পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুর্নীতিকে ক্যান্সারের সঙ্গে তুলনা করে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, দুর্নীতি ক্যান্সারের মতো। আঙুলে ক্যান্সার হলে যেমন কেটে ফেলতে হয়, দুর্নীতিও তেমন। দুর্নীতির বিষয়ে কোনো আপস নয়।
গতকাল রোববার আপিল বিভাগের ১ নম্বর এজলাস কক্ষে সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, বিচার কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই অভিপ্রায় জানাতে চাই যে বিচার বিভাগে কোনো দুষ্টক্ষতকে আমরা ন্যূনতম প্রশ্রয় দেব না। দুর্নীতি একটি ক্যানসার। কোনো আঙুলে যদি ক্যানসার হয়, সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে, আঙুলটি কেটে ফেলা। দুর্নীতির ব্যাপারে আমি কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। চিহ্নিত হলে সঙ্গে সঙ্গে স্টাফ বা অফিসার যে-ই হোক না কেন, সাসপেন্ড করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সব শাখার অস্বচ্ছতা, অনিয়ম ও অযোগ্যতাকে নির্মূল করতে সবাইকে পাশে পাব এই আশা ব্যক্ত করছি।
সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-সংক্রান্ত অভিযোগগুলো সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য একটি প্রিলিমিনারি ইনকোয়ারি কমিটি গঠনের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রায় ১৮ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ১ হাজার ৯০০ জন বিচারকের কাঁধে যে বিপুল পরিমাণ মামলা অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে, তা বিচার বিভাগের জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়। কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীর প্রতি সমবেদনা ও ভালোবাসা দিয়ে অধিক পরিমাণ মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্য নির্ধারণে সচেষ্ট হই। এটিই হবে বিচার বিভাগের জন্য মামলাজট থেকে মুক্তির যুদ্ধ।
বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা-গতিশীলতা আনা ও অনিয়ম অনুসন্ধানে পৃথক কমিটি গঠন করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সব অধস্তন আদালতে মামলাজট নিরসন ও বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা-গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে আটটি বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে একটি করে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। প্রতি মাসে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতিবেদন গ্রহণ করা হবে। পুরোনো মামলাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নিষ্পত্তির বিষয়ে সুপারভাইজ ও মনিটরিং করা হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বার ও বেঞ্চ হলো একটি পাখির দু’টি ডানা। আর জুডিশিয়ারি হলো সমস্ত দেহ। পাখা দু’টি সমানভাবে শক্তিশালী করার মাধ্যমে এই দেশের সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যেতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। বারের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই কোর্ট পরিচালনা করা সম্ভব নয়। বিচার বিভাগের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে যত দূর সম্ভব সমাধানে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, বিচার বিভাগে অনেক সমস্যা থাকা সত্তে¡ও আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করলে সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারব ইনশাআল্লাহ। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের একটি অঙ্গ দুর্বল বা সমস্যাগ্রস্ত হলে রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারে না। এ কারণে আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রের অপর দু’টি বিভাগ তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান ও কার্যকর ভ‚মিকা পালন করবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, মনে রাখতে হবে যে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেয়া জনগণের প্রতি দয়া নয় বরং এটি জনগণের অধিকার। আমি এই অধিকারকে কেবল সাংবিধানিক অধিকার বলে সাব্যস্ত করতে রাজি নই। ন্যায় বিচারের সৌকর্য এবং আইনের রাজকীয়তা প্রকৃতপক্ষে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন বটে। সে কারণে দেশের সকল বিচারককে নিরপেক্ষতার সাথে, নির্মোহ হয়ে নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও প্রধান বিচারপতি এই কার্যক্রমে বিচারকদের পাশে থাকবে। আইনজীরাও বিচার বিভাগের এই ঐতিহাসিক কর্মযজ্ঞে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতিকে স্বাগত জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দস কাজল লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবী, আইন কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।