Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন ইসি আইন জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৪৮ পিএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত। শিক্ষামন্ত্রী করোনার অজুহাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে লোক দেখানো সংলাপ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের প্রতি সামান্যতম মূল্যায়ন না করে গঠিত ইসি আইন জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না বরং চলমান সঙ্কট আরো ঘনিভূত করবে। তিনি সকল দল মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানান।

পীর সাহেব বলেন, ২০২৩ সালে পাবলিক পরীক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাতিলের প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষা ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। তিনি বলেন, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে মানুষের মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে। অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে অনেক ছাত্র ছাত্রী। বিশেষ করে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা না থাকায় তরুণ প্রজন্ম বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তিনি বলেন, এমপিওভূক্ত ও নন-এমপিওভূক্ত মাদরাসা ও স্কুলের মধ্যে বিরাজমান বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে। সেইসাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে নগরীর পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং ইঞ্জিনিয়ার আহসানুল্লাহ খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সহসভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া,ইশতিয়াক মুহাম্মদ আল আমিন, ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলদেশ এর মহাসচিব মো. আব্দুর রহমানসহ জেলা প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন।
পীর সাহেব বলেন, যে দেশে আজানের ধ্বনিতে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে এবং বাচ্চারা ঘরে ফিরে, সে দেশে ইসলামী শিক্ষা নিয়ে চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না। দুর্নীতিমুক্ত আদর্শ দেশ গড়ে তুলতে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি বাতিল করতে হবে। তিনি শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় রাজপথে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী করোনার অজুহাতে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। করোনায় দেশের সবকিছু খোলা, বাণিজ্যমেলা, একুশে মেলাসহ সবকিছিু স্বাভাবিক। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসে তৎপর। সিলেবাসে এসএসসি থেকে ধর্মীয় শিক্ষা তুলে দেয়া হচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষা না থাকলে মানুষ নৈতিকতা হারিয়ে ধ্বংসের দিকে চলে যাবে। যার নমুনা দেখা যাচ্ছে। সামান্য কিছু হলেই আত্মহত্যার প্রবণতা শুরু হয়েছে। আর এগুলো হয়েছে ইসলামী তথা ধর্মীয় শিক্ষা না থাকায়। তিনি বলেন, অনেক পরিবারে ছেলে মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত হলেও নৈতিক শিক্ষা না থাকায় বাবা মার খোঁজখবর নিচ্ছে না। তিনি বলেন, যে দেশে ১৮ বছরে আগে মেয়েদের বিয়ে দেয়া নিষেধ, সে দেশে ৬-১০ম শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীদের শাহানা কার্টুন প্রদর্শণের নামে যৌন শিক্ষা দিয়ে চরিত্র নষ্টের চক্রান্ত রুখে দেয়া হবে। তিনি শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী মতবাদ বাতিলের দাবি জানান। তিনি মাদরাসা ই আলীয়া নিয়ে ষড়যন্ত্রের নিন্দা জানিয়ে বলেন, আলীয়াকে সঙ্কুচিত করে আলীয়ার অবকাঠামো ভেঙ্গে কারিগরি ভবন নির্মাণ মেনে নেয়া হবে না। তিনি বলেন, ঢাকা আলীয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিতে হবে। তিনি অনতিবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানান।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, সরকারের শতকরা ৯৭ ভাগ আমলা দুর্নীতিগ্রস্ত। দেশের সাধারণ জনতা যারা প্রবাসী তারা বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠায়। আর সরকারের মন্ত্রী এমপিরা এবং দলীয় নেতারা বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি বলেন, যৌন শিক্ষার নামে চরিত্রহননের শিক্ষা বাতিল করতে হবে। তিনি ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, গাছের গোড়া কেটে আগায় যত পানি দেয়া যেমন ভন্ডামী, তেমনিভাবে পাবলিক পরীক্ষা থেকে ইসলামী শিক্ষা তুলে দিয়ে নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন জাতির আশা তেমনই ভন্ডামী। তিনি ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ