Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রিটেনকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিতর্কিত বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেনকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা। এমন দাবিতে এরইমধ্যে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্টরা। এ বিষয়ে ব্রিটেনের হাউস অব পার্লামেন্টে গত মঙ্গলবার একটি পিটিশন খোলা হয়েছে। এতে ফিলিস্তিনি জনগণের দীর্ঘদিনের দুর্দশার জন্য ব্রিটেনের ওই ঘোষণাকে দোষারোপ করা হয়েছে। ওই পিটিশনে এক লাখ স্বাক্ষর পড়লে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আয়োজনের কথা বিবেচনা করবে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের স্বতন্ত্র সদস্য ব্যারোনেস জেনি টং বলেন, পিটিশনে যাই থাকুক না কেন ফিলিস্তিনপন্থী এমপিরা বিষয়টির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। আগামী বছর হাউস অব কমন্স এবং হাউস অব লর্ডসে ইস্যুটি তোলা হবে। এই পিটিশনের আয়োজক অ্যাক্টিভিস্টদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ব্রিটেনে অবস্থিত ফিলিস্তিনের ডিপ্লোমেটিক মিশন। ১৯১৬ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য তথাকথিত আবাসভূমি বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ব্রিটেনের অবস্থানের কথা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা বেলফোর ঘোষণা নামে পরিচিত। ২ নভেম্বর বেলফোর ঘোষণার ১০০ বছর পূর্ণ হল। এ ঘোষণা অনুযায়ী ব্রিটেন ফিলিস্তিনে কথিত ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টার অঙ্গীকার করে। ফিলিস্তিন তখন ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। বেলফোর ঘোষণার ৩১ বছর পর ১৯৪৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পৃষ্ঠপোষকতায় জবরদস্তিমূলকভাবে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে আত্মপ্রকাশ করে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল। সেই থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন করেন ফিলিস্তিনি জনগণসহ বিশ্বের মুসলমানরা। এর আগে চলতি বছরের জুলাইয়ে আরব লীগের সম্মেলনে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেনের কঠোর সমালোচনা করেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য অবৈধভাবে বিশ্বসন্ত্রাসী ইসরাইলের জন্ম দিয়েছে। তাদের বেলফোর ঘোষণা এবং অব্যাহত সহযোগিতায় এই রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। এ বিষয়ে ফিলিস্তিন যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে। তিনি বলেন, বেলফোর ঘোষণায় ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র জাতীয় বাসস্থান গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার কোনও আইনগত এখতিয়ার যুক্তরাজ্যের ছিল না। গায়ের জোরে অবৈধ এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ব্রিটেন ও তার সহযোগীদের পৃষ্ঠপোষকতায় ৫৩১টি ফিলিস্তিনি গ্রাম ও শহর উচ্ছেদ করে ইহুদিদের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনি ভূখ- অধিগ্রহণ করে চলেছে ইসরাইল। ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল হাওয়াশ বলেন, উদযাপন নয়, বেলফোর ঘোষণার জন্য ব্রিটেনের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এ অধ্যাপক প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন এবং ব্রিটিশ প্যালেস্টাইন পলিসি কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যাপক কামাল হাওয়াশ বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে ব্রিটেনের দ্বিমুখী আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটেনকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ