Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির ক্ষতি ১ দশমিক ৬ শতাংশ

জাতিসংঘ সংস্থার তথ্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:৩০ পিএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল (ইউএনইসকেপ)। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ১২ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা হিসাব করে সংস্থাটি জানিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপির আকার প্রায় ২২ লাখ কোটি টাকা। এ হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
২০০৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্বব্যাপী সড়ক দুর্ঘটনা কমানো ও নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাতটি নীতি গ্রহণ করা হয়, যা ২০১০-২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। এই সময়ের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্বের প্রাণহানি ও আহতের হার ১১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.৬ শতাংশে নামানো এবং জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে এ হার দুই শতাংশে নামানোর কথা বলা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে ইউএনইসকেপ আগামী ১১-১৬ মে ব্যাংককে এশিয়া-প্রশাস্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করছে। তার আগে ‘নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আঞ্চলিক প্রচেষ্টা শক্তিশালীকরণ’ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে পাঠিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্যের উল্লেখ রয়েছে।
গত ৭ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিবেশী মিয়ানমার ও নেপালে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। তবে ভারতে অনেক বেশি। দুর্ঘটনায় মিয়ানমারের ক্ষতি জিডিপির শূণ্য দশমিক ৫ শতাংশ, নেপালের শূণ্য দশমিক ৮ শতাংশ ও ভারতের তিন শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ইরানে, জিডিপির ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত গতি, ওভারলোডিং ও বিকল গাড়িকে মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দুটি মূল বিষয় লক্ষণীয়, একটি হলো ওভারটেকিং, বিপজ্জনকভাবে লেন পরিবর্তন, সামনের যানবাহনের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রাখাসহ চালকদের আইন ভঙ্গ করা। আরেকটি মূল কারণ হলো, মদ্যপান করে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো। চালকদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে তাদের আইন মেনে গাড়ি চালাতে বাধ্য করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া ও সড়ক-মহাসড়কে আইন-কানুন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে এতে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোকেও অন্যতম কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সড়কে মোটরসাইকেল, সাইকেল ও ধীরগতির যানবাহনের যাত্রীদের প্রাণহানির বড় কারণ দ্রæতগতির যানবাহন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাবিøউএইচও) এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, সড়কে যানবাহনের গতি পাঁচ শতাংশ কমানো হলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির হার ৩০ শতাংশ কমানো সম্ভব। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দুই চাকা (সাইকেল, মোটরসাইকেল) অধিক হারে ব্যবহৃত হয়। মোটরসাইকেলের যাত্রীদের হেলমেট ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু হেলমেটগুলোর বেশির ভাগই মানসম্পন্ন নয়। মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা আইন ভঙ্গের হাত থেকে নিজেদের রক্ষায় কোনোমতে একটি হেলমেট ব্যবহার করে, তবে তা তাদের জীবন রক্ষায় কার্যত কোনো ভূমিকা রাখে না। মানসম্পন্ন হেলমেট ব্যবহারের মাধ্যমে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ ও মারাত্মক আহত হওয়ার হার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন