Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার রায় হাইকোর্টে যাচ্ছে ডেথ রেফারেন্স

কনডেম সেলে অনুতপ্ত প্রদীপ লিয়াকত

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:০৩ পিএম

কক্সবাজার কারাগারের কনডেমসেলে তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগী লিয়াকত।

মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত এই দুই আসামী প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর ডেথ রেফারেন্স দ্রুত হাইকোর্টে যাচ্ছে। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি, মামলার সব নথি ও কেস ডকেট দুয়েকদিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি কক্সবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মামলার আসামি মো. লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ৩০০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি, যাবতীয় নথি ও কেস ডকেট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানো হবে।

কক্সবাজার জেলার সাবেক পিপি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সিনহা হত্যা মামলায় বাদি পক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে থেকে মামলার রায়ের কপি, ডকেট ও নথি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ আসামির ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হবে। শুনানিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অংশ নিতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘যে ২ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে তারা চাইলে ঘোষিত রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন। তবে রায় ঘোষণার দিন থেকে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যেই এ আপিল করা যায়।’

যাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে তারা সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

রায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপপরিদর্শক নন্দলাল রক্ষিতের আইনজীবী দীলিপ কুমার দাশ জানান,তিনি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

এ দিকে, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কারাবিধি অনুযায়ী সোমবার থেকে কয়েদিদের জন্য নির্ধারিত পোশাক পরিয়ে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।

আগে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তাদের ডিভিশন থাকলেও, রায়ের পর ডিভিশন বাতিল করা হয়েছে এবং সাধারণ কয়েদিদের মতোই কারাগারে রাখা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) নেছার আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, তারা জেলকোড অনুযায়ী সুবিধা পাবেন।

জেল সুপার বলেন, কক্সবাজার জেলা কারাগারে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের জন্য আলাদা কোনো কনডেম সেল না থাকায়, দুটি কক্ষকে কনডেম সেল করে সেখানে তাদের ২ জনকে রাখা হয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের কয়েদিদের সেলে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া, সিনহা হত্যা মামলার রায়ে বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত ৭ জনকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালতের আদেশের কাগজপত্র পেয়ে যাচাই-বাছাই করে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এদিকে কক্সবাজার কারাগারের অন্ধ কুঠরী কনডেম সেলে অস্বস্তিকর জীবন কাটাচ্ছেন একসময়ের টেকনাফের প্রতাপশালী ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার অন্যতম সহযোগী লিয়াকত আলী। ক্ষমতার জোরে প্রদীপ সেখানে রাজা হয়ে বসেছিল। মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে কথিত বন্দুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে ক্রসফায়ারে খুন করেছিল দুই শতাধিক নিরিহ মানুষ। ক্রসফায়ার ভয় দেখিয়ে লুটপাট বাণিজ্য করেছিল কোটি কোটি টাকা।

সেই টাকার ভাগ নিয়েছিল তার উপরের বসরা, কিছু রাজনৈতিক নেতা ও মিডিয়া কর্মীরা। প্রদীপের ফাঁসির রায় হলেও তার সেই সহযোগী ও তার কাছ থেকে সুবিধাভোগীরা কেউই আজ তার পাশে নেই। জানা গেছে এসব বিষয়ে প্রদীপ ও তার ক্রসফায়ার সহযোগী লিয়াকত আজ খুবই অনুতপ্ত ও লজ্জিত।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেজর (অব.) সিনহা

১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ