পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি আলিয়া মাদরাসার ছাত্রাবাসের (হল) জায়গায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো তারা হল গেটে অবস্থান নিয়ে ভবন নির্মানের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মাদরাসা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে গতকাল পুনরায় শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দেয়ার জন্য মাদরাসা প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জুবায়ের জানান, গতকাল আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল, হল সুপার, সহকারী সুপারসহ শিক্ষকরা হলের সামনে এসে শিক্ষার্থীদেরকে হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এসময় হলের গেটে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা ভেতর থেকে মূল গেটে তালা দিয়ে ভেতরে অবস্থান নেন।
তিনি বলেন, আমরা হল খুলে দেয়াসহ যে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছি তা মেনে না নেয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। জুবায়ের আরও জানান, আন্দোলন চলাকালে নাঈমুল ইসলাম মাইফুল এবং পরীক্ষার্থী পারভেজ গুরুতর অসুস্থ হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া নোটিশ প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করেছে। সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে অযৌক্তিকভাবে পূর্ব পরিকল্পিত নীল নকশার ছক একে শিক্ষার্থীদেরকে হল ছাড়া করার পাঁয়তারা করছে মাদরাসা প্রশাসন ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। যা সম্পূর্ণ অমানবিক ও অগ্রহণীয় সিদ্ধান্ত। এমন অবস্থায় হল ত্যাগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে যখন হলে অবস্থানরত অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলমান।
তারা বলেন, মাদরাসা প্রশাসন পুলিশ প্রসাশনকে ছাত্রদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এতে কোন জান মালের ক্ষয়ক্ষতি হলে এর সম্পূর্ণ দায়ভার মাদরাসা প্রশাসনের উপর বর্তাবে। ছাত্ররা তাদের শান্তিপূর্ণ অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ দেশের আপামর জনগোষ্ঠির সহযোগিতা চেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা: কোন অবস্থাতাতেই আবাসিক হল বন্ধ করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন করতে হবে। হল প্রাঙ্গনে মাদরাসা অধিদপ্তর নির্মান করা যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে কোন ধরনের বাণিজ্য করা চলবে না। শিক্ষার্থীদের উপর আরোপিত সকল প্রকার হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দৈনিক ইনকিলাবে “হঠাৎ করেই হল বন্ধের ঘোষণা” শিরোনামে একটি সংবা প্রদাশিত হয়। ওই সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সরকারি আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল প্রফেসর মো. আলমগীর রহমান। প্রতিবাদে তিনি বলেন, যে সংবাদ ছাপানো হয় তা সঠিক নয়। সংবাদে প্রফেসর মো. আলমগীর রহমানকে উদ্ধৃতি করে যে তথ্য প্রকাশ করা হয় তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: ওই সংবাদে শিক্ষার্থীরা ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে যে অভিযোগ করেছিলেন সেটিই তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে প্রিন্সিপালের পৃথক কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীরা ঘটনা এবং প্রশাসনের সাথে তাদের যে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেটিই উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য প্রিন্সিপালকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি সেটিও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
তবে গতকাল তিনি ইনকিলাবকে বলেন, আলিয়া মাদরাসার যে স্থানটিতে অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণের কথা হচ্ছে সেটি এর আগে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা পরিদর্শন করে গেছেন। এটি মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কোন বিষয় না।
উল্লেখ্য, মাদরাসা শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার আল্লামা কাশগরী (রহ.) হলের সুপার ও সহকারী সুপারের বাসভবন এবং আল্লামা কাশগরী ও ইব্রাহীম হলের প্রবেশ গেইট অপসারণ করে সে স্থানে ভবন নির্মাণ করতে চায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা জানায়, ভবন নির্মাণের অপচেষ্টা শুরুর পর থেকেই তারা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন, এজন্য অধিদপ্তরের সচিব তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন, একটি মামলাও করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।