মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কার্যকর হচ্ছে রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি)। দীর্ঘ এক দশকের আলোচনার পর বাস্তবায়নের মুখ দেখছে বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটি। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও এশিয়া প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাধা দূর করবে। সহজতর হবে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। ফলে এ অঞ্চলের বাণিজ্যে উল্লম্ফনের আশা দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের ভাষ্য, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিক জায়ান্টরা। জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার ১০ দেশ ছাড়াও এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। জোটটির অর্থনীতির আয়তন মোট জিডিপির ৩০ শতাংশ। অংকের হিসাবে এটি ২৬ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ চুক্তি বিশ্বের সবচেয়ে বড় অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা ও মেক্সিকোর মধ্যাকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিশ্ব বাণিজ্যের ২৮ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার প্রায় ১৮ শতাংশের চেয়েও আরসিইপির পরিধি বড়। অর্থনীতিবিদ রল্ফ ল্যাংহ্যামার বলেন, আরসিইপি অগভীর তবে অনেক বড় চুক্তি। কারণ এটি বিশ্বের বেশির ভাগ শিল্পোৎপাদনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এটি এশিয়াকে বিশাল আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য ধরার সুযোগ করে দেবে। যেমনটা বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো উপভোগ করে। সুতরাং এ অঞ্চলের বাণিজ্যে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা দেবে। আরসিইপির অধীনে ব্লকের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ বাণিজ্য শুল্ক বাদ পড়ছে। ২০১৯ সালে দেশগুলোর মধ্যাকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার। শুল্ক ছাড় এটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। চুক্তিটি কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ত্বরান্বিত করবে বলেও আশা করছেন বিশ্লেষকরা। জোটটির মধ্যে বাণিজ্য, মেধাস্বত্ব, ই-কমার্স ও প্রতিযোগিতা নিয়ে সাধারণ নিয়মগুলোও নির্ধারণ করা হচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, এ চুক্তি বিশ্ব বাণিজ্যের ‘মধ্যাকর্ষণ কেন্দ্রে’ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অবস্থান শক্তিশালী করবে। চুক্তিটিতে ভারতেরও যোগ দেয়ার কথা ছিল। তবে সস্তা চীনা পণ্য ভারতীয় বাজারে ছেয়ে যাবে, এমন আশঙ্কায় গত বছর দেশটি এ আলোচনা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। চুক্তিটি নিয়ে সা¤প্রতিক বিশ্লেষণে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলন (আঙ্কটাড) জানিয়েছে, আরসিইপি আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যে ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার যুক্ত করবে। তবে এ চুক্তির সুবিধা অসম হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কিয়েল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ল্যাংহ্যামার বলেন, স্বাক্ষরকারী ১৫ দেশের মধ্যে এ চুক্তির সুবিধাগুলো অসম হবে। এ অঞ্চলের বড় অর্থনীতি হিসেবে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি। এ চুক্তির অধীনে একদিকে এশিয়ার বড় অর্থনীতিগুলো সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। অন্যদিকে এটি ছোট দেশগুলোকে অসুবিধায় ফেলে দিতে পারে বলে সতর্ক করেন ল্যাংহ্যামার। তিনি বলেন, এর কারণ হলো অনেক শিল্প এ চুক্তির বাইরে থেকে গেছে। যেমন চীনের প্রতিবেশীরা চালের চালান বা সস্তা শ্রম রফতানির ওপর নির্ভরশীল হলেও পরিষেবা কিংবা কৃষি বাণিজ্য এ চুক্তির বাইরে থেকে গেছে। কম্বোডিয়া, লাওস ও মিয়ানমারের মতো এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলো এতদিন আন্তঃআশিয়ান বাণিজ্য চুক্তি থেকে উপকৃত হয়েছে। বর্তমানে আরসিইপি চুক্তির কারণে সেই বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।