সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির ক্ষতি ১ দশমিক ৬ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল
কাজী সুলতানুল আরেফিন
টিপু মামার হৈ চৈ তে ঘুম ভেঙ্গে গেল শিপুর।
‘এখনো এখনো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস আর ঐদিকে রাতে আমার সাধের কলার কাঁদি চুরি গেছে। সকালে নদীর পাড়ে গিয়ে দেখি কলার কাঁদি নেই’।
-কি বল মামা! চোখ কচলাতে কচলাতে শিপু উঠে বসলো। ‘আজ সেই কলার কাঁদি থেকে আমাকে কলা খাওয়ানোর কথা ছিল’।
-‘কথা ছিল কিন্তু এখন চোর ব্যাটা জম্পেশ কলা খাচ্ছে’। টিপু মামা ভ্রু কুচকালেন।
-‘আমি আগে থেকেই জানতাম কলার কাঁদি চুরি যাবে!’ শিপুর দীর্ঘশ্বাস ঝরে পড়ে।
শিপুর কথা শুনে মামা আবারো ভ্রু কুচকালেন। তারপর বললেন, ‘তুই দেখি নেতাদের মত কথা বলিস! আগে থেকে জানলে কিছু করলি না কেন?
মামার কথা শুনে শিপু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল।
গতকাল নানুর বাড়ি বেড়াতে আসার পর মামা বিকেলে নদীর পাড়ে নিয়ে শিপুকে উনার সদ্য পাকা কলার কাঁদি দেখিয়েছিলেন। আজ খাওয়াবেন বলে কথাও দিয়েছিলেন। অথচ রাতেই নাকি চোরা ব্যাটা কর্ম সারা করে দিয়েছে। মামা চোরা ব্যাটার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতে করতে চলে গেলেন।
শিপু ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিল তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লো। পথেই টিপু মামার সাথে দেখা হয়ে গেল। সে মামাকে বলল, ‘চলেন স্পটে গিয়ে দেখি কোন সূত্র খুঁজে পাই কিনা দেখি!’ শিপুর আবার এক আধটু গোয়েন্দাগিরি করার শখ আছে। এ শখ উতলে উঠেছে রকিব হাসানের ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজ পড়ার পর থেকে। কি নেশারে বাবা! একটানা একশত ত্রিশ খানা পড়েছিল সে!
দুজনেই স্পটে এসে পোঁছাল। শিপু ভাল করে চারদিক পর্যবেক্ষণ করে দেখতে লাগলো। মামার কণ্ঠে রাগ ঝরে পড়ছে, ‘একবার বের করতে পারিস কিনা দেখ! তারপর চোরা ব্যাটাকে কলার মত চিলে খাব’। মামার কথা শুনে শিপু মুচকি হাসি দিল। সে হাসি আরও প্রসারিত করে মামাকে বলল, ‘ব্যাপার না! চোর ধরে ফেলব। আমি সূত্র পেয়ে গেছি’। কলা গাছ থেকে একটু দূরে নদীর তীরের নরম বালিতে চোরা ব্যাটার স্যান্ডেলের দাগ পাওয়া গেছে। বাড়ি থেকে কাগজ আর পেন্সিল এনে শিপু তা অঙ্কন করে নিয়ে গেল।
সন্দেহের তালিকায় প্রথমে ছিল আবুল মামা। এহেন কর্ম করার সম্ভাবনা উনার বেশি। অতীতে উনি বেশ কয়েকবার শিপুকে আপ্যায়ন করেছিলেন অপরের গাছের নারিকেল, কচি তাল বা পাকা পেয়ারা ইত্যাদি দিয়ে। শিপু প্রথমেই উনার পিছু নিল। তবে কাজ হচ্ছিলনা কারন আবুল মামা খালি পায়ে চলছেন। স্যান্ডেল পরার অপেক্ষায় রইল শিপু। দুদিন বাদে শুক্রবার। সবার সাথে শিপুও নানুর বাড়ির মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করল। নামাজ শেষে সে আবুল মামাকে লক্ষ্য রাখল। মসজিদে আসার সময় নিশ্চয় স্যান্ডেল পড়ে এসেছেন! উনি বের হওয়া পর্যন্ত শিপু বসে রইল। উনি যখন মসজিদ থেকে বের হলেন তখনই উনার পিছু নিল সে। এক পা দু পা করে উনার পিছু পিছু এগিয়ে যেতে লাগলো। এক সময় নরম জায়গায় উনার স্যান্ডেলের চিহ্ন পড়লো। শিপু দাত কেলিয়ে নীরবে হাসি দিল। শিপুর অনুমানই ঠিক। রাতে খাবারে পর সে আবুল মামার শোবার রুমের ঠিক পিছনটায় গেল। তারপর বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে ঘাপটি মেরে বসে রইল। কিছুক্ষণ বাদে আবুল মামা আসলেন। নিভু নিভু বাতির আলোয় দেখা গেল মামা পুরানা সিন্দুকের ঢালা তুলে কিছু একটা ছিঁড়ে নিলেন তারপর খোসা চিলে খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেন। শিপু ঘরের সামনে দিয়ে গেল তারপর হাঁক ছেড়ে আবুল মামাকে ডাক দিল। মামা এসে দরজা খুলে শিপুকে উনার রুমে নিয়ে গেলেন আর বললেন, ‘আরে ভাগিনা! কি মনে করে রাতে এলে? বস। কি খাবে বল?’
শিপু মুচকি হেসে মামাকে বলল, ‘মামা খাবার পরে ফল খাওয়া ভাল। তাই পাকা কলা খেতে চাই’! শুনে আবুল মামা বললেন, ‘এত রাতে কলা পাব কই’?
শিপু বলল, ‘আপনার যাদুর সিন্দুক থেকে বের করলেই হবে!’
শুনে আবুল মামা হতভম্ব হয়ে গেলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।