নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টায় বেন স্টোকসের এক স্পেলে (৬-২-৯-৩) ২৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলে যাওয়ার কথা নয়। দারুণ শুরুতে প্রথম ইনিংসে লিডের সম্ভাবনা দেখানো ম্যাচে উল্টো ইংল্যান্ড পেয়েছে ৪৫ রানের লিড। চট্টগ্রাম টেস্টে ২২ রানে হেরে যাওয়ায় আসামির কাঠগড়ায় সেই বিপর্যয়। দিনের দ্বিতীয় বলে মঈন আলীকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে প্রলুদ্ধ চেয়ে সাকিব যে অপরাধ করেছেন, তা থেকে টীমমেটরা নিতে পারেনি শিক্ষা। ঢাকা টেস্টে কি দারুণ শুরুই না করেছিল বাংলাদেশ দল। টসে জিতে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পয়েন্টে ইমরুলের ক্যাচ প্র্যাকটিসের পর অন্য এক বাংলাদেশকেই দেখেছে বিশ্ব। প্রথম ঘন্টায় ৬৭, লাঞ্চের টেবিলে বসেছেন তামীম-মুমিনুল অবিচ্ছিন্ন থেকে, ১১৭ রানের পার্টনারশিপে। লাঞ্চের পরের ঘণ্টায় মঈন আলীকে মিড অন দিয়ে বাউন্ডারিতে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন তামীম (১০৪)। ফিফটিহীন ৫ ইনিংস অপেক্ষায় কাটানো মুমিনুল এদিন টেস্ট ক্যারিয়ারে দশম ফিফটি উদযাপন করেছেন। অথচ, মঈন আলীর বল শর্ট অফার না করে ছেড়ে দিতে চেয়ে নিজের মৃত্যুর সঙ্গে দলের বিপর্যয়ও ডেকে এনেছেন তামীম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটির সর্বোচ্চ ১৭০ রানের এই পার্টনারশিপে অনেক বড় স্বপ্নই দেখেছে বাংলাদেশ। অথচ, তামীমের ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু,এক দমকা হাওয়ায় ৪৯ রানে শেষ ৮ উইকেটের পতন! যে দলটি প্রথম সেশনে ওভারপিছু করেছে ৪.৫৫ রান, লাঞ্চের পরের ঘণ্টায় ৬৬ রান করেছে যোগÑসেই দলটিই কি না পরবর্তী ১৪৯ মিনিটে স্কোরশিটে ৩৬ যোগ করতে হারিয়েছে ৮ উইকেট!
৬ বছর আগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামীমের সেঞ্চুরির ইনিংসেও এমন বিপর্যয় দেখেছে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে তামীম-ইমরুল জুটির ১২৬ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ৪৭ রানে শেষ ৭ উইকেট হারাতে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়া বাংলাদেশকে টেস্টে এবারই প্রথম দেখেনি দর্শক। দারুণ শুরুর পর এর চেয়েও বাজেভাবে ইনিংস শেষ হওয়ার অতীত আছে বাংলাদেশের। ২০১৩ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের ৩৮৯’র জবাব দিতে স্কোরশিটের চেহারা এক পর্যায়ে ১০২/২, সেখান থেকে ১৩৪ এ অল আউট বাংলাদেশ! মাত্র ৩২ রানে উড়ে গেছে শেষ ৮ উইকেট! ২০০৭ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে পি সারা স্টেডিয়ামে ৬২ রানে অল আউট হওয়া বাংলাদেশের সর্বনি¤œ স্কোরের প্রথম ইনিংসে শেষ ৮ উইকেট পড়েছে মাত্র ৪৮ রানে!
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৭০ এবারই প্রথম দেখেছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে লর্ডসে ওপেনিং পার্টনারশিপে তামীম-ইমরুলের ১৮৫ রানের পর যে কোন জুটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামীম-মুমিনুলের ১৭০ রানের পার্টনারশিপ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে সম্ভাবনা দেখানো ম্যাচে তামীমের দেখানো ভুল পার্টনারদের মধ্যে হয়েছে সংক্রমিত। মঈন আলীর রাউন্ড দ্য উইকেটে ফুল লেন্থ ডেলিভারী স্কিড করে মুমিনুলকে বোল্ড আউটে করেছে বাধ্য ( ৬৬)। মহা অপরাধ করেছেন মাহামুদুল্লাহÑস্টোকসকে দিয়ে এলেন নিজের উইকেট উপহার। অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের শর্ট এন্ড ওয়াইড ডেলিভারি অকারণে ব্যাট চালিয়ে প্রথম স্পিলে ক্যাচ দিয়ে জঘন্য আউটে এসেছেন ফিরে। স্টোকসের বাউন্সার থেকে মুখ বাঁচাতে চেয়ে হেলমেটের পেছনে বলের আঘাতটাই মনোসংযোগে ধাক্কা দিয়েছে মুশফিকুরকে, পরের ওভারে মঈন আলীকে ফ্লিক করতে যেয়ে লেগ সিøপে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ মুশফিক। বল পুরোনো হলে রিভার্স সুইংয়ে কতোটা বিপজ্জনক রূপে আবির্ভুত হতে পারেনÑচট্টগ্রাম টেস্টের ২ ইনিংসের পর ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসেও এক স্পেলে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন স্টোকস (৬-২-৭-২)। সুইং বুঝতে না পেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাব্বির পুরস্কৃত করেছেন স্টোকসকে। ২০১৪ সালে সাউদাম্পটনে ভারতের বিপক্ষে ৬/৬৭ ছিল এতোদিন টেস্ট ক্যারিয়ারে মঈন আলীর একমাত্র ৫ উইকেটের ইনিংস। গতকাল টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেটের মুখ দেখেছেন এই অফ স্পিনার (৫/৫৭)। শের-ইÑবাংলা স্টেডিয়ামে এক স্পেলে (১৩.৫-৫-৩৪-৫) বাংলাদেশকে ছিন্ন ভিন্ন করেছেন মঈন আলী!
জানেন পুরো ইনিংসে বাংলাদেশ খেলেছে ২৭৮ মিনিটÑযে ইনিংসে দ্বিতীয় জুটির ১৭০ রানের মূল্যবান পার্টনারশিপের স্থায়ীত্ব ছিল ১৬২ মিনিট! বাংলাদেশের ইনিংসের ৭৭.২৭ শতাংশ রান এসেছে এই জুটি থেকে। জাভেদ ওমর-হাবিবুলের ৩২টি পার্টনারশিপে ৫টি সেঞ্চুরি ছিল এখনো টেস্টে বাংলাদেশের সর্বাধিক সংখ্যক সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ। তামীম-মুমিনুল মাত্র ১৩ টি পার্টনারশিপে সেঞ্চুরির সংখ্যাটি গতকাল ৪ এ উন্নীত করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।