Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচনার শীর্ষে আবু মহসিনের আত্মহত্যা

সোশাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৩:১৭ পিএম

ফেইসবুক লাইভে এসে আবু মহসিন খান (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর।

পরিবারিক হতাশা, মানুষের প্রতারণা, ব্যবসায় লোকসান, অসুস্থতা ও নিঃসঙ্গতা থেকেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে লাইভে বলেছিলেন তিনি। আবু মহসিনের আত্মহত্যার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় তোলপাড়। ঘটনাটি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করা ভিডিওটি ৬ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এস মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউণ ফারুক অপুর্ব ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়, জীবনেই মুক্তি ৷ শুধুমাত্র জীবনে খারাপ সময়টা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন ৷ দুঃখেরই পর সুখ আসে৷ মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি (আল্লাহ) তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা। আর আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদের। যারা তাদের ওপর বিপদ এলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৫-১৫৬)।’

নাট্যনির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের প্রশ্ন, ‘মানুষ কেন আত্মহত্যা করে? মরে যাওয়ার জন্য নাকি বেঁচে যাওয়ার জন্য?’

গীতিকার ও সাংবাদিক রবিউল ইসলাম জীবন লিখেছেন, ‘এ মৃত্যুর দায় সমাজের! এ মৃত্যুর দায় আমাদের! কতটা আঘাত পুষতে পুষতে ৫৮ বছর বয়সে এসে একজন মানুষ এতটা ফুঁসে উঠেছেন! কতটা নিঃসঙ্গ হতে হতে এই পর্যায়ে এসে শেষ পর্যন্ত নিঃশেষ হয়েছেন। সেটা একমাত্র তার হেরে যাওয়া, মরে যাওয়া মনটাই জানে! আত্মহত্যা কখনই কোন কিছুর সমাধান নয়। কিন্তু বেঁচে থাকা যখন বিষাক্ত হয়ে যায়, যখন মানুষ জীবনের কোনো আনন্দ খুঁজে পায় না, তখনই হয়তো এমন আত্মঘাতী পথে পা বাড়ায়!’

চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেত্রী তামান্না সুলতানা লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহ ওনাকে ক্ষমা করুন, আত্মার মাগফেরাত দান করুন, আমিন। সন্তানকে মানুষ করার জন্য বাবা-মা সব ধরনের আত্মত্যাগ করেন, কিন্তু সেই সন্তান বড় হয়ে বাবা মায়ের খোঁজ খবরটুকু রাখে না! কেন মানুষ এত স্বার্থপর!’

সাংবাদিক আহমেদ বায়েজীদের পরামর্শ, ‘হতাশার সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে আত্মহত্যা। নায়ক রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা যেটি আবারো মনে করিয়ে দিল। (অবশ্য তার একাকিত্বের জন্য পরিবারের সদস্যদের দায় থাকতে পারে)। ইসলামে হতাশাকে কুফরির লক্ষণ বলা হয়েছে। অর্থাৎ হতাশ হতে শুরু করলে আপনি কাফের হতে শুরু করবেন। খারাপ পরিস্থিতি আসতেই পারে; কিন্তু আল্লাহর রহমতের আশায় ধৈর্য ধরা আর নিজের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলে একদিন খারাপ সময় কাটতেই পারে। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন নবী আইয়ুব (আ)। তারপরও আমরা খারাপ সময় এলে হতাশ হই, আল্লাহর ওপর বিরক্তিও প্রকাশ করি। আল্লাহ ক্ষমা করুন। হতাশা আমাদের নিজের জীবনের জন্যই হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। ঘোর অমানিশা আসতে পারে পরিবারের জন্য। কাজেই হতাশ হওয়া যাবে না প্রথমত ইবাদত মনে করে, দ্বিতীয় নিজের জীবনকে আত্মহত্যার মতো ঘটনা থেকে বাঁচাতে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।’

এমডি আবু ইউসুফ লিখেছেন, ‘এক ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে, এক মেয়ে বিবাহীতা৷ বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত, স্ত্রী নাই, বাসায় একা থাকতে হয়, কতটা নিষ্ঠুর অবস্থা৷ ধনাট্য এবং উচ্চ শিক্ষিতরা শেষ জীবনে অসহায় হয়ে পরে, বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়৷ শিক্ষিত হওয়া, আর মানুষ হওয়া আলাদা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আমাদের উচিত, সন্তানদের ইসলাম-নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা৷ অর্থমুখি দুনিয়াবী শিক্ষা, দুনিয়াতেই সুখ দিতে পারে না৷’



 

Show all comments
  • Mominul Haque Chowdhury ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:৪৬ পিএম says : 0
    আমরা মর্মাহত।ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ সঠিকভাবে অনুসরণ করে চলতে না পারার কারণেই মানুষের দুঃখ দুর্দশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারস্পরিক দায়িত্ব বোধ,সহযোগিতা এবং সহমর্মিতা আমাদের জীবনে কতো বেশী প্রয়োজন।আমরা কি তা' অনুধাবন করবোনা "
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ