নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫টি,ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবিয়ারদের বিপক্ষে ২টি জয়ের অতীত আছে বাংলাদেশের। তবে ফেভারিট মর্যাদায় খেলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ৫টি জয় ছিল বাংলাদেশের প্রত্যাশিত। এমনকি ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২-০তে টেস্ট জয়ের সিরিজেও আত্মগরিমার তেমন কিছুই নেই। কারণ বকেয়া বেতনের দাবিতে গেইল, চন্দরপল, স্যামুয়েলস, ব্রাভোদের বিদ্রোহে ওই সিরিজে সময়ের সেরা ৭ ক্রিকেটারকে ছাড়াই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। যে ইংল্যান্ডের কাছে অতীতের ৯টি টেস্টে তিনদিনে হার বাংলাদেশের ৪টি, ইনিংস ব্যবধানে ৩টি, ৩২৯ রানের ব্যবধানেও হারের রেকর্ড আছে যাদের, টেস্টের তিন নম্বর র্যাংকিংধারী সেই দলকে তিনদিনে হারিয়ে দেয়ার মতো দুঃসাহস দেখাতে পেরেছে বাংলাদেশ দল! মিরাজ দ্যুতিতে ইংল্যান্ডের দর্পচূর্ণ করা জয়টি আবার ১০৮ রানে! এমন একটি জয়কে তাই টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের সেরা জয় বলছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজÑ‘আমার মনেহয় হয় এখন পর্যন্ত এটা বড় একটা অর্জন বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে। আমি বলবো ইংল্যান্ডের মতো এমন একটা ধারাবাহিক বা শক্তিশালি দলে বিপক্ষে এই জয়কে এখন পর্যন্ত আমাদের ক্রিকেটে নিজেদের সবচেয়ে বড় অর্জন বলব। যেভাবে আমরা গত তিন দিন লড়াই করেছি তাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনদিনে জয়কে অবিশ্বাস্য মনে হলেও মুশফিুকুরের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে না। ইংল্যান্ডকে হারে বাধ্য করতে নাকি তিন-চার দিনে ফলাফল বের করে আনা যায়, এমন উইকেট চেয়েছিলেন মুশফিকুরÑ‘যখন আমরা জেনেছি ইংল্যান্ড আসবে, তখন থেকেই এমন উইকেটের কথা ভাবছিলাম,যে উইকেটে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে রেজাল্ট হয়। যে উইকেটে আমাদের স্পিনাররা অনেক সহায়তা পায়, এবং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, সেটাই চেয়েছিলাম। চট্টগ্রাম যে উইকেট পেয়েছি, তাতে পাঁচদিন লড়াই করে বিস্মিত হয়েছি। কারন ওখানে তিন বা সাড়ে তিনদিনের বেশি ম্যাচ যাওয়ার কথা ছিলো না। পছন্দের উইকেট পেলে আমরা এমন অবস্থা তৈরি করবো, এটা আমাদের পূর্ব পরিকল্পনায় ছিল।’
চট্টগ্রামে হাতের মুঠোয় থাকা টেস্ট ২২ রানে হেরে যাওয়ায় ঢাকা টেস্টে ১০৮ রানে জিতে যাওয়ায় বিস্মিত হননি মুশফিকুর। এমনকি টী ব্রেকের আগে ইংল্যান্ডের স্কোর ১০০/০ দেখেও নাকি জয়ের আশা ছাড়েননি মুশফিকুরÑ ‘১০০ তে কোনো উইকেট না হারিয়ে আজই ওরা অলআউট হবে, এতোটা আশা করিনি। একটা উইকেট পড়লে, উইকেটের যে আচরণ হয়তো ভিন্ন কিছু হতেও পারে, এমন বিশ্বাস ছিল। বিশেষ করে সাকিব আর মিরাজ অসাধারণ বোলিং করেছে। তবে ২-০তে জিততে না পারায় আক্ষেপ নেই। প্রথম টেস্টে সুযোগ হাতছাড়া করে সেখান থেকে শিখে আমরা দ্বিতীয় টেস্টটা জিতেছি।’
এই জয়ে ভবিষ্যতে বড় যে কোন দলের বিপক্ষে ২-০তে টেস্ট জেতার আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছেন বলে মনে করছেন তিনিÑ‘সামনে এমনও সুযোগ আসবে যেখানে আমরা ২-০ তে সিরিজ জিততে পারি বড় কোনো দলের বিপক্ষে। কারণ, এখন দলে আমাদের পারফরমারে সংখ্যাটা অনেক বেশি। সাত বা আট নাম্বারে বা যারা নতুন আসছে দলে তারা অনেক অবদান রাখছে দলের জন্য। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল বিশ্বাস করে যেকোনো জায়গায় থেকে যেকোনো দলকে হারাতে পারবে। এখন আমি বিশ্বাস করি, টেস্টেও আমরা ধীরে ধীরে সে জায়গার দিকে যাচ্ছি।’
ইংল্যান্ডকে ধাঁধায় ফেলতে মিরাজকে গোপনে গোপনে প্রস্তুত করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট এবং কোচিং স্টাফ। আফগানিস্তান এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে মিরাজকে খেলানো হয়নি, সেই গোপনীয় থাকা কথাই জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিমÑ‘অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছি যে ইংল্যান্ড যদি বাংলাদেশ সফর করে, তাহলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওকে খেলাব না। ওর সম্পর্কে র্ইংল্যান্ড যেনো কোন ধারণা না নিতে পারে, সেজন্যই এটাই কৌশল ছিল আমাদের। ও যে ধরনের ক্রিকেটারএবং যে মানসিকতার খেলোয়াড়, তাতে মিরাজের কাছ থেকে অনেককিছু শেখার আছে।’
২০ উইকেট নিতে হলে স্পিনিং উইকেট পাওয়া চাই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে নাকি সে পরিকল্পনাই ছিল টীম ম্যানেজমেন্টের। কৌশলগত সেই অস্ত্র প্রয়োগে স্পিনাররা শানিয়ে নিতে পারায় দারুন খুশি মুশফিকুরÑ ‘২০ উইকেট নেওয়ার মতো বোলার আমাদের রয়েছে। ওরা (ইংল্যান্ড) স্পিনে যত সম্ভব ভালো খেলুক না কেন তবুও সম্ভব। তাই স্পিনারদের জন্য উইকেটের পরিকল্পনা আমাদের ছিল।’ স্পিন ফ্রেন্ডলি উইকেটে তামীমের সেঞ্চুরি বিফলে যায়নি। তার জন্য শুকরিয়া আদায় করছেন মুশফিকুর রহিমÑ‘তামিম একশ’ করার পর বাংলাদেশ একটা বড় দলের সঙ্গে জিতল। এর আগে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে জিতেছি ওর ব্যাটিংয়ে। এজন্যই আমি খুশি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।