বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল মহানগরী আর খুলনা-বাগেরহাট সীমান্তের পিরোজপুরে করোনা সংক্রমন প্রতিদিনই নাজুক আকার ধারন করছে। সাথে পিরোজপুরের পাশের ঝালকাঠীতেও সংক্রমন ক্রমশ বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পর্যবেক্ষনে এতদিন সবুজ অঞ্চলে থাকা মহানগরী সহ বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায়ই নতুন বছরের শুরু থেকে সংক্রমন বৃদ্ধির সাথে শনাক্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়লেও নুন্যতম কোন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। বিষয়টি নিয়ে যথারিতি উদাশীন বরিশাল মহানগর প্রশাসন সহ সব জেলা ও উপজেলা প্রশাসনও। মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় গত দু মাসের সর্বোচ্চ সংক্রামন শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায়। এসময়ে মহানগরীতে ১৪ জন সহ এ অঞ্চলে মোট ৪২ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। জেলাওয়ারী হিসেবে বরিশালই শীর্ষে, ১৮ জন। এর পরেই পিরোজপুরে ১২, ভোলায় ৪,পটুয়াখালীতে ২ এবং বরগুনা ও ঝালাঠীতে ৩ জন করে করোনা শনাক্তের খবর দিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলে এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমনের মোট সংখ্যাটা ৪৫ হাজার ৫৫৪ জনে উন্নীত হল। মারা গেছেন ৬৭৯ জন। আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪ হাজার ৬৫৬ জন। সুস্থতার হার ৯৮%-এর কিছু বেশী হলেও শনাক্তের গড় হার এখন প্রায় ২০%। আর গত ৩ মাসে করোনা সংক্রমনে কোন মৃত্যু না হলেও এখনো গড় মৃত্যু হার ১.৪৯%।
চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনেই দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০৫ জনে উন্নীত হয়েছে। যা গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরের মোট আক্রান্ত ৮৮ জনের প্রায় আড়াই গুন। তবে মধ্য অক্টোবরের পর থেকে এ অঞ্চলে কারোনা সংক্রমনে কারো মৃত্যু হয়নি।
দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি জেলাতেই প্রতিদিন করোনা সংক্রমন লাফিয়ে বাড়ছে। গত ১৫ জানুয়ারী যেখানে এ অঞ্চলে সংক্রমন সংখ্যা ছিল ৮ জন। পরদিনই তা ২০ জনে উন্নীত হয়। ১৭ জানুয়ারী সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ৩৮ জনে। আর ১৮ জানুয়ারী মঙ্গলবারে গত দুমাসের সর্বোচ্চ ৪২ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে । অথচ পুরো ডিসেম্বর মাসে সংক্রমন সংখ্যা ছিল ২২ জন।
চলতি মাসের শুরু থেকেই করোনানতুন করে ফিলেঅঅসতেশুরু করে এ অঞ্চলে। কিন্তু নুন্যতম কোন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরনের তোয়াক্কা করছেন না কেউ। এমনকি পুলিশ, প্রশাসন সহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোরও এ বিষয়ে কোন হেলদোল নেই। বরিশাল মহানগরী সহ এ অঞ্চলের শহরগুলোতে মাস্কের ব্যাবহার ২০ ভাগেরও নিচে। আর পল্লী অঞ্চলে মাস্ক ব্যাবহারের বিষয়টি সবাই ভুলে গেছেন। উঠতি ও তরুন বয়সীরা মাস্ক ব্যাবহারকে ‘দূর্বলতার লক্ষন’ বলেই মনে করছে।
এমনকি নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় যেখানে ২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সেখানে পারবর্তি ৭ দিনে সংখ্যাটা ৬৪ জন সহ গত ১৫ দিনে মোট আক্রান্ত ১০১ জন হলেও পরের ৩ দিনেই আরো ১শ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববতি ২৪ ঘন্টায়ই আক্রান্ত ৪২ জনের মধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই ১৪ জন।
গত জুলাই মাসে করোনার মহা সংকটকাল অতিক্রমকালে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১৫ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয় প্রায় দেড়শ নারী-পুরুষের। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের।
গত মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮০। মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। তবে গত আগষ্টের মধ্যভাগ থেকেই দক্ষিনাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও ঐ মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। মৃত্যু হয় ১৬৭ জনের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতির নতুন মোড় নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১৯৫ জনে হ্রাস পেলেও মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জনের। আর অক্টোবরে ৬ জেলায় মোট আক্রান্ত ২১৭ জনের মধ্যে প্রথম ১৫ দিনে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনেও বরিশাল অঞ্চলে শনাক্তের মধ্যে মহানগরী সহ বরিশাল জেলাই শীর্ষে রয়েছে। গোটা বিভাগের মাত্র ৬% জনসংখ্যার এ নগরীতে এ পর্যন্ত সরকারীভাবে করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার অতিক্রম করেছে। মারা গেছেন ১০২ জন।
আর মহানগনরী সহ বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ১৮ হাজার ৪৪৩ জনের মধ্যে মারা গেছেন ২৩০ জন। পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যাটা ৬ হাজার ২৫০। মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। ভোলাতেও আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৮৪ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। পিরোজপুরে মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৩৩৯ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। বরগুনাতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৭২। মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের। আর ঝালকাঠীতে ৪ হাজার ৬৭৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।