Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করে ভাইরাল আ’লীগ নেত্রী রূপা

সোশাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:১৯ এএম

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে অখ্যাত অনেকেরই রাতারাতি তারকা বনে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কেউ ভাইরাল হন গান গেয়ে কেউবা অসাধারণ কৃতিত্ব দিয়ে। আবার স্ক্যান্ডাল ভাইরাল হয়েও তোলপাড় সৃষ্টি করতে দেখা গেছে অনেককে। সর্বশেষ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করে ভাইরাল হলেন আ’লীগ নেত্রী মাহবুবা নাসরীন রূপা।

ফেসবুকে অনেকেই রূপার ছবি শেয়ার করে প্রশ্নফাঁসের কঠোর নিন্দা জানান। এর আগে শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রুপাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা মহা-হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীনে ‘অডিটর’ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে প্রশ্নফাঁসে জড়িয়ে গ্রেফতার হওয়া মাহবুবা নাসরীন রূপাকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।

প্রশ্নফাঁসে রূপা গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। বহু মানুষ তার ছবি শেয়ার করে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। এরপরই তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার খবর আসে।

কে এই রূপা?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগ ইডেন কলেজ শাখার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রূপা দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত ভুঁইপুর গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। বাবা আতাউর রহমান দীর্ঘদিন ঢাকায় বেসরকারি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ঢাকায় বাবার কর্মস্থলে লেখাপড়া করেন। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন রূপা।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি হঠাৎ ঢাকা থেকে দুপচাঁচিয়ায় এসে ১৪ দল মনোনীত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে নামেন। ২০১৯ সালের মার্চে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার পর এলাকায় তার পরিচিতি প্রকাশ পায়। ঢাকার ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয়ে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচনে মাঠে নামেন। সরকারি দলের পরিচয় দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকজন নারী প্রার্থীকে হারিয়ে তিনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তার বাবা মারা যান।

এরপর শুরু হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন দফতরে তার দাপট। নির্বাচনে জিতে শপথ গ্রহণের পর উপজেলা পরিষদের প্রথম মিটিংয়ে তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ইশারায় উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নির্বাচিত হন। তিনি ভুঁইপুর গ্রামে না থেকে চাচা দেলোয়ার হোসেনের গোবিন্দপুরের পালিমহেশপুর গ্রামে থাকতেন। চাচার বাড়িতে থেকেই তিনি ভাই রকিবুল হাসান রকিকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, সরকারের ও দলের শীর্ষ কয়েকজনের সঙ্গে থাকা ছবি দেখিয়ে তিনি এলাকায় প্রভাব সৃষ্টি করেন। তার হস্তক্ষেপে অনুপ্রবেশকারী নেতাদের নিয়ে দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় নেতারা বলছেন, রূপা দলের প্রাথমিক সদস্য না হলেও উচ্চ মহলের চাপে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ দেওয়া হয়।



 

Show all comments
  • MD Akkas ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৩২ এএম says : 0
    আর কত অব্যহতি দল খালি হয়ে যাবে তো !
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রূপা

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ