পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওপেন সিক্রেট বিষয়। তাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ সবারই জানা। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, নিয়োগ বাণিজ্য, কেনাকাটা ও নির্বাচনে অসততার মাধ্যমে তারা এ দুর্নীতি করেছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে ‘বিশেষ বক্তৃতার’ মাধ্যমে ২ কোটি টাকা, ইভিএম কেনায় কমিশন ২০ কোটি টাকা, কর্মচারি নিয়োগে ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং নির্বাচনে অসততা ও অনৈতিকভাবে গাড়ি ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া চিকিৎসা এবং ভ্রমণ ভাতার নামেও অনৈতিকভাবে কোটি কোটি টাকা সিইসি ও অন্যান্য সদস্যরা নিয়েছেন।
দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুস্পষ্টভাবে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ এনেছেন। ওই ৪২জন নাগরিকের মধ্যে কম বেশি সবাই দেশের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব যার মধ্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আকবর আলী খান, হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল, ড. শাহদীন মালিক, রাশেদা কে চৌধুরী, এম হাফিজউদ্দিন খান, ডঃ ইফতেখারুজ্জামানের মতো ব্যক্তিরা রয়েছেন। বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের আহবান জানিয়ে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টকে চিঠিও দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের ১০১ জন আইনজীবী। একইসাথে তদন্ত চলাকালে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন থেকে কে এম নূরুল হুদাকে বিরত রাখারও আহ্বান করা হয় ওই আবেদনে।
কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ইভিএম কেনা নিয়ে প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দেড় লাখ ইভিএম কেনা হয়। নির্বাচন কমিশনারদের ভেতর থেকেই মাহবুব তালুকদার এ নিয়ে আপত্তি তোলেন। তিনি বলেন, ইভিএম কেনার অনুমোদন ইসির কোন সভায় দেওয়া হয়নি। তিনি এ বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেন। এ ছাড়া দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল এবং অনেক বিশিষ্টজনের আপত্তি উপেক্ষা করে সিইসি নূরুল হুদা শুধু ব্যাক্তিগত লাভের জন্য ইভিএম কেনার পক্ষে অবস্থান নেন। মোটা অংকের কমিশন বাণিজ্যের বিনিময়ে তিনি এবং অন্যান্য কমিশনাররা ইভিএম কেনার অনুমতি দেন। অনেকের অভিযোগ হিসাবে নির্বাচন কমিশন কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা কমিশন নিয়ে ইভিএম ক্রয়ের অনুমতি দিয়েছে।
নূরুল হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে এরপর অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে বিশেষ বক্তৃতা দেওয়ার নামে তারা ২ কোটি টাকার অনিয়ম করে। একাদশ সংসদ নির্বাচন ও ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ১৫ জন বিশেষ বক্তার নামে দুই কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। আর এই ১৫ জন বক্তা হলো সিইসি নিজে এবং অন্যান্য কমিশনাররা।
নূরুল হুদা কমিশন কর্মচারী নিয়োগেও ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। বিভিন্ন পদে কর্মচারী নিয়োগের বিপরীতে ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা তারা ঘুষ হিসাবে নিয়েছে।
এ ছাড়া চিকিৎসা ও ভ্রমণ ভাতার যে অনিয়ম সে বিষয়ে সিইসি নিজেই মাহবুব তালুকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে মাহবুব তালুকদার দাবি করেছেন তিনি সত্যিকার অর্থে ক্যান্সারের রোগি। তিনি নিয়ম অনুযায়ী তার ন্যয্য প্রাপ্য হিসাবে চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সিইসি নিজে সুস্থ ব্যক্তি হয়েও চিকিৎসা বাবদ কোটি টাকারও বেশি গ্রহণ করেছেন।
সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, শুধু দুর্নীতি নয়, একশ’র বেশি লোক মরার দায়ও এ নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন যতই বলুক তাদের দায় নাই। কিন্তু সংবিধান তাদেরকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলেই শতাধিক লোকের প্রাণহানী ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার তারা যে ক্ষতি করেছে তার জন্য শাস্তি অবশ্যই পেতে হবে।
তবে সিইসি কে এম নূরুল হুদা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, কর্মপরিকল্পনায় বক্তার সম্মানী ভাতা বাবদ এক কোটি চার লাখ টাকা ও ৫ম উপজেলা নির্বাচনের জন্য ৪৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা সংস্থান রাখা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ জন বক্তা বক্তব্য দেওয়ার জন্য সম্মানী গ্রহণ করেছেন। আর প্রশিক্ষণ কোর্সের উপদেষ্টা হিসেবে ইসি সচিব সম্মানী নিয়েছেন। অব্যবহৃত অর্থ ট্রেজারিতে ফেরত গেছে। এ ছাড়া কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের জবাবে সিইসি বলেন কোনো প্রমাণ ছাড়াই ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ছিলো নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত। ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে অসদাচরণ ও অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে গতিশীল ও ত্রুটিমুক্ত করতে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে ভোটদান সহজ হয়েছে ও দ্রুত ফল প্রচার সম্ভব হচ্ছে। ইভিএম ক্রয়ের কোন তহবিল কমিশনের কাছে ন্যস্ত হয় না। এ কাজে নির্বাচন কমিশন কোনে আর্থিক লেনদেনে সম্পৃক্ত থাকে না। তাই দুর্নীতির প্রশ্নই ওঠে না।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অর্থাৎ কেএম নূরুল হুদার কমিশন যে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে তাতে তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তারা যে বক্তৃতা দেয়ার নাম করে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা নিয়েছে, কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি, ইভিএম কেনায় অনিয়ম, নির্বাচনে অসদাচরণ ও অনিয়মের মতো অপরাধ তারা করেছে। দিনের ভোট রাতে করে এদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এরকম একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে থেকে এরকম অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।