Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বামী পরিত্যাক্তা নারীকে ধর্ষণ, মোংলায় ওয়ার্ড আ.লীগ সভাপতি বিরুদ্ধে মামলা

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ২:০৯ পিএম

মোংলায় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চাদঁপাই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির মল্লিকের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীকে ৩০ ডিসেম্বর রাতে ধর্ষণ করেন প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির মল্লিক। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অবশেষে ১০ জানুয়ারী মামলা রুজু করে মোংলা থানা পুলিশ। মামলা দায়েরের পর ৫ দিন অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে ধর্ষিতা নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে মালগাজী মিশনবাড়ী এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ধর্ষিতা ওই নারী ও জাহাঙ্গির মল্লিক একই এলাকায় বসবাস করার সুবাধে তাদের উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরী হয় এবং গত ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর তার পুর্বে স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছে হয় জাহাঙ্গীর মল্লিকের মধ্যস্থতায়।
এর পর থেকেই জাহাঙ্গীর মল্লিকের দৃষ্টি পড়ে ওই নারীর উপর। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। আসামী জাহাঙ্গীর তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথমে গত ২০১৭ সালে ৩০ ডিসেম্বর গভীর রাতে ধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। ওই নারী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের হওয়ার তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে জিম্মি করে দিনের পর দিন জোর পূর্বক শারীরিক ভাবে মেলামেশা করে আসছে জাহাঙ্গির মল্লিক।
পরে তাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে গত বছরের ১৭ জানুয়ারী একটি মিথ্যা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ের দেয়া এক লক্ষ টাকার বিয়ে সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট কপি এনে দেয় বলে জানায় নির্যাতিতা ওই নারী। তার মিথ্যা সাজানো ঘটনা বুঝতে পেরে বিষয়টি স্থানীয় চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলামকে জানানো হয় এবং এ ঘটনা নিয়ে এলাকার স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হয় মর্মে ওই নারী বলেন। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গত ৩০ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে জাহাঙ্গির মল্লিক তার ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে বলে মামলার এজাহার থেকে জানা যায়। পরে তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে জাহাঙ্গির মল্লিক ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর পরই থানায় এজাহার দাখিল করা হলে তদন্তের ৫ দিন শেষে জাহাঙ্গির মল্লিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করে মোংলা থানা পুলিশ। তবে এখনও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় এবং ধর্ষক মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রকাশ্য হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় মধ্যে আতঙ্কে রয়েছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এব্যাপারে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আসামী জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, আমার সাথে ওই নারী পুর্ব পরিচিত কিন্তু যে ঘটনা নিয়ে মামলা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণটাই মিথ্যা। আমার সাথে ইউপি নির্বাচনে হেরে গিয়ে প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্য করার চেষ্টা করছে।
চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে থেকেই এ ঘটনা আমাকে জানানো হয়েছিল কিন্ত জাহাঙ্গির মল্লিকের কর্মকান্ডে আমি হতবাক। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এরকম কর্মকান্ড কোন রকমই সমিচীন নয়। এখন মামলা হয়েছে, সত্যতা পেলে আদালতই এর সুষ্ঠু বিচার করবে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মালগাজী এলাকার স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীর অভিযোগের সুত্র ধরে তদন্ত করা হয়েছে এবং জাহাঙ্গির মল্লিক এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয়েছে। আসামী পলাতক থাকায় আটক সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান থানার এ কর্মকর্তা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ