Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টঙ্গীতে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ পুলিশসহ আহত ১৫

৩ কারখানা ছুটি

টঙ্গী সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

টঙ্গীর বিসিক এলাকায় গতকাল পোশাক শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশসহ প্রায় ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছে।
ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ৩টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
আহত শ্রমিকরা হলেন- মনিরুল, সাফিনা আক্তার, মুক্তি আক্তার, কামাল, শাহিনুর আক্তার, নুর মোহাম্মদ, তাসলিমা ও জিয়া। আহত মুক্তি ও কামালকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অন্য শ্রমিকদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শ্রমিকরা জানায়, গত শনিবার কারখানার ফিনিশিং সেকশনের কাজ করা রিপা আক্তারকে লাঞ্ছিত করেন একই কারখানার পঞ্চম তলার উৎপাদন ব্যবস্থাপক লুৎফর রহমান। এ সময় তিনি রিপাকে ধাক্কা দিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ওইদিনই বিচারের দাবিতে শ্রমিকরা উৎপাদন কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করে। পরে শ্রমিকরা ১২টি দাবি উল্লেখ করে মালিক পক্ষের নিকট একটি দাবিনামা জমা দেয়। সোমবার শ্রমিকরা উৎপাদন কাজে যোগ না দিয়ে বাসায় চলে যায়। মালিকপক্ষ মঙ্গলবার সকালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণার নোটিশ ফ্যাক্টরির সামনে টাঙ্গিয়ে দেয়। এতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পুলিশ বাঁধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় পুলিশ গ্যাস গান ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পরে শ্রমিকরা সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আর বি এস আর ফ্যাশন লিমিটেড এবং বিসিক ফকির মার্কেটে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে শ্রমিক পুুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শ্রমিকরা চলে যাওয়ার সময় সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আর বি এস আর ফ্যাশন লিমিটেড ও রেডিসন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় ভাঙচুর চালায়। পরে ওই কারখানা তিনটির কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করেন।

টিভলি অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, শ্রমিকরা উৎপাদন ব্যবস্থাপকের অপসারণ চেয়েছিল। আমরা তা মেনে নিয়েছি। তাই বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিজিএমইএর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ জানান, টিভলি অ্যাপারেলসের শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে অন্য কারখানাগুলোতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এতে পুলিশ বাঁধা দিলে পুলিশের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিল্প পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ