মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভোপাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এক কারারক্ষীকে হত্যার পর তারা পালিয়ে যান। তবে রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের ভাষ্য ভিন্ন হওয়ায় ওই ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে। বিতর্ক রয়েছে উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা একটি কারাগার থেকে বন্দিরা কোনো হাতিয়ার ছাড়াই কেমন করে পালালেন? পুরো প্রক্রিয়াকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলে মন্তব্য করে এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতারা। পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, রোববার গভীর রাতে ভোপাল কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কারারক্ষীকে মেরে ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ছাত্রসংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া (এসআইএমআই সিমি)-র আট সদস্য পালিয়ে যান। সেদিনই পলাতক ছাত্রনেতাদের খোঁজ দিতে পাঁচ লাখ রুপি পুরস্কারও ঘোষণা করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে।
গত সোমবার সকালে ভোপালের অদূরে মালিখেড়া নামক একটি স্থানে পুলিশ ও এন্টি-টেরোরিজম স্কোয়াড (এটিএস)-এর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওই কারাবন্দিরা নিহত হন বলে পুলিশ দাবি করে। রাজ্য পুলিশের আইজি যোগেশ চৌধুরী জানান, ‘আমরা ওই আটজনের খোঁজ পেয়ে সেখানে গেলেই তারা আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এরপর পুলিশের তরফে পাল্টা গুলি চালালে তারা নিহত হন।’ পুলিশের ভাষ্যমতে, রোববার রাত ২টা থেকে ৩টার দিকে জেলের এক নিরাপত্তারক্ষীকে কাটাচামচ দিয়ে গলা কেটে খুন করে ওই আট ছাত্রনেতা। জেলের লম্বা দেয়ালে চাদর দিয়ে দড়ি টাঙিয়ে পালায় তারা। তবে পুলিশ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বলে দাবি করলেও মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতাসীন বিজেপির রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভুপেন্দ্র সিং বলেছেন, ‘ওই আটজন কাঁটাচামচ দিয়েই পুলিশকে হামলা করেছিলেন। তখন পুলিশের গুলিতে তারা নিহত হন।’
ওই ঘটনার পর ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। যেখানে নিহতদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। আর তাদের খুব কাছ থেকে গুলি করছেন এক পুলিশ সদস্য। কিন্তু তাদের কাছে কোনো অস্ত্র দেখা যায়নি। এক পুলিশ (এটিএস) সদস্যকে দেখা যায়, এক মরদেহের প্যান্টের পকেট থেকে ছুরির মতো কিছু একটা বের করতে। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই সেখানে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়নি। কাঁটাচামচ দিয়ে একজন কারারক্ষীর গলা কাটা এবং উচ্চ নিরাপত্তার কারাগার থেকে পালানোর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাঁটাচামচ দিয়ে হামলা চালানো বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা এবং ওই ভিডিও প্রকাশের পর ওই ঘটনায় সন্দেহ পোষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। বিরোধী দলগুলোও একে প্রশ্নবিদ্ধ করে তদন্ত দাবি করেছে।
মধ্যপ্রদেশের বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, ‘রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যের মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, ওই বিচারাধীন ব্যক্তিরা কাঁটাচামচ দিয়ে হামলা চালিয়েছেন। যদি কাঁটাচামচই তাদের হাতিয়ার হয়ে থাকে, তাহলে মধ্যপ্রদেশের এটিএস সহজেই তাদের ধরাশায়ী করতে পারত। কারণ তাদের কাছে সেই মানের অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। তারা ওই ব্যক্তিদের সহজেই গ্রেফতার করতে পারতেন। কিন্তু কারারক্ষীকে হত্যা করে কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের হাতিয়ার কেবল ওই চামচ, যা যে কোনো সাধারণ মানুষের কাছেই থাকে। এই তত্ত্ব অবিশ্বাস্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘আরো অবাক করা বিষয় হলো, ওই বিচারাধীন ব্যক্তিরা ভালো কাপড়-চোপড় পরা ছিলেন, ভালো ঘড়ি এবং জুতোও ছিল। এসব তো কারাগারে বিচারাধীন ব্যক্তিকে দেয়া হয় না।’ রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসও এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা কমল নাথ বলেন, ‘সিমি সদস্যরা এমনেক কারাগার থেকে পালাল, যা উচ্চ নিরাপত্তার কারাগার। আর এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তারা গুলিতে নিহত হলেন। এখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।