পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্যাংক লুটেরা পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী এ কে এম সাহিদ রেজা দুর্নীতির দায়ে গত বছর মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক পদ হারিয়েছিলেন। দুই বছরের জন্য কোনভাবেই ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় তিনি আর থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ফাঁসছেন শেয়ার কারসাজিতে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তা সাহিদ রেজার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিজ ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ আমলে নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। তদন্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাবেক এই পরিচালকের গৃহীত ঋণের তথ্যও চেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, গত বছরের ২৭ এপ্রিল মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক এ কে এম সাহিদ রেজাকে জন্য অপসারন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক আদেশে সাহিদ রেজা’কে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী পরিচালক পদ থেকে অপসারনের আদেশ প্রদান করা হয় এবং আগামী ২ বছরের জন্য তিনি কোনভাবেই ব্যবস্থাপনায় সংযুক্ত হতে পারবেন না বলে আদেশ দেয়া হয়। তবে বিএসইসি নতুন করে তার বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পাওয়া তথ্যে অনেক অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, কোনো ঘোষণা ছাড়াই অবৈধভাবে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও সাবেক পরিচালক এ কে এম সাহিদ রেজা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় করেছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তহবিল আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই সার্বিক বিষয়টি তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএসইসি। এরই ধরাবাহিকতায় গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান উপ-পরিচালক মাওদুদ মোমেন।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে বিএসইসি’র জারি করা আদেশে উল্লেখ করা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ১৫নং আইন) এর ধারা ১৭ক অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বিএসইসি’র কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও সাবেক পরিচালক এ কে এম সাহিদ রেজার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিজ ব্যাংকের শেয়ার কেনা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে। তদন্ত কর্মকর্তারা এ আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসি’র কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসি’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন তাই এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গভর্নরের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি উল্লেখ করেছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর ধরার ২১(২এ) অনুযায়ী মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও সাবেক পরিচালক এ কে এম সাহিদ রেজার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করেছে বিএসইসি। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে, এ কে এম সাহিদ রেজার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণে তথ্য প্রয়োজন। তাই এ পরিস্থিতিতে তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
সূত্র মতে, আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালের ২০মে ব্যাংকটির যাত্রা শুরু হয়। ওই বছর ২জুন ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা পেইড আপ ক্যাপিটাল দিয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে যাত্রা শুরু সাহিদ রেজার। যার বর্তমান পেইড আপ ক্যাপিটাল ১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে সাহিদ রেজা শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার নিয়েই প্রভাব খাটিয়ে নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে নেন এবং বিভিন্ন বেনামী ঋণ প্রদান করে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি কোম্পানীর পরিচালকদের পেইড আপ ক্যাপিটালের ২ শতাংশ শেয়ারের ধারণের বাধ্যবাধতা আছে। সে অনুযায়ী, সাহিদ রেজার ক্যাজুয়াল ভ্যাকেন্সি হয়ে পরিচালক পদ শূন্য হয়। পরে সেই সময়ে (২০১৪ সালে) সাহিদ রেজা পিকে হালদারের নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকা রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এর মাধ্যমে পিকে হালদারের যোগসাজসে ৩৪ কোটি টাকার শেয়ার ক্রয় করে রাতারাতি শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার থেকে ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হয়ে যান। পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জে ঘোষণা দিয়ে শেয়ার ক্রয় করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এ কে এম সাহিদ রেজা কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জের নিয়ম লঙ্ঘন করে ঘোষণা ছাড়াই পিকে হালদারের সহযোগিতায় অনৈতিকভাবে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫ শতাংশ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে পুনঃরায় পরিচালক পদ বাগিয়ে নেন। সাহিদ রেজার পরামর্শক্রমে পিকে হালদার তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন রেপটাইলস কোম্পানীর নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫ শতাংশ শেয়ার ক্রয় করেন এবং পরবর্তীতে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে পিকে হালদার তার মনোনীত ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্তির জন্য দেনদরবার করেন। যেখানে সাহিদ রেজার পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। পুনঃরায় পরিচালক পদে আসার পর সাহিদ রেজা মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডকে ব্যবহার করে বিপুল অর্থের মালিক বনে যান।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।