মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবেলায় নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি খাতে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করতে চাইছে বিশ্ব। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামাতে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে উন্নত দেশগুলো। এ উদ্যোগে শামিল হয়েছে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোও। এরই অংশ হিসেবে আবহাওয়া সংকট মোকাবেলায় প্রযুক্তি নিয়ে আসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ছে। যদিও এ বিনিয়োগে মূল ক্ষেত্রগুলো অবহেলিত থেকে যাচ্ছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর সিএনবিসি। পেশাদার পরিষেবা নেটওয়ার্ক প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারসের (পিডব্লিউসি) গবেষণা অনুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে আবহাওয়া সংকট মোকাবেলায় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনিয়োগের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এ বিনিয়োগের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ে ২ হাজার ৪৮০ কোটি ডলারের চেয়ে ২১০ শতাংশ বেশি। ‘স্টেট অব ক্লাইমেট ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ১৪ শতাংশ বিনিয়োগ এখন আবহাওয়া প্রযুক্তিতে যায়। তবে পিডব্লিউসির মতে, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটি প্রতিষ্ঠানগুলো মূল আবহাওয়া প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে সমর্থন করছে না। আবহাওয়া বিষয়ক পাঁচটি প্রযুক্তিকে প্রধান হিসেবে চিহ্নিত করেছে পিডব্লিউসি। এগুলো হলো সৌরশক্তি, বায়ুবিদ্যুৎ, খাদ্যবর্জ্য প্রযুক্তি, সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন ও বিকল্প খাদ্য কিংবা কম কার্বন নিঃসরণযুক্ত গ্যাস প্রোটিন। এ পাঁচ খাত ২০১৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আবহাওয়া প্রযুক্তিতে মোট বিনিয়োগের মাত্র ২৫ শতাংশ পেয়েছে। যদিও এ প্রযুক্তিগুলোই ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশেরও বেশি প্রতিনিধিত্ব করে। আবহাওয়া প্রযুক্তি তহবিলের সিংহভাগ অর্থাৎ প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারই গেছে গতিশীলতা ও পরিবহন সংস্থাগুলোয়। এর মধ্যে ই-স্কুটার, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও উড়ন্ত ট্যাক্সির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে একটি আবহাওয়া প্রযুক্তি চুক্তির গড় আকার প্রায় চার গুণ বেড়ে ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। এক বছর আগেও এ গড় ২ কোটি ৭০ লাখ ছিল। এ সময়ে আবহাওয়া প্রযুক্তিতে সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ১ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। গত বছরের প্রথমার্ধে এ সংখ্যা ৯০০-এরও কম ছিল। বরাবরের মতো মার্কিন আবহাওয়া প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত স্টার্টআপগুলো ৫ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগ পেয়েছে চীনা আবহাওয়া প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ সময়ে সংস্থাগুলো ৯০০ কোটি ডলার অর্থ সংগ্রহ করেছে। পিডব্লিউসি যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ক্লাইমেট লিডার এমা কক্স এক বিবৃতিতে বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামাতে চায় বিশ্ব। সুতরাং নিঃসরণের পরিমাণ অর্ধেক করতে ১০ বছর সময় আছে। আবহাওয়া মোকাবেলায় উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জন্য ভালো খবর হলো আবহাওয়া প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে এ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরো ভালো সুযোগ রয়েছে। এমন অনেক খাত রয়েছে, যেগুলো নিঃসরণ কমাতে সরাসরি অবদান রাখতে পারে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বিনিয়োগকারীরা কি মূল্যবান সুযোগ হারাচ্ছেন নাকি এখানে এমন কোনো সমস্যা রয়েছে, যা নীতিনির্ধারকদের মনোযোগ দেয়ার প্রয়োজন।’ কয়েক দশক ধরে অনেক বিনিয়োগকারী মুনাফা নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাবে আবহাওয়া প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলোয় বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থেকেছেন। এরপর ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এ বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তবে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালে আবহাওয়া প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে আবারো স্থবিরতা আসে। এ ধীরগতির কারণ হিসেবে পিডব্লিউসি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রবণতা এবং বিশ্বজুড়ে মহামারীকে দায়ী করেছে। যা-ই হোক, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে এ বিনিয়োগের পরিমাণ আবারো বেড়ে গেছে। কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিশ্রুতি এ বিনিয়োগের উল্লম্ফনে অবদান রেখেছে। সিএনবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।