নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
১২তম সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস শূটিং ডিসপ্লিনের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ব্যক্তিগত ইভেন্টকে ঘিরে অনেক আশা ছিলো লাল-সবুজদের। শূটিংয়ের এই ইভেন্টে বাংলাদেশ সোনা জিতবে এটাই প্রত্যাশা ছিলো সবার। কিন্তু না হলো না প্রত্যাশাপূরণ। যাকে ঘিরে দেশের শূটিং অনুরাগীদের প্রত্যাশার পারদটা ছিলো উঁচুতে সেই আবদুল্লাহ হেল বাকীই ব্যর্থ হয়েছেন। তবে উঠে এসেছেন শোভন চৌধুরী। অল্পের জন্য তার স্বর্ণপদক হাতছাড়া হয়েছে। ভারতীয় অলিম্পিয়ান শুটার চেইন সিং তাকে পেছনে ফেলে স্বর্ণ জিতে নিলে শোভনের ভাগ্যে জুটে রুপা। ২০ শটের মধ্যে ১৭টিতে জ্বলজ্বল করলেও একটিতে চেইন সিংয়ের পাশাপাশি থাকলেও শেষ দু’শটে ভালো করতে পারেননি শোভন। ফলে যা হওয়ার তাই হলো। হাতছাড়া হয়ে গেলো স্বর্ণপদক। সোনা জয়ের কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত রৌপ্যপদক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো শোভনকে। তবে আশার কথা বাংলাদেশের এই কৃতি শুটার পেছনে ফেলেছেন আরেক ভারতীয় অলিম্পিয়ান শুটার গগন নারায়ণকে।
গতকাল গৌহাটির কাহিলীপাড়া শূটিং রেঞ্জে এসএ গেমস ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে চেইন সিংয়ের কাছে ১ স্কোরে হারেন শোভন। তার স্কোর ছিল ২০৩.৬। স্বর্ণজয়ী চেইনের ২০৪.৬ এবং ব্রোঞ্জজয়ী গগনের ১৮২। সিরাজগঞ্জে বাবার রাইফেল দিয়ে পাখি শিকার করতেন। নীল আকাশের পাখি শিকারী যে এতবড় শিকারী হয়ে যাবেন তা হয়তো নিজেও ভাবতে পারেননি শোভন চৌধুরী।
অলিম্পিয়ান ভারতীয় গগন নারায়ন, চেইন সিংদের এবং পাকিস্তানের ইমরান হাসান খানদের মতো তিন অলিম্পিয়ানের সঙ্গে বুক চিতিয়ে লড়েছেন বাংলাদেশের তরুণ শুটার শোভন চৌধুরী। কাল পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের ইভেন্টে একেক সময় মনে হয়েছে গৌহাটির কাহিলীপাড়াটি শোভনের জন্য ইতিহাসই হয়ে যেতে পারে। অলিম্পিয়ান গগন এবং চেইনকে পেছনে ফেলে বারবারই শুটঅপে শীর্ষে ছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য শোভনের। শেষ শুটঅফের আগেরটিতে আর মনসযোগ ধরে রাখতে পারেননি। ফলে যা হওয়ার তাই হলো স্বর্ণালী প্রত্যাশা ধরা দিল রুপালী হয়ে। আর কমনওয়েলথ গেমসে রুপা জয়ী আবদুল্লাহেল বাকী পঞ্চমস্থানে থেকেই তার ইভেন্ট শেষ করেছেন।
কাহিলীপাড়ার শূটিং রেঞ্জের তৃতীয় তলা। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের চ‚ড়ান্ত ইভেন্ট শুরু। ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের শুটারদের উৎসাহ দিতে প্রায় দু’শতাধিক সমর্থক হাজির। তবে প্রতিদ্ব›িদ্বতাটা হচ্ছিল বাংলাদেশের শোভন ও বাকি এবং ভারতের গগন ও চেইনের মধ্যেই। বর্ণিল স্বর্ণালী আভা জেগেছিল ক্ষণে ক্ষণেই। স্বর্ণালী সেই ঝিলিক বারবার দেখাচ্ছিলেন। একেক শুটঅফে বাকি এগিয়ে যান তো গগন পিছিয়ে যান। আবার শোভন। দীর্ঘক্ষণ সময় ভারতের চেইন সিং ও গগনকে পেছনে ফেলে লিডার বোর্ডের শীর্ষেই ছিলেন শোভন। এক সময় মনে হচ্ছিল স্বর্ণপদক জয়টি শোভনের জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু কি হলো। শেষ শুটঅফের আগেরটিতেই মনসংযোগের বাইরে চলে গেলেন। সেই সঙ্গে হারিয়ে ফেললেন স্বর্ণপদকটি। তারপরও লাল সবুজের সমর্থকদের বাহবার কমতি ছিল না তরুণ শুটার শোভনের প্রতি।
শূটিং শেষে নিজের কিটস ছাড়তে ছাড়তেই শোভন বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ২০২০ সালে জাপানে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিক গেমস। তবে তার আগে অস্ট্রেলিয়ার গোলকোস্টে অনুষ্ঠিতব্য কমনওয়েলথ গেমসেও পদক জিততে চাই।’ নিজের সাফল্যে কথা বলতে গিয়ে শোভন জানান, ‘স্বর্ণপদকের আশাই করেছিলাম। প্রত্যেক শুটারেরই সেই আশা থাকে স্বর্ণপদকের। তবে ফেডারেশন আমাদের প্রচুর সাপোর্ট দিয়েছে। বিশেষ করে ডেনমার্কের কোচ ক্লাউস অনেক সহযোগিতা করেছেন। কোরিয়ান কোচের সহযোগিতাও ভুলার মতো নয়।’ ২০০৪ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন শোভন। ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরী করেন। ২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমসে দলীয় ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে স্বর্ণ এং ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জপদক জেতেন শোভন। এছাড়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ শূটিংয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। এরপর সাউথ এশিয়ান গেমসে এই রুপা জয়টিই তার ক্যারিয়ারের বড় অর্জন। তবে আরও ভালো করতে হলে নিয়মিতভাবে শুটারদের অনুশীলনের মধ্যে রাখতে হবে বলে মনে করেন শোভন। বাকী নয়, এবার শাকিল এবং শোভনদের মতো নতুন শুটারদের নিয়ে বাংলাদেশের শূটিংয়ে নবযুগের সূচনা হল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।