Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত বাংলাদেশ ভৌগোলিক বন্ধুত্বের সম্পর্কে ফাটল ধরবেনা- নানক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:০১ পিএম

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বহুমুখী। ভৌগোলিক ভাবে আমাদের দেশের সঙ্গে ভারতের সংগতি ও সাংস্কৃতিক গভীরভাবে জড়িত। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের পাশে যেভাবে ছিল আগামী দিনগুলোতে আমাদের বন্ধুসুলভ সম্পর্ক বজায় থাকবে। কেউ এ সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারবে না।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে ভারতের সিমলায় ৫০ বছরে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা তিনি এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুর, ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিং, রাম মাধব, সদস্য, গভর্নিং কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন।

কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয় জাহাঙ্গীর কবির নানক বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে নানক বলেন,"সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বিদ্বেষ নয়"- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ, সার্বভৌম ও স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করছে, এই মূলের উপর ভিত্তি করে তার জাতীয় স্বার্থকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাণী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতির দ্বারা পরিচালিত, বাংলাদেশ শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাস করে, যাতে প্রতিটি দেশ তার নিজস্ব জনগণের কল্যাণে অগ্রসর হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজে তার সম্পদ ও শক্তি উৎসর্গ করতে পারে, তিনি যোগ করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাহাঙ্গীর কবির নানক আরো বলেন, বাংলাদেশ তার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছে । একই সঙ্গে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দুই দেশের পঞ্চাশ বছর পূর্তিও উদযাপন করছি, আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু এবং নিকটতম প্রতিবেশীর ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রনীতি দুই দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উভয় দেশের জন্য এবং অঞ্চলের জন্য। এর ভূ-কৌশলগত প্রভাব সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু খুব ভালোভাবে অবগত ছিলেন । বাংলাদেশ-ভারতের বিস্তীর্ণ চূড়ায় অবস্থিত ল্যান্ডস্কেপ এবং বিশেষ করে বাংলা এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চল। এর উপকূলরেখা বঙ্গোপসাগর ফানেলের সীমান্তে অবস্থিত। এটি অশান্ত মিয়ানমার অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত স্পর্শ করে। এর ভূ-স্থানিক ত্রিভুজ এটিকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে সর্বদা বিশ্বের সব বড় শক্তি। ভারতের প্রবণতা বাংলাদেশের মাধ্যমে অর্থনৈতিক করিডোর পুনঃসংযোগে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশ তার পররাষ্ট্রনীতিকে যথাযথভাবে তৈরি করেছে যেখানে উভয়ই দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধাজনক নীতি থেকে একে অপরের থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে লাভ করতে পারে।
নানক বলেন, কেউ নিজের বন্ধু এবং শত্রু বেছে নিতে পারে। এভাবেই বলা হযায়, ঈশ্বর এবং ভূগোল আমাদের একত্রিত করেছে। এবং আমরা বুঝতে পারি প্রতিটি উপাদানের ওজনের মাধ্যাকর্ষণ।
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ইতিহাসের বন্ধনে আবদ্ধ অটুট রাখার জন্য তিনটি উদ্ধৃতি দিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা চাই ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক অটুট থাকুক। এজন্য আমাদের প্রথমত, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে ভারত ও বাংলাদেশ, উভয় জাতিই পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে সামুদ্রিক সীমানা, স্থল সীমান্তের মতো বিষয়ে বোঝাপড়া চুক্তি, ছিটমহল। উভয় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিদল সম্প্রতি একে অপরের জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯-এর শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং যুদ্ধে উভয় দেশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ভারতের রাষ্ট্রপতিও হয়েছেন সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন। আমাদের একাত্তরের অনুপ্রেরণা- যা শুধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধই নয়, ছিল একটি সরকার-থেকে-সরকার, ব্যবসা-বাণিজ্যে টেকসই মিথস্ক্রিয়া ব্যবসা এবং জনগণের স্তর যা উভয় দেশ তৈরি করেছে একে অপরের অবিচ্ছেদ্য সিম্বিওটিক অংশীদার।

দ্বিতীয়ত, ভারতের জন্য বাংলাদেশের মাধ্যমে ট্রানজিট ও ট্রান্স-শিপমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ভারতের উত্তর-পূর্ব অন্যদিকে অর্থনীতিকে উন্নত করার পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে ভৌগোলিক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অর্জনে সহায়তা করতে পারে। বাংলাদেশ শীঘ্রই চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি অঞ্চলে পরিণত হতে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সর্বাধিক সংখ্যক পর্যটক আসে।

তৃতীয়ত, বাংলাদেশেরও সংযোগ প্রয়োজন বৃহত্তর ভারতীয় বাজারের মাধ্যমে একটি আঞ্চলিক মূল্য শৃঙ্খল তৈরি করা । বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের পাশে, ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। নিঃসন্দেহে, ভারত সফ্টওয়্যার এবং আইটি বৃহত্তর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। আগামী দিনে আমরা আইটি এবং আইটিইএস দখল করতে ভারতের সাথে সহযোগিতা বাড়াতে পারি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন ভারতের সাথে সুসম্পর্ক রাখা। উভয় পক্ষকেই বুঝতে হবে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়গুলি। দিনে দিনে তা হুমকি হয়ে উঠছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এর জন্য ,ভারত-বাংলাদেশকে অর্থপূর্ণভাবে সম্পৃক্ত করতে হবে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদে প্রত্যাবাসন করা। ২০২২ সালের হিসাবে, বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ উন্নত দেশে পরিণত হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ রাজনীতির মাধ্যমে। এ ভিশন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমদের দৃঢ় প্রত্যয় রয়েছে। এজন্য পররাষ্ট্র নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপি , শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুর



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:১৭ এএম says : 0
    যেখানে মামা আর ভাগিনা সেখানে কি করে ফাটল দরবে,পয়োজনে মামাকে ভাগিনা ক্ষমতায় বসাবেন,এবং ভাগিনাকে মামা বসাবেন,মামা ভাগিনা রক্ত সামান্য হলেও সংযুক্ত থাকে,পয়োজনে মামা কে সন্তোষজনক রাখতে মামার দেশে হিজাব এর বেপারে চুপ করে রাখমু,যেন মামা রাগ না করেন,আবার নিজেদের দেশেও সেষ্ঠা করছি এই বেপারে কিছু পদক্ষেপ নিতে মামা যেন খুশি থাকেন,..
    Total Reply(0) Reply
  • REZA ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৬ এএম says : 0
    Ignore the reality.
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:২১ পিএম says : 0
    Kafir cannot be friend never never never.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ-ভারত

৯ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ