Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কারাবন্দি হেফাজত নেতা কর্মীদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিন

আমীরে হেফাজত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:১৪ পিএম | আপডেট : ৭:১৫ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

হেফাজতসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতারকৃত সকল আলেম-ওলামা, ছাত্র সমাজ ও সাধারণ মুসুল্লিদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
আজ (৩ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত হেফাজত আমীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আমীরে হেফাজত বলেন, আলেমগণ হচ্ছেন ওরাসাতুল আম্বিয়া অর্থাৎ নবীদের উত্তরাধিকারী। তাঁরা আল্লাহর দীনকে আল্লাহর জমিনে প্রতিষ্ঠার জন্য দিনরাত একাকার করে মানুষকে দীনের পথে আহবান করেন। আল্লাহ ভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে সম্পর্কে জুড়িয়ে দেন। আলেমরা কোন অন্যায় অপরাধের সাথে জড়িত নন। তারা মাদরাসায় কুরআন-হাদীসের পাঠদানে মগ্ন থাকেন। মানুষের ঈমান-আকিদা বিশুদ্ধ করণে ওয়াজ-নসিহত করেন। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সর্বসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল প্রকার অরাজকতা থেকে মানুষকে বিরত রেখে দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ করেন। ডজন-ডজন মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে। এমন আচরণ ইসলাম ও দেশের জন্য খুবই দুঃখজনক।
আমিরে হেফাজত আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার মধ্যে রাজনৈতিক বা ক্ষমতাকেন্দ্রিক কোনো উদ্দেশ্য নেই। এই ১৩ দফার আন্দোলনের সাথে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের কোন কর্মসূচিও নেই। এই আন্দোলন শুধুমাত্র দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ঈমান আক্বীদা সংরক্ষণ ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন। আমরা নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, গ্রেফতারকৃতদের থানা হেফাজতে শারীরিক ও মানসিকভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। যার ফলে অনেক বন্দীর পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। আলেম-উলামা, ছাত্র ও সাধারণ মুসুল্লিদের জন্য পরিবারকে কোন খাবার সরবরাহ করতেও দেয়া হচ্ছে না। এ তীব্র শীতেও প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র রাখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কারা আইনে একজন বন্দি সপ্তাহে একবার পরিবারের সাথে কথা বলার এবং সাক্ষাৎ লাভের অধিকার রাখে। কিন্তু তারা সেই অধিকার থেকে পরিপূর্ণ বঞ্চিত। আবার অনেককেই সেলে রেখে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত আলেমদের মধ্যে অনেকেই বয়োবৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা এবং ঔষধ সেবনেও বিভিন্নভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। ফলে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বন্দিদের সঙ্গে নির্বিচারে এমন নির্মম আচরণ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ এবং চরম মানবাধিকার লঙ্গন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি সরকারপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমার প্রবল ধারণা প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা নাস্তিক্যবাদীর এজেন্টরা সরকার এবং হেফাজতের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি এবং দূরত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের হীন স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা দেশের জনপ্রিয় আলেম নেতৃবৃন্দকে আটকে রেখে তৌহিদী জনতার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে দেশে গণবিস্ফোরণ ঘটাতে চায়। হেফাজত ইসলাম দেশে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা চায়না যার ফলে প্রায় এক বৎসর কাল রাজপথে কোনো কর্মসূচি না দিয়ে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, তবে তৌহিদী জনতার পুঞ্জিভূত ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ হারা গণবিস্ফোরণের রূপ নিলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। আল্লাহ তাআলা দ্রুত সময়ে সকল মহলকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার তৌফিক দান করুন।
আল্লামা বাবুনগরী আরও বলেন, দেশের স্বাস্থ্য-শিক্ষা সেক্টরের পরিস্থিতি খুবই নাজুক । করোনা ভাইরাসের নতুন ধাপ ওমিক্রনের থাবায় জনজীবন বিপর্যস্ত। এমতাবস্থায় দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামকে বন্দি রেখে আল্লাহর ক্রোধকে নিজেদের উপর টেনে আনবেন না। কারাবন্দী আলেম- ওলামা ও মুসল্লীদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিয়ে দেশের মসজিদ-মাদরাসা -খানকায় পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ দিন। অনতিবিলম্বে নায়েবে নবী তথা আলেম-উলামাদের দ্রুত মুক্তি দিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ