Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চলে গেলেন সিডনি পয়টিয়ে : হলিউডে বর্ণবাদের দেয়াল ভেঙেছিলেন যিনি

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:২২ এএম

বর্ণবাদের ছিটেফোঁটা রয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে। হলিউডে এর অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে। এর পেছনে যে কয়েকজন অভিনয়শিল্পী বা নির্মাতা নিরলস কাজ করে গেছেন তাদের মধ্যে একজন নিঃসন্দেহে অভিনেতা সিডনি পয়টিয়ে। ৬ জানুয়ারি এক যুগের অবসান ঘটিয়ে এই সুঅভিনেতা চলে গেলেন পরলোকে। বাহামার রাজধানীতে মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪।
তার কৃষ্ণাঙ্গ সত্তা নিয়ে তিনি এতোটাই সচেতন ছিলেন যে একবার ওথেলো’ ভূমিকা গ্রহণ করতেই অস্বীকৃতি জানান কারণ তিনি কালো অভিনেতা হিসেবে টাইপকাস্ট হতে চাননি।
কালো গাত্রবর্ণের শিল্পীদের হয়ে তিনি অনেকগুলো দেয়াল অতিক্রম করেছেন, আর এর মধ্যে একটি হল- অস্কার জয়। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা হিসেবে তিনি ‘লিলিজ অফ দ্য ফিল্ড’ ফিল্মের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার অস্কার জয় করেন ১৯৬৩তে।
১৯২৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার মায়ামিতে জন্মগ্রহণ করেন পয়টিয়ে। তার বাবা-মা ছিলেন বাহামার কৃষিজীবী যারা টমাটো বেচতে যুক্তরাষ্ট্রে আসা যাওয়া করতেন। নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেয়ার পর তিনি বাহামা ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভ করেন।
বাহামার ক্যাট আইল্যান্ড থেকে তার পরিবার পরে রাজধানী নাসাউতে বসবাস শুরু করে। ১৫ বছর বয়সে সিডনি তার ভাইয়ের সঙ্গে জন্মস্থান মায়ামিতে ফিরে যান। সেখান থেকে নিউ ইয়র্ক। প্রথমে বাসন মাজার কাজে যোগ দেন তারপর হারলেমের অ্যামেরিকান নিগ্রো থিয়েটারে যোগ দেন ১৯৪০ সালে।
অভিনয়ের জন্য সেই যুগে প্রধান একটি গুন ছিল সঙ্গীত, পয়টিয়ে সুরবধির ছিলেন বলে গাইতেও পারতেন না।
১৯৪৬ সালে অ্যারিস্টোফেনিসের কমেডি ‘লিসিসট্রাটা’তে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন পয়টিয়ে।
১৯৪৯ সালে ফিল্মে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন, ১৯৫০এ মুক্তি পায় ‘নো ওয়ে আউট’, এতে তিনি এক নতুন চিকিৎসকের ভূমিকায় অভিনয় করেন যার রোগী এক বর্ণবিদ্বেষী মানুষ। ১৯৫৫’র ব্ল্যাকবোর্ড জাঙ্গল’ পয়টিয়েকে ব্যাপক পরিচিতি দেয়; এই ফিল্মেই বিল হ্যালি’র রক ক্লাসিক ‘রক অ্যারাউন্ড দ্য ক্লক’ গানটি ব্যবহার করা হয়েছে।
১৯৫৮তে তিনি ‘দ্য ডিফায়েন্ট ওয়ান’-এর জন্য অস্কার মনোনয়ন লাভ করেন।
পয়টিয়ে’র একটি স্মরণীয় ফিল্ম ১৯৬৭’র ‘গেস হু’জ কামিং টু ডিনার’ , এতে তিনি এক রক্ষণশীল পরিবারের তরুণীয় কালো প্রেমিকের ভূমিকায় অভিনয় করেন।
১৯৭২ সালের ‘বাক দ্য প্রিচার’ দিয়ে তার পরিচালনায় অভিষেক হয়। ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি মোট নয়টি ফিল্ম পরিচালনা করেছেন।
১৯৭৪ সালে পয়টিয়েকে নাইটহুডে ভূষিত করা হয় বাহামার নাগরিক হিসেবে।
তিনি পূর্বপুরুষদের দেশ বাহামার স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার ছিলেন। ১৯৭৩ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৯৭ সালে তিনি জাপানে বাহামার রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন।
পয়টিয়ে ১৯৫০ সালে হুয়ানিতা হার্ডিকে বিয়ে করেন, বিবাহবিচ্ছেদ ১৯৬৫তে। ১৯৭৬তে বিয়ে করেন কানাডীয় অভিনেত্রী জোয়েনা শিমকাসকে। তার ছয় কন্যার মধ্যে টামিয়া পয়টিয়ের একজন অভিনেত্রী।
সুত্র: বিবিসি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ