নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : সেই একই দৃশ্য, তবে জার্সি এবং ভেন্যু অন্য। সাইফুদ্দিনকে ২ দিন আগে কভার দিয়ে বাউন্ডারিতে উইনিং শটে পিচের ওপর অদ্ভুত নৃত্যে বাংলাদেশ সমর্থকদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়েছিলেন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান স্প্রিংগার। তার ওই নাচে বেজে উঠেছে ক্যারিবীয় জয়গান। গতকাল ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে স্প্রিংগারের সেই অদ্ভুত ভঙ্গির নাচটিই নেচে দেখালেন জাকের। কুমারাকে বাউন্ডারি শটে দলের জয় নিশ্চিত করে তার ওই নাচের সঙ্গে বাউন্ডারি রোপের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা ক্রিকেটারদের সে কি ভোঁ দৌড়। যেন বিশ্বজয়ের আনন্দ। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ফাইনালে খেলা হয়নি, তাতে কি? স্থান নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে সেরা অর্জনের আসরে তৃতীয় হওয়াটাও যে কম গর্বের নয়।
হেড টু হেডে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে কখনো হারেনি এই প্রতিপক্ষের কাছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উপর্যুপরি ২টি সিরিজে কর্তত্ব নিয়ে জয় তো আছেই। তবে এসব অতীতের সঙ্গে গতকালকের ম্যাচকে মেলানো যাবে না। বরং স্থান নির্ধারনী ম্যাচে পর্যন্ত ¯œায়ুচাপে ভুগেছে বাংলাদেশ যুবারা। ফতুল্লায় টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে বোলিং-ফিল্ডিংয়ের শুরুটা ছিল না আশানুরুপ। ওপেনিং পার্টনারশিপের ৬০ এ বরং প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা যুবাদের রান পাহাড়ে চাপা পড়ার শঙ্কা ছিল তীব্র। সেখান থেকে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছেন অধিনায়ক মিরাজ,নিজের বোলিংয়ে (৩/২৮)। কম্বিনেশন ভেঙ্গে এদিন তিন পেস বোলার, কৌশলটা ভালই কাজে দিয়েছে মিরাজদের। বোলিং চেঞ্জটাও এদিন হয়েছে দারুন। মিডল অর্ডার আসালাঙ্কার ৭৬’র পরেও ২১৪’র বেশি ইনিংস টেনে নিতে পারেনি শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সফিউদ্দিন, হালিম এবং শাওন গাজীর ২৮ রানে ফিরেছে লঙ্কান ৫ ব্যাটসম্যান।
ওপেনিং কম্বিনেশনটা হতাশ করেছে বলে গতকাল ওপেনিংয়ে ২ ব্যাটসম্যানই পরিবর্তন। তারপরও ওপেনিং জুটি সুখবর দিতে পারেনি। জবাব দিতে এসে তৃতীয় বলে ওপেনার জাকির ফার্নান্দোর ইয়র্কার ডেলিভারীতে বোল্ড হয়ে বরং শঙ্কার আলামতই দিয়েছে। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্বটা নিয়েছেন মিরাজ-শান্ত, তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮৮ রানে। এই দু’জনের একজন না থাকলে তা দলের জন্য বড় বিপদ, সেই বিপদটাই ঘনীভুত হতে যাচ্ছিল। আশ্চর্য হলেও সত্য, দু’জনই ফিরে গেছেন রান আউটে কাটা পড়ে, এবং সেখানেও একজনের কলে অন্যজন সাড়া না দেয়ায়। মিড অফে পুশ করে দৌড়ে হাফ পিচ পর্যন্ত যেয়ে মিরাজ ফিরতে পারেননি। তবে তার আগে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে টানা ৪ ইনিংসে ফিফটিতে বিশ্বরেকর্ড করেছেন মিরাজ (৫৩)। তার দেখাদেখি শান্তও কাভার পয়েন্টে বল ঠেলে রান আউটে ফিরে গেছেন (৪০)। এই দুই ইনফর্ম ব্যাটসম্যানের ফিরে যাওয়ায় কঠিন হয়ে পড়েছে ম্যাচটি। টপ অর্ডার জাকের (৩০ নট আউট) হাল ধরে দলকে পৌছে দিয়েছেন জয়ের বন্দরে। তবে সহজ ম্যাচ জিততে অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত, এবং হাতে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল মাত্র ৩ বল। ¯œায়ুচাপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কা যুব বোলাররা যতোটা না পাইয়ে দিয়েছে ভয়, তার চেয়ে বেশি ভয় ধরিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তিন ব্যাটসম্যান, রানের ছটফটানিতে রান আউটে কাঁটা পড়ে। তারপরও মেহরাব, মুশফিকুর, সাকিব, তামীম, রকিবুলদের নিয়ে গড়া সময়ের সেরা দলটি এক দশক আগে ৫ম হয়ে যে সাফল্যের গান গেয়েছে, তার চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে সাফল্যকে তিন এ নিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে আরো বড় অর্জনের প্রেরণা যে দিয়ে গেলেন মিরাজ, শান্ত, সাইফুদ্দিন, শাওন গাজীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।