই স্টেশন ছেড়েছে ট্রেন। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে। ট্রেনটি ছাড়ার সঠিক সময় ছিল সকাল ১০টা দশ মিনিটে। একতা এক্সপ্রেসের ‘ট’ নম্বর বগির জন্য ১০৫ জন যাত্রী টিকিট কেটেছিলেন। তাদের অধিকাংশ যাত্রী এ ঘটনায় ট্রেনটি মিস করেছেন। ট্রেনটির ‘ট’ নম্বর বগিতে আগে থেকেই ত্রুটি ছিল তাই সেটিকে বাতিল করা হয় এবং মূল ট্রেনের শেষে রাখা হয়। ফলে অনেক যাত্রী বগি বাতিলের তথ্য না জেনেই সেখানে উঠে পড়ে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন (পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশন) পর্যন্ত চলাচল করে। বগি বাতিলের বিষয়টি সকাল ৯টা সময় সবাইকে অবগত করা হয়েছে। তবে আগে যারা বিষয়টি জেনেছেন, তারা অনেকে অন্য বগিতে উঠেছেন।
একতা এক্সপ্রেসের ‘ট’ বগির যাত্রীরা বলেন, আমরা এসে দেখি ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে আছে। পরে আমাদের আসন নিশ্চিত করে ট্রেনে বসি। হঠাৎ জানতে পারি বগি রেখেই একতা এক্সপ্রেস ট্রেন চলে গেছে। এ সময় বগিতে ১০০ থেকে ১৫০ জন যাত্রী ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছি সকাল নয়টায়। সর্বোচ্চ এফর্ট দিয়েছি। আমাদের কাছে অতিরিক্ত বগি ছিল না। ট্রেনটি আসার পথে বগিতে কোন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এটা কি কারণে হয়েছে জানি না, এটা বগির মেটেরিয়ালস দুর্বলতা থেকে হতে পারে। কালকে থেকে কোন কোচ এমন হলে রিপ্লেস না ছাড়া যাবে না। এতে বগির যাত্রীদের টিকিট ফেরত নেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।