নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
৪০০ থেকে মাত্র এক উইকেট দূরে ছিলেন সাকিব আল হাসান। দিনের খেলায় ব্যাট করা কঠিন- এ তত্ত্ব বিপিএলের প্রথম দুই দিনের খেলায় প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল ফরচুন বরিশালকেও মাহমুদউল্লাহ টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানানোয় সেই মাইলফলক ছোঁয়ার মুহূর্তে বিলম্বিত হয়েছে কেবল। আগের ব্যাট করে মাত্র ১২৯ রান তোলায় সেই সুযোগ এসে যায় দ্রুতই! পরে বল হাতে এসেছেন দ্রুতই। তবে মেলেনি সাফল্য। প্রথম ৩ ওভারে ছিলেন উইকেটশূন্য। চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে আসার আগে মিনিস্টার ঢাকার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ রান। যার উইকেট নিয়ে কীর্তিটি গড়েন সাকিব, সেই মাহমুদউল্লাহর গড়ে দেওয়া ভিতে দাঁড়িয়ে ঢাকাকে প্রথম জয় উপহার দেন আন্দ্রে রাসেল। ছিনিয়ে নেন সাকিবের ম্যাটিও।
এছাড়া বরাবরের মতো বিপিএলের দিনের ম্যাচ হিসেবে নতুন কোনো চমক দিতে পারেনি মিরপুরের উইকেট। একদিকে আলজারি জোসেফের গতি ও বাউন্স, আরেক দিকে শফিকুর ইসলামের সুইং- এতেই বরিশাল পায় দারুণ এক শুরু। মাত্র ১০ রান তুলতেই মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার প্রথম চার ব্যাটসম্যান আউট! তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ নাঈম, জহুরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শেহজাদের কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। স্কোরবোর্ডে মাত্র ১২৯ রান নিয়ে লড়তে হলে এমন শুরুই তো দরকার! কিন্তু ঢাকার লম্বা ব্যাটিং লাইন-আপের সঙ্গে লড়তে হলে দ্রুত আরও কিছু উইকেট নিতে হতো। মাহমুদউল্লাহ ও শুভাগত সেটি হতে দেননি। ৬২ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়ে ঢাকাকে বিপদমুক্ত করেন। ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে মাহমুদউল্লাহর দল।
প্রথম স্পেলে দারুণ বোলিং করা শফিকুর ও জোসেফকে দ্বিতীয় স্পেলের জন্য বোলিংয়ে আনতে একটু দেরিই করে ফেললেন সাকিব। মাঝের ওভারে স্পিন দিয়ে মাহমুদউল্লাহ-শুভাগতর জুটি ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। ইনিংসের ১৪তম ওভারে ব্রাভোর বলে ২৫ বলে ২৯ রান করে শুভাগত আউট হন। জুটি ভেঙে উল্টো যেন নিজেদের বিপদই ডেকে এনেছেন ব্রাভো। আন্দ্রে রাসেল ক্রিজে এসেই চার-ছক্কায় রান বাড়াতে থাকেন। ৩টি চার ও ও ২টি বিশাল ছক্কায় মাত্র ১৫ বলে ৩১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন এই জ্যামাইকান। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মাত্র ২৫ বলে ৫০ রান যোগ করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ ৪৭ বলে ৪৭ রান করে আউট হন। তাকে ফিরিয়ে ইতিহাসে পঞ্চম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৪০০ উইকেট পেলেন সাকিব। তবে তার আগে দুজনের জুটিতে ঢাকা জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইনিংসের ১৫ বল ও ৪ উইকেট বাকি থাকতে। এবারের বিপিএলে এটিই ঢাকার প্রথম জয়। ব্যাট-বলে দ্যুতি ছড়ানোর পাশাপাশি দুটি ক্যাচ নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ঢাকা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে বরিশালের ব্যাটিংয়েও ছিলনা পরিপক্কতার ছাপ। ওপেনার সৈকত আলীর সহজ ক্যাচ ছেড়ে বিস্ময় উপহার দেন তামিম। তিনি। যদিও একটু পর তার হাতেই ধরা পড়েছেন তরুন এই ব্যাটরা (১৮ বলে ১৫ রান)। সৈকতের আউটের পর তিন নম্বরে ক্রিস গেইলের ব্যাটিং দেখার অপেক্ষায় ছিল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। কিন্তু গেইল ব্যাটিংয়ে এলেন ৫ নম্বরে, দীর্ঘ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এদিনই প্রথম তিনের নিচে ব্যাটিংয়ে নামলেন এই ক্যারিবীয় কিংবদন্তী। নতুন পজিশনে নেমে রানও পেয়েছেন। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর সাকিবকে নিয়ে ৩৭ রানের জুটি গড়েন গেইল।
১৯ বল খেলে ২৩ রান যোগ করে সাকিব আউট হলে আরেক ক্যারিবীয় ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে আরেকটি জুটি গড়েন তিনি। মাত্র ১৯ বলে ৩৩ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচআউট হন। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় সেজেছে গেইলের ইনিংস। শেষে ব্রাভোর ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২৬ বলে ৩৩ রান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল ব্রাভোর অপরাজিত ইনিংসে। দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানই বরিশালকে ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১২৯ রানে নিয়ে যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল : ২০ ওভারে ১২৯/৮ (সৈকত ১৫, নাজমুল ৫, সাকিব ২৩, তৌহিদ ০, গেইল ২৬, নুরুল ১, ব্রাভো ৩৩, জিয়াউর ১, জোসেফ ৪, তাইজুল ৫; রুবেল ১/৮, শুভাগত ১/১৯, হাসান ১/১২, রাসেল ২/২৭, উদানা ২/২৯, মাহমুদউল্লাহ ১/৩১)।
মিনিস্টার ঢাকা : ১৭.৩ ওভারে ১৩০/৬ (তামিম ০, শেহজাদ ৫, নাঈম ৪, জহুরুল ০, মাহমুদউল্লাহ ৪৭, শুভাগত ২৯, রাসেল ৩১*; শফিকুল ২/২০, জোসেফ ২/৩৪, সাকিব ১/২১, ব্রাভো ১/১৬, তাইজুল ০/২৯, জিয়াউর ০/৬)। ফল : মিনিস্টার ঢাকা ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।