পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দফায় দফায় বাড়ছে সহিংসতা। সেইসাথে বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। এ বছর জুন থেকে শুরু হওয়া ইউপি নির্বাচনের এরই মধ্যে তৃতীয় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতায় নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আর ডিসেম্বরে গতকাল পর্যন্ত আরও ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ৪র্থ ধাপের নির্বাচন শুরুর আগের দিন সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের মেম্বার পদপ্রার্থী সাইদুল ইসলাম প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় নিহত হন। এতে গতকাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে সারা দেশে অন্তত ৯৭ জন নিহত হয়েছেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত ইউপি, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৬৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তাতে আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৮ জন এবং নিহত হয়েছেন ৮৫ জন। নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪১ জন, বিএনপির ২ জন, সাধারণ মানুষ ২২ জন, পুলিশের গুলিতে ১৫ জন এবং ১ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। বেশিরভাগ সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের নির্বাচনে নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তী সহিংসতায় ১৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। ডেমোক্র্যাসি ওয়াচের তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৬০ জন। এবারের নির্বাচনে প্রথম তৃতীয় ধাপেই মৃত্যু সংখ্যা ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ হচ্ছে ৪র্থ ধাপের ভোট। সামনে আরও দুই ধাপ নির্বাচন বাকি।
বিশেষজ্ঞরা চলমান ইউপি নির্বাচনকে অর্থহীন ও তামাশা বলে আখ্যায়িত করছেন। সেসাথে সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানীর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, ইউপি নির্বাচন তামাশায় পরিণত হয়েছে। কেননা, এ নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্ব›িদ্বতা নেই। বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ার হিড়িক চলছে। এ ধরনের প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন নির্বাচনকে নির্বাচন বলা যায় না। এ অর্থহীন নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে হানাহানি মারামারিতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে। এতে নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বাড়ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগের বিষয়।
ধাপে ধাপে নেওয়া এ নির্বাচনে দফায় দফায় সংঘর্ষে বাড়ছে প্রাণহানি। প্রথম ধাপের চেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে। দ্বিতীয় ধাপে শুধু ভোটের দিনই সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৭ জন। ভোট-পরবর্তী সময়ে গাইবান্ধা, রাজবাড়ী, ঢাকার ধামরাই ও যশোরের শার্শায় আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথমধাপের নির্বাচনী সহিংসতায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় আরও ২ জন মারা যান। তৃতীয় ধাপে সহিংসতায় একজন বিজিবি সদস্যসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় বাকিরা নিহত হয়েছেন। ৪র্থ ধাপের নির্বাচন শুরুর আগেই সহিংস ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নির্বাচনী সহিংসতায় ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এর মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে আজ শুরু হচ্ছে ৪র্থ ধাপের ৮৪০টি ইউনিয়নে ভোট। নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও মারামারির ঘটনা ঘটছে। বিরোধীদল বিএনপি ভোট বর্জন করায় সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। ৪র্থ ধাপের নির্বাচনে শুধু চলতি মাসেই দুই জেলায় সহিংসতায় মারা গেছেন চারজন। আর আহতের সংখ্যা অর্ধশত। এছাড়া গতকাল সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউপির মেম্বার প্রার্থী সাইদুল ইসলাম সহিংস ঘটনায় গতকাল মারা যান।
ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে সিধলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেখ মো. শামছুদ্দিনকে হুমকি এবং তার বাড়ির সামনে গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নৌকার প্রার্থীর মোটরসাইকেল বহরে হামলা চালিয়ে ৯টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর বাড়ি এবং তার কর্মী-সমর্থকদের দোকান ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অর্জুন সেনের তিনটি নির্বাচনী অফিসসহ একটি মন্দিরে ২৪ ডিসেম্বর আগুন দেওয়া হয়েছে। নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কে এম আলাউদ্দিন ও স্বতন্ত্র মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী জসিম উদ্দিনের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়ায় ২৪ ডিসেম্বর দুই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।