জনগণই ক্ষমতার উৎস আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ আয়ের সমৃদ্ধশালী

২০২২ সাল হবে অবকাঠামো উন্নয়নের মাইলফলকের বছর

দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা অনেকেরই সহ্য হচ্ছে না। এই অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে। মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিদেশে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। ভাষণে তিনি আরো বলেন, কেউ যাতে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেয়া যাবে না। জনগণই ক্ষমতার উৎস। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ^াস করি। তাই জনগণের সঙ্গেই আমাদের অবস্থান।

সরকারি প্রচারমাধ্যম বিটিভিসহ দেশের প্রায় সব টিভিতেই সরাসরি এই ভাষণ প্রচার করা হয়। ২৭ মিনিটের তিনি সরকারের উন্নয়ন, জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন, দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র, টিকা দেয়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না। এই ব্যাধি দূর করতে সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন। কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের উত্থানকে প্রতিহত করেছি।

উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সাল হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক বছর। জুন মাসেই আমরা উদ্বোধন করব বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতু। অনেক ষড়যন্ত্রের জাল আর প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে যাচ্ছি। এই সেতু জিডিপি-তে ১.২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে। বছরের শেষ নাগাদ আমরা উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অংশে মেট্রোরেল চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ অংশে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। আগামি অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে চালু হবে দেশের প্রথম টানেল। অন্যান্য বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে। এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট আগামী বছরের এপ্রিল নাগাদ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত ১৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর কাতারে সামিল হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান এবং আগামী দিনের সকল কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ। তারুণ্যের শক্তিই পারবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে।
করোনা মহামারির টিকা দেয়ার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সংকট এখনো কাটেনি। এর মধ্যেই আবার বিশে^র বিভিন্ন দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্রæত ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের এখনই সাবধান হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। যারা টিকা নেননি তাদের দ্রæত টিকা নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। এখন পর্যন্ত ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন প্রায় ৭ কোটি ৫৮ লাখ মানুষ আর দুই ডোজ পেয়েছেন ৫ কোটি ৩৫ লাখ ৮২ হাজার। গতমাস থেকে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। বর্তমানে আমাদের হাতে সাড়ে ৯ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা মজুদ আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আমরা দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর পর ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৩ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশ বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধন করেছে। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতা মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের সমৃদ্ধশালী দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বিদ্যুৎ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। ২০০৯ সালে আমাদের সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল ৪২০০ মেগাওয়াট। বর্তমানে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াটে। মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলাম। আমরা সে প্রতিশ্রæতি অক্ষরে অক্ষরে পূরণ করেছি। ২০০৯ সালে জাতীয় গ্রিডে ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো বর্তমানে যা ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে। গ্যাসের অব্যাহত চাহিদা মেটাতে ২০১৮ থেকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। সুখবর হচ্ছে: বঙ্গোপসাগরে যে গ্যাস হাইড্রেটের সন্ধান পাওয়া গেছে তার পরিমাণ ১৭ থেকে ১০৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।

শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যে বাংলাদেশ স্বয়ং-সম্পূর্ণ। বর্তমানে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে ৩য় স্থানে উন্নীত হয়েছে।
গ্রামের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতের সরকারগুলোর আমলে আমাদের গ্রামগুলো বরাবরই উন্নয়ন ভাবনার বাইরে ছিল। ২০১৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার করি। এখন দেশের প্রায় সকল গ্রামে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত পল্লি এলাকায় ৬৬ হাজার ৭৫৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৩ লাখ ৯৪ হাজার ব্রিজ-কার্লভার্ট, ১ হাজার ৭৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, ১ হাজার ২৫টি সাইক্লোন সেন্টার এবং ৩২৬টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৪৫৮ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ৪র্থ বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে। আরও ৮৮৭ কিলোমিটার মহাসড়ক চার এবং তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ঢাকায় বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬.৭৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সাল নাগাদ শেষ হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে যুগপোযোগী এবং আধুনিক গণপরিবহন হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমানে ১৩ হাজার ৩৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৭টি প্রকল্পের কাজ চলছে। ২০০৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ৪৫১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ এবং ১ হাজার ১৮১ কিলোমিটার রেলপথ পুনর্বাসন করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমানবহরে ১২টি নতুন অত্যাধুনিক বোয়িং এবং ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। সংযোজিত হয়েছে ৩টি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ।
জলবায়ুর পরিবর্তনের ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য এর আগে আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ শীর্ষক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এই পরিকল্পনার আওতায় ৬৪টি জেলায় প্রায় ৪ হাজার ৪৩৯ কিলোমিটার নদী, খাল ও জলাশয় খনন করা হচ্ছে।

সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সারা দেশে সাড়ে ১৮ হাজার কমু্যুনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র হতে গ্রামীণ নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দেয়া হয়।
শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তবে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। অন-লাইনে এবং স্কুল পর্যায়ের জন্য টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই বিতরণ শুরু হয়েছে। দেশের ৭ হাজার ৬২৪টি এমপিওভুক্ত মাদরাসায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬১ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে প্রতিমাসে ২৭৬ কোটি টাকা বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে। ২০২০ সালে নতুন করে ৪৯৯টি মাদরাসা এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। ১ হাজার ৫১৯টি এবতেদায়ী মাদরাসার ৪ হাজার ৫২৯ জন শিক্ষককে ত্রৈমাসিক ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হচ্ছে। দাওয়ারে হাদিস পর্যায়কে মাস্টার্স সমমান দেয়া হয়েছে। সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।

তথ্য প্রযুক্তিতে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ হিসেবে দেশের ১৮ হাজার ৪৩৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৩ হাজার ৮০০ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। বিশে^র নবম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গত মাসে ৫জি নেটওয়ার্কের যুগে প্রবেশ করেছে। করোনাভাইরাসের সময় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। অন-লাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং লেনদেন সুবিধা গ্রহণ করে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছেন। আমাদের প্রায় ৬ লাখ তরুণ-তরুণী আজ ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে নিজেদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর মাধ্যমে দেশের সবগুলো টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার ছাড়াও প্রত্যন্ত ৩১টি দ্বীপে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কয়েকটি ব্যাংক এবং সেনাবাহিনী স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর সেবা গ্রহণ করছে। ইন্টারনেট বিপ্লবের পর বিশ^ এখন ডিজিটাল প্রযুক্তির চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে, তেমনি খুলে দিবে সম্ভাবনার দ্বার। তিনি বলেন, মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতক খাস জমি বরাদ্দ দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় বস্তিবাসীদের জন্য মিরপুরে ১০ হাজার ফ্লাট নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গত বছরের মাঝামাঝি ৩০০ পরিবারের মধ্যে ফ্লাট বিতরণ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- জাতির পিতা প্রণীত বৈদেশিক নীতির এই মূলমন্ত্রকে পাথেয় করে আমরা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে এই মুহূর্তে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ দেশে ফেরৎ পাঠানোর সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে তাঁদের কষ্ট লাঘবের জন্য ভাষাণচরে ১ লাখ মানুষের বসবাসোপযোগী উন্নতমানের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।