Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আত্মতুষ্টির কিছুই দেখছেন না তামীম

প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে না জানি কতটা দূরুহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়, সে শঙ্কায় চট্টগ্রাম টেস্টে অকল্পনীয় কিছু’র আশা করেননি হেড কোচ হাতুরুসিংহে। ইংল্যান্ডের ২০ উইকেট নেয়ার মতো বোলিং কম্বিনেশন তার হাতে মজুদ নেই বলেও মিডিয়াকে বলেছিলেন হাতুরুসিংহে। অথচ, প্রতীক্ষিত প্রত্যাবর্তন টেস্টেই ইংল্যান্ডকে প্রচ- ঝাঁকুনি দিয়েছে বাংলাদেশ দলÑ জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে হেরে গেছে বাংলাদেশ ২২ রানে। রানের ব্যবধানে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে কম রানের হার। টেস্টে এই লড়াকু ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে যখন বিশ্ব মিডিয়ার স্তুতি, তখন এ নিয়ে আত্মতুষ্টির কিছুই দেখছেন না তামীমÑ ‘গণমাধ্যম  বলছে, আমরা খুব ভালো খেলেছি। দিন শেষে আমরা কিন্তু  ম্যাচটা হেরেছি। আজ থেকে পাঁচ বছর পর রেকর্ডে লেখা থাকবে আমরা হেরেছি। ভালো খেলেছি ওটা কোথাও লেখা থাকবে না। তাই এতে  যদি খুশি হয়ে যাই, তাহলে আমরা কোনো সময় উন্নতি করতে পারবো না। তাই আমাদের কাজ হচ্ছে পরবর্তী ম্যাচের দিকে মনোযোগ দেয়া।’
তবে লম্বা বিরতির পর চট্টগ্রামে দারুণ একটি টেস্ট ম্যাচ উপহার দেয়ায় ঢাকা টেস্টে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, জয়ের চেষ্টা থাকবে ক্রিকেটারদের, এ ধারণাই পোষণ করছেন টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক তামীম ইশবালÑ ‘আমরা একটা ম্যাচ হেরেছি, তার জন্য খারাপ লাগার অনুভূতিটা আমাদের মধ্যে রয়েছে। ওই টেস্টে কিছু ইতিবাচক জিনিস ছিল। আমরা পাঁচ দিনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। যদি ম্যাচ জিততে পারতাম, তাহলে অন্যরকম অনুভূতি থাকত। এখন  সামনে যে ম্যাচটি আছে, সেই  ম্যাচটা জেতার চেস্টা থাকবে। আগের চেয়ে ভালো প্রস্তুত থাকব, আত্মবিশ্বাসীও থাকব। পরবর্তী  টেস্টেও আমাদের এই একই পরিকল্পনা থাকবে। প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত নিজেদের কাজটুকু ভালোভাবে করতে চাই। যদি শেষ পর্যন্ত জিততে না পারি, তখন না হয় ড্র’র চিন্তা করব।’
লম্বা বিরতির পর এতো ভালো টেস্ট খেলল কি করে? এটাই প্রশ্ন। তবে চট্টগ্রাম টেস্টের পারফরমেন্সকে কোন ম্যাজিক মনে করছেন না তামীমÑ‘আমরা আগে থেকেই  জানতাম যে,  ১০- ১৫ মাসের একটা গ্যাপ থাকবে। তবে ব্যাটসম্যানরা টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডের পর এসে  নিজেদের মানিয়ে নিয়ে টেস্টের মতো ব্যাটিং করেছে।’  চট্টগ্রাম টেস্টের ছন্দ ধরে রেখে দেশকে দারুণ কিছু উপহার দেয়ার স্বপ্ন দেখছেন তামীমÑ ‘পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে আমাদের কিন্তু চার-পাঁচটা টেস্ট  আছে। চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে ভালো একটা ছন্দ পেয়েছি, এই  ছন্দটা যেন ধরে রাখতে পারি, সে প্রত্যাশা করছি।’
চতুর্থ ইনিংসে তামীমের ৯ রানকে কোচ হাতুরুসিংহে ফিফটির মতো দেখছেন, মিডিয়াকে ওই ছোট্ট ইনিংসের প্রশংসা করেছেন। চট্টগ্রামের মতো কন্ডিশন মিরপুরে পেলে, সেট হয়ে বড় ইনিংস খেলার লক্ষ্যটা ধার্য করেছেন তামীমÑ ‘ওখানে আসলে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল। ৩০ রানের ইনিংসও ৬০-৭০ রানের ইনিংসের সমান ছিল চট্টগ্রামে। যদি ৩০-৪০ রানকে আরো ২০-৩০ যোগ করতে পারতাম, তাহলে আমাদের জন্য টেস্ট ম্যাচটা আর একটু সহজ হয়ে যেত। এখানে যদি কন্ডিশনটা এমন হয় তাহলে আমাদের সবার মিলে সে চেষ্টা করা উচিত। আর যদি কন্ডিশন ব্যাটিং সহায়ক হয় তাহলে যে সেট হবে তার পক্ষে  যত বড় ইনিংস খেলা সম্ভব, সে চেষ্টা থাকা উচিত।’
হোমে হোম এডভানটেজ পেতে পছন্দের উইকেট উপহার পেয়েছে তামীমরা চট্টগ্রামে। মিরপুরেও পছন্দের উইকেটই চান তামীমÑ ‘কেমন উইকেট হবে, সিদ্ধান্তটা নিবে টিম ম্যানেজমেন্ট। আশা করছি আমাদের জন্য ভালো, দলের সঙ্গে বেশি মানানসই, তেমন  উইকেট হবে। আমরা ইংল্যান্ডে গিয়ে স্পিনিং উইকেট আশা করি না। আমরা জানি ওখানে সিমিং কন্ডিশন থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশ বা ভারতে খেলা হলেই উইকেট নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। আমার মনে হয়, হোম অ্যাডভান্টেজ থাকা উচিত। চট্টগ্রামের উইকেট পুরোপুরি  আমাদের অনুকূলে ছিল। যেমন উইকেট চেয়েছিলাম তা পেয়েও আমরা ম্যাচ হেরেছি। তাই পছন্দের উইকেট পেয়ে সে উইকেট থেকে সুবিধা নিতে হবে। আমরা  কিভাবে কম ভুল করবো, উইকেট অনুযায়ী আমরা কীভাবে খেলব, সেখানেই  ফোকাস বেশি থাকা উচিত।  এমনো তো হতে পারে স্পিনিং উইকেট বানানোর পর  দেখা গেল একটা বলও ঘুরছে না। ’
মিরপুরের উইকেট থেকে পেস বোলাররা বাড়তি সহায়তা পায়। তার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশ দল। এমনটাই জানিয়েছেন তামীমÑ ‘আমি নিশ্চিত, মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, লেট মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আর যদি টপ অর্ডাররা যাতে বড় ইনিংস খেলে, আমি নিশ্চিত সেভাবেই সবাই প্রস্তুত হচ্ছে। আমরা অনুশীলনও করছি ওভাবে। ’ চট্টগ্রাম টেস্টে ২৭টি ডিআরএস ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। ঢাকা টেস্টেও ডিআরএস’র মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশ দলকে। তাই ডিআরএস নিয়ে চিন্তিত নন তামীমÑ‘এটা একটা আজব জিনিস। এটা আমি খুব একটা  বুঝি না। কিছু  কিছু সময় আমাদের পক্ষে যাবে,  কখনো কখনো ওদের পক্ষে যাবে।  এটা অনেকটা ভাগ্যের উপরও নির্ভর করে। আমি মনে করলাম এটা ক্লোজ আউট, কিন্তু আম্পায়ার মনে করল অন্যটা। তাই এ ব্যাপারটি নিয়ে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মতুষ্টির কিছুই দেখছেন না তামীম
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ