মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন সিনিয়র নেতা খাজার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১ হাজার কোটি রুপির মানহানির মামলায় তার বক্তব্য রেকর্ড করতে তার অফিস থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা আদালতে হাজির হয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শুক্রবার বলেন যে, তার জীবন ছিল যেন একটি ‘খোলা বই’।
প্রধানমন্ত্রী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আদনানের কাছে শওকত খানম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট (এসকেএমটি) তহবিলে অ-স্বচ্ছতা, অর্থ পাচার এবং বেনামী কোম্পানির ব্যবহারের অভিযোগের জন্য পিএমএল-এন নেতার বিরুদ্ধে একটি হলফনামা জমা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নথিতে আদালতকে জানিয়েছেন যে, ২০১২ সালের ১ আগস্ট আসিফ পাঞ্জাব হাউসে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় অভিযোগ করেছিলেন যে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী ইমরান) অর্থ পাচারে জড়িত ছিলেন বা এসকেএমটির মাধ্যমে কমিশন গ্রহণের অনুমোদন দিয়েছিলেন। পরে একই দিন সন্ধ্যায় একটি বেসরকারি টিভি অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেন, আসিফ আরো অভিযোগ করেছেন যে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এমন একজন ব্যক্তি যিনি দাতব্য অর্থ নিয়ে সত্তা [বাজি] খেলেন। প্রধানমন্ত্রী হলফনামায় বলেছেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার জীবন ছিল একটি ‘খোলা বই’। ‘পাকিস্তানের জনগণ আমাকে একজন মানুষ হিসাবে ভালোবাসেন এবং প্রশংসা করেন এবং একজন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সুপারস্টার হিসাবে আমার প্রথম জীবনে যেকোন ব্যক্তিগত অবমাননার সম্মুখীন হওয়া সত্তে¡ও আমার আর্থিক সততায় বিশ্বাস করেন’।
প্রধানমন্ত্রী আদালতকে জানিয়েছেন যে, আসিফের বিবৃতি ‘মিথ্যা এবং আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য তৈরি ও প্রকাশ করা হয়। এসব বিবৃতি আমাকে অন্যায় সমালোচনার শিকার করেছে’। বিবাদীর মানহানিকর স্বর এবং শব্দ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, পিএমএল-এন নেতা অভিযোগ করেন যে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী ইমরান) এসকেএমটি বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে জাকাত তহবিল থেকে বিনিয়োগ করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী ছিলেন। বেনামি কোম্পানির মাধ্যমে অস্বচ্ছ পদ্ধতিতে অস্বচ্ছ বিনিয়োগ সক্ষম করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
হলফনামায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, আসিফ দাবি করেছেন যে, তিনি (ইমরান) কুখ্যাত ‘ডবল শাহ’ এর চেয়েও খারাপ আচরণ করেছেন, যিনি বিপুল সংখ্যক লোককে প্রতারণা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান যোগ করেছেন যে, ডাবল শাহ একজন কুখ্যাত প্রতারকের উপনাম ছিল, যার মামলা কয়েক বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল এবং যে মিথ্যা উপস্থাপনের ভিত্তিতে তহবিল উত্তোলন করে হাজার হাজার মানুষকে তাদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় থেকে বঞ্চিত করেছিল। ‘আমাকে উল্লিখিত ডাবল শাহের সাথে তুলনা করা হল সবচেয়ে খারাপ মানহানিকর যেটা আসামী [আসিফ] আমার জন্য করেছে’, প্রধানমন্ত্রী বলেন।
তিনি যোগ করেছেন যে, তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো এসকেএমটি’র এনডাউমেন্ট ফান্ডের করা দুটি সেটের লেনদেনের সাথে সম্পর্কিত, যা ২০১০ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছিল এবং ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল।
এবিএন-এএমআরও ব্যাংক নোট সম্পর্কিত বিবাদীর একটি ইস্যুতে লেনদেনের প্রথম সেট, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তিনি যোগ করেছেন যে, আসিফ বিভিন্ন এবিএন-এএমআরও ব্যাংক নোটে এনডাউমেন্ট ফান্ডের তহবিল জমাকে একটি সন্দেহজনক লেনদেন হিসাবে চিত্রিত করেছেন। তিনি যোগ করেছেন যে, তহবিল জমা করার ফলে একটি রিটার্ন পাওয়া যায় যা ২০১০ সালের সমাপ্ত বছরের আর্থিক বিবৃতিতে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়। দ্বিতীয় লেনদেনটি এসকেএমটি’র এনডাউমেন্ট ফান্ড থেকে সিন্নাবারে ৩০ লাখ রুপির বিনিয়োগের সাথে সম্পর্কিত - ওমানে একটি আবাসন উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে জড়িত একটি কোম্পানি এবং যার বিবরণ এসকেএমটি’র আর্থিক বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান আদালতকে জানিয়েছেন, ‘বিনিয়োগের সিদ্ধান্তটি এসকেএমটির বোর্ডের বিনিয়োগ কমিটি করেছিল যার আমি সদস্য ছিলাম না’। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, ‘এই লেনদেনে কোন যাকাতের অর্থ ব্যবহার করা হয়নি এবং কোন বেনামী লেনদেন করা হয়নি। ২০১০ সালের আর্থিক বিবরণীর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১০ সালে জাকাত হিসাবে ৮০ কোটি ৭০ লাখ ১৮ হাজার ৪শ’ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল, যার একটি টাকাও এনডাউমেন্ট ফান্ডে স্থানান্তর করা হয়নি’।
একটি অফশোর কোম্পানি একটি বেনামি কোম্পানির সমতুল্য বলে ধারণা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ‘এটি একেবারেই নয়’। ‘একটি অফশোর কোম্পানী কেবলমাত্র অধিক্ষেত্রের বাইরে নিবন্ধিত একটি কোম্পানি যেখানে এটি তার প্রাথমিক ব্যবসা পরিচালনা করে’, তিনি যোগ করেন।
‘আমি কেবল তখনই অর্থ পাচার করতে পারতাম যদি, বিবাদীর মিথ্যা অভিযোগে পাকিস্তানের জনসাধারণের এসকেএমটিকে দেয়া দান এবং জাকাত অপরাধের আয় হয় এবং আমি এবং এসকেএমটি জানতাম যে, এগুলো এ ধরনের অপরাধের আয়’, প্রধানমন্ত্রী অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে যুক্তি দিয়েছেন।
‘মানি লন্ডারিং হয়েছে বলে আসামীর বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে তিনি যোগ করেন যে, আসিফ ভালভাবে জেনে অভিযোগ করেছেন যে, তার অবস্থান এবং সম্মানের ক্ষতি এসকেএমটিকে আঘাত করবে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেছেন, ‘আসামি আমার খ্যাতির জন্য সৃষ্ট সমস্ত ক্ষতি পূরণ করতে এবং এ ধরনের ক্ষতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে দায়বদ্ধ’।
‘আমি রক্ষণশীলভাবে অনুমান করি যে, এ ধরনের ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার কোটি রুপি, যা দয়া করে আমাকে দেওয়া যেতে পারে’।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ই-কোর্ট চালানো একটি স্বাগত পদক্ষেপ ছিল, কারণ এটি আদালতের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করে এবং দ্রুত মামলার সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘বিচার বিভাগ এবং সরকারি সংস্থাগুলো ই-কোর্টের সফল প্রবর্তনের জন্য প্রশংসার দাবিদার’। তিনি তার আইনজীবী সিনেটর ওয়ালিদ ইকবালের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেন বলে বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।