গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নিখোঁজের পাঁচ দিন পরে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার সন্ধ্যায় সায়েদাবাদ এলাকা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। কাউকে কিছু না জানিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি বাসা থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান এই শিক্ষক। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সবুজবাগ থানায় জিডি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। তাকে উদ্ধার করে কাউন্সিলিংয়ের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্তানরা তাকে সময় না দেয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যান তিনি।
মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের এসি মনতোষ বিশ্বাস বলেন, তার পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তিনি মানুষ হিসেবে খুব ভালো এবং ধার্মিক। তার এক ছেলে চিকিৎসক, অন্য ছেলে বুয়েটের শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের সদস্যরা সবাই ব্যস্ত থাকেন। আবার করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কলেজ বন্ধ। ফলে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি পরিবার ও পেশাগত জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ব্যক্তিজীবনে শিক্ষক হারুনুর রশীদ মোবাইলও ব্যবহার করতেন না।
তিনি বলেন, হারুন অর রশিদ পুলিশকে জানিয়েছেন, স্কুলে যাওয়ার জন্য সকালে বের হয়ে মনে হলো কোনদিকে যাবো? এরপর সায়দাবাদে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলে তিনি একটি হোটেলে গিয়ে উঠেন। ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোথায় ছিলেন হারুনুর রশীদ, জানতে চাইলে এসি মনতোষ বিশ্বাস বলেন, তার বাসা থেকে মতিঝিল স্কুল আ্যন্ড কলেজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। আত্মগোপনে থাকা কয়েকদিন তিনি হোটেলেই ছিলেন। তার পরিবার কিংবা অন্য কোনো আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেননি। মোবাইল ব্যবহার না করার কারণে তাকে খুঁজে পেতে কিছুটা সময় লেগেছে।
শিক্ষককে উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আত্মগোপনে থাকা শিক্ষকের পকেটে তার অফিসের একটি ইমেইল ও ইমেইলের পাসওয়ার্ড এবং বাসার মোবাইল নম্বর ছিল। শনিবার সারাদিন ওই শিক্ষক একজন পান দোকানদের সঙ্গে বসেছিলেন। এরপর দোকানদার তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন তিনি বাসা থেকে চলে এসেছেন। পান দোকানদার শিক্ষককের ইমেইল ও ইমেইলের পাসওয়ার্ড হিসেবে থাকা মোবাইল নম্বর সবুজবাগ থানায় দেয়ার পর তথ্য-প্রযুক্তির সহয়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়। রাতে ওই শিক্ষককে উদ্ধারের পর তার পরিবারকে থানায় ডেকে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গত ৩১ জানুয়ারি বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি শিক্ষক মো. হারুনুর রশীদ। তাকে না পাওয়ায় রাজধানীর সবুজবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তার পরিবার। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ইসলামিক স্টাডি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন হারুনুর রশীদ। ১৯৯০ সালে তিনি মতিঝিল আইডিয়ালে যোগ দেন। তিনি মাধ্যমিক পর্যায়ের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে ক্লাস নেন। হারুনুর রশীদ রাজধানীর মাদারটেক শাপলা কানন আবাসিক এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।