Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চূড়ায় উঠছে বাণিজ্য ঘাটতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

দেশের আমদানি-রফতানি দুটোই বাড়ছে। তবে রফতানি যে হারে বাড়ছে তার চেয়ে বেশি বাড়ছে আমদানির পরিমাণ। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৬২ কোটি ডলারে দেশীয় মুদ্রায়, যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এটি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, রফতানি যে গতিতে বাড়ছে তাতে এ ঘাটতি ইতিবাচক।

এর আগে ছয় মাসের হিসাবে এত বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যায়নি। করোনা মহামারির সময়েও আমদানি হচ্ছে বিপুল পরিমাণে। আর এতে আমদানি-রফতানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি চূড়ায় উঠছে। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের এই ছয় মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬৮৭ কোটি ডলার। অন্যদিকে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ৩৫১ কোটি ৫০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল। গত বছরের অক্টোবর থেকে বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানি বাড়তে শুরু করে। এখনো সেটা অব্যাহত রয়েছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও আগের মতো লকডাউন দেওয়া হয়নি। আর এতেই বাড়ছে পণ্য আমদানি। ফলে বাড়ছে আমদানি-রফতানির মধ্যে ব্যবধান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ৩ হাজার ৮৯৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই ছয় মাসে ২ হাজার ৫২২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রফতানি যে গতিতে বাড়ছে তাতে এটি ইতিবাচক। দেশে যা আমদানি হয় তার বড় অংশ আবার প্রক্রিয়া হয়ে রফতানি হয়ে থাকে। তবে ভোগ্য পণ্য আমদানিও বাড়ছে। দেশের যে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে তার কারণেও আমদানি বাড়ছে। মূলধনী পণ্যের যে আমদানি দেখা যাচ্ছে সেটি যদি বিনিয়োগে আসে সেক্ষেত্রে অর্থনীতিতে গতি বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮১৮ কোটি ডলার। অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে ৩৫১ কোটি ৫০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর শুরুই হয়েছিল লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে। প্রথম তিন মাসে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৩১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। চার মাস শেষে (জুলাই-অক্টোবর) তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। জুলাই-নভেম্বর সময়ে ঘাটতি ছিল ৬২২ কোটি ডলার। ডিসেম্বর শেষে তা আরো বেড়ে ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাণিজ্য ঘাটতি

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
১০ জুলাই, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ