নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : টেস্ট ক্যাপ পেতে অপেক্ষাটা ছিল প্রায় এক জীবনের। অনেকের ক্যারিয়ার শেষ হয় যে বয়সে, তার তখন শুরু। অস্ট্রেলিয়া দলে পালাবদলের পালায় গত বছর বহু আরাধ্য টেস্ট ক্যাপ মাথায় তুললেন যে দিন, বয়স হয়ে গেছে ৩৫ বছর ২৪২ দিন! অপেক্ষাটা এত দীর্ঘ ছিল বলেই কিনা, নিজের সব অপ্রাপ্তি যেন এখন ঘুচিয়ে দিতে চাইছেন অ্যাডাম ভোজেস। হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার রান মেশিন। আউট হতেও তার চরম অনীহা। খেলে চলেছেন দুর্দান্ত সব অপরাজিত ইনিংস। এই পথচলায় গতকাল উঠে গেলেন অনন্য উচ্চতায়। টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবার, দুবার আউট হওয়ার মাঝে ৫০০ রান করে ফেললেন এই অজি ব্যাটসম্যান!
গত ২৯ নভেম্বর টেস্টে সবশেষ আউট হয়েছিল ভোজেস। এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই, অ্যাডিলেড টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফিরেছিলেন ২৮ রানে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোবার্টে অপরাজিত ছিলেন ২৬৯ রানে। মেলবোর্নে অপরাজিত ১০৬। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে অপরাজিত ১৭৬ রানে। অপরাজিত পথচলায় ভোজেসের রান হয়ে গেছে ৫৫১!
এর আগে দুই আউটের মাঝে সবচেয়ে বেশি রান ছিল টেন্ডুলকারের। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্ন টেস্টে ৪৪ রানে আউট হওয়ার পর সিডনিতে প্রথম ইনিংসে ২৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন টেন্ডুলকার, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬০ রানে। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে মুলতান টেস্টে একমাত্র ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ১৯৪ রানে। পরের টেস্টে লাহোরে উমর গুলের বলে এলবিডবিøউ হয়েছিলেন ২ রানে। মাঝের সময়টায় অপরাজিত থেকে করেছিলেন ৪৯৭ রান। ভোজেস এবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে এগিয়ে গেলেন আরও অনেক দূর। রেকর্ডের পরিধি আরও বাড়িয়ে নিতে পারেন তৃতীয় দিনে। ওয়েলিংটনের সেঞ্চুরিতে আরও একটি রেকর্ড গড়েছেন ভোজেস। ১৪ টেস্টে এটি ছিল তার পঞ্চম শতক। ৩৫ বছরের পর অভিষিক্ত ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন ভোজেসই। ৪টি সেঞ্চুরি করে আগের রেকর্ড ছিল ৩৫ বছর ১১৭ দিন বয়সে অভিষিক্ত জিম্বাবুয়ের ডেভ হটনের।
গত ডিসেম্বরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে দুই টেস্টে ২৬৯ ও ১০৬ রান করেছিলেন ভোজেস। দুবারই তাঁকে কেউ আউট করতে পারেননি। এখনও অপরাজিত আছেন ১৭৬ রান করে। গত নভেম্বরে অ্যাডিলেডে এই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেই সর্বশেষ আউট হয়েছিলেন। ওই টেস্টে আউট হওয়ার পর ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দুইবার আউট হওয়ার মাঝে ৫০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ভোজেস। তাঁর আগে ২০০৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত টানা তিন ইনিংসে ২৪১, ৬০, ১৯৪ রানে অপরাজিত থেকে দুটি আউটটের মাঝে সর্বোচ্চ ৪৯৭ রান করেছিলেন টেন্ডুলকার। টেন্ডুলকার যাঁর রেকর্ড ভেঙেছিলেন, তাঁর কীর্তিটা অনেক আগের। ১৯৫৮ সালে স্যার গ্যারি সোবার্সের অপরাজিত ৩৬৫ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসের পর করেছিলেন ১২৫ রান।
ভোজেসের আগে দুইবার আউটের মাঝে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটি কার ছিল? সেটাও অবশ্য বেশিদিন আগের নয়। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেড টেস্টে একবারও আউট না হয়ে ৪৮৯ রান করেছিলেন মাইকেল ক্লার্ক। ভোজেস নিজের রেকর্ডটা কাল আরও বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পাবেন। ১৪ টেস্ট খেলে ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের গড়টা ঈর্ষণীয়- ১০০.৩৩!
ওয়েলিংটন টেস্টেও এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণটা নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ১৮৩ রানের পর ৬ উইকেট হারিয়ে তারা তুলে ফেলেছে ৪৬৩। টানা চার টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছেন উসমান খাজা, আজ ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হয়েছেন ১৪০ রানে। অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ২৯৯। মিচেল মার্শকেও শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন বোল্ট। কিন্তু এরপর দুই পিটার- নেভিল ও সিডলকে নিয়ে ম্যাচটা নিজেদের মুঠোয় নিয়ে এসেছেন ভোজেস। নেভিল আউট হয়ে গেছেন ৩২ রান করে, সিডল এখনও অপরাজিত ২৯ রানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।