Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পশ্চাৎপসরণের সময় অসংখ্য বন্দিকে হত্যার অভিযোগ আইএসের বিরুদ্ধে

প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকের মসুল শহর থেকে এক হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে ইরাকের বিশেষ বাহিনী। আন্তর্জাতিক জেহাদি সংগঠন আইএসের দখলে থাকা মসুল শহর পনুর্দখল করার লক্ষ্যে ইরাকি বাহিনীর সঙ্গে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে প্রাণনাশের আশঙ্কায় তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। বাহিনীটির মেজর জেনারেল হায়দার ফাধিলের বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। হায়দার জানান, মসুলের তব জাওয়া এবং এর আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে খাজের এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, ১৭ অক্টোবর থেকে মসুলে শুরু হওয়া আইএসের সঙ্গে ইরাকি বাহিনীর লাড়াইকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত প্রায় নয় হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এই সংঘর্ষে ১০ লক্ষ মানুস গৃহহীন হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। জেহাদিদের হাত থেকে শহরের পূর্ব দিক খুব দ্রুত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সালাম আল-ওবাইদি নামে ইরাকি সরকারি বাহিনীর এক কর্মকর্তা। এদিকে, মসুলের দিকে অগ্রসরমান ইরাকি বাহিনীর কারণে নিকটবর্তী যেসব গ্রাম থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জেহাদিদের সরে যেতে হয়েছে সে সব গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া বহু বন্দিকে হত্যা করেছে জেহাদি গোষ্ঠীটি। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হতভাগ্য এসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে গত বুধবার জানিয়েছেন ইরাকি কর্মকর্তারা। যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই ইরাকি পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। তারা মসুলে দক্ষিণে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বসবাস করতেন। অপরদিকে, আন্তর্জাতিক বেশকয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মসুলের জনগণের প্রতি আইএস জেহাদিদের অত্যাচার দিন-দিন বেড়েই চলছে। তারা সেখানে হত্যাকা- চালাচ্ছে। এর আগে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল নিজেদের রক্ষার্থে সেখানকার নিরীহ মানুষদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে আইএস জেহাদিরা। মসুলের পূর্ব দিকে কুর্দি অঞ্চলের রাজধানী ইরবিলে অবস্থানরত আব্দুল রহমান জানান, জেহাদিরা বলপূর্বক পরিবারসহ তাদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে এবং মসুলের ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হাম্মাম আল আলিল টাউনে নিয়ে যায়, সেখানেই তাদের হত্যা করা হয়। ওই এলাকার গ্রামগুলোর অন্যান্য বাসিন্দা ও ওই এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত লোকজনের বরাতে তিনি জানিয়েছেন, সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, অন্যান্যদের, নির্দিভাবে যারা মসুলে আছেন, সন্ত্রস্ত করতেই এসব করা হয়েছে। আইএস যেসব গ্রাম ছেড়ে গেছে সেগুলোর প্রত্যেকটি থেকেই পরিবারগুলোকে নিয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পৃথকভাবে ইরবিলের প্রভাবশালী কুর্দি রাজনীতিবিদ হোশিয়ার জেবারি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিন দিন আগে মসুলের দক্ষিণে ৬৫ জনের মৃত্যুদ- কার্যকর করেছে আইএস। ইরাকের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেবারি আরো জানান, এক সপ্তাহ আগে আল হুদদ ও আল লাজাগা গ্রামে অগ্রসরমান সেনাবাহিনীর সমর্থনে আইএসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দেয়, এরপর থেকেই এই দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের জিম্মি করতে শুরু করে আইএস।
গ্রাম দুটির ২০ জনকে মৃত্যুদ- দিয়ে তা কার্যকর করে জেহাদিরা। তাদের পরিবারের সদস্যদের হাম্মাম আল আলিল অথবা মসুলে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল মঙ্গলবার জানিয়েছেন, আইএস গত সপ্তাহে মসুলের আশপাশে বহু লোককে হত্যা করেছে বলে জেনেছেন তারা। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার মসুলের দক্ষিণে টুলোউল নাসের গ্রামে ৭০ জন বেসামরিকের মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া গত রোববার মসুলের বাইরে আইএসের জেহাদিরা ৫০ জন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে এমন খবর পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কোলভিল। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পশ্চাৎপসরণের সময় অসংখ্য বন্দিকে হত্যার অভিযোগ আইএসের বিরুদ্ধে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ