পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ব্যাপক এবং প্রাণবন্ত বলে বর্ণনা করে বলেছেন, আমরা যোগাযোগের ওপর জোর দিচ্ছি। ভারতের প্রেসিডেন্ট বলেন, ভারতের উন্নয়ন অংশীদার বাংলাদেশ।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব ব্যাপক এবং প্রাণবন্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে তার হোটেল স্যুটে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ভারতীয় প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ আরও বলেন, তিনটি মেগা ইভেন্ট উদযাপনে অংশীদার হতে পেরে তিনি খুবই খুশি। বাংলাদেশ যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও দেশ দুটির মধ্যে ক‚টনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে, এমন একটি সময়ে তিনি এই অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত থাকতে পেরে খুবই আনন্দিত।
প্রধানমন্ত্রীকে যা উপহার দিলেন ভারতের প্রেসিডেন্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য মিষ্টি, কেক ও বিস্কুট নিয়ে এসেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রেসিডেন্ট ভবনের নিজস্ব তৈরি করা মিষ্টি, কেক ও বিস্কুট নিয়ে এসেছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে উপহার হিসেবে আম পাঠানো হয়েছিল। ভারতের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন বাংলাদেশের আম মিষ্টি ও সুস্বাদু ছিল।
শাহরিয়ার আলম উল্লেখ্য করেন দুর্গাপূজার পরে যে সমস্যা হয়েছিল সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ দেশে সংখ্যালঘু হিসেবে কাউকে বিবেচনা করা হয় না। সবার সমান নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে এবং দারিদ্র্য নিরসনে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বেশি হওয়া দরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোভিন্দ বাংলাদেশে মুজিব শতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বিজয় দিবসের বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে গতকাল ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট সকাল ১১টা ১০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে। প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও তার পতœী রাশিদা খানমকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানান। ভারতের প্রেসিডেন্টকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
ঢাকায় কোবিন্দের প্রথম সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন ফার্স্টলেডি সবিতা কোবিন্দ, তাদের মেয়ে স্বাতী কোবিন্দ, ভারতের শিক্ষামন্ত্রী এবং দু’জন সংসদ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। প্রেসিডেন্ট হামিদ বিমান বন্দরে ফুলের তোড়া দিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান এবং রাশিদা হামিদও বিমান বন্দরে ভারতীয় ফার্স্ট লেডিকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভারতের প্রেসিডেন্টকে সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল ২১ বার তোপধ্বনিসহ গার্ড অব অনার প্রদান করে।
আবদুল হামিদ ও ভারতের প্রেসিডেন্ট কোবিন্দ অস্থায়ী মঞ্চে অবস্থান করে রাষ্ট্রীয় সম্মান উপভোগ করেন। এ সময় উভয় দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং এ সময় উভয় দেশের প্রেসিডেন্ট নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
ভারতের ১৪ তম প্রেসিডেন্ট সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে
অংশ নিতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে আসা একমাত্র বিদেশী সম্মানিত অতিথি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা সারিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, কৃষি মন্ত্রী ড. মোহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
এছাড়া, সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক‚টনীতিক কোরের ডিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিনি বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) মুখ্য সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), প্রেসিডেন্টর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং উর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দরে অভ্যর্ত্থনা অনুষ্ঠানের পর কোবিন্দকে মটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে নেয়া হয়। সেখান থেকে তিনি হেলিকপ্টার যোগে রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে যান।
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌছলে তাকে স্বাগত জানান গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, ঢাকা জেলা প্রশাসক, নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার। পরে ভারতের প্রেসিডেন্ট শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এসময় তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি চৌকশ দল তাকে সম্মাননা জানায়।
পরে, তিনি বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে হোটেল সোনারগাওয়ে বৈঠকের পর সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ভারতের প্রেসিডেন্ট সাক্ষাত করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণে বঙ্গভবনে ভারতীয় প্রেসিডেন্টর সম্মানে একটি নৈশভোজে অংশ নেন।
বঙ্গবভনের এক মুখপাত্র জানান, ভারতীয় প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ব্যবহৃত রাশিয়ার তৈরি টি-৫৫ ট্যাঙ্ক এবং মিগ-২১ বিমানের দু’টি রেপ্লিকা উপহার হিসেবে প্রদান করেছেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন আজ ভারতীয় প্রেসিডেন্ট আজ ন্যাশনাল প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে যোগ দেবেন। বিকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বাংলাদেশের জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাতে এবং বিজয়ের আনন্দ উদযাপনের জন্য ‘মহান বিজয়ের বীর’ শিরোনামে রমনাথ কোবিন্দ একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকারসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। আগামীকাল তৃতীয় দিনে ভারতীয় প্রেসিডেন্ট কালী মন্দিরের নতুন সংস্কার করা অংশের উদ্বোধন ও পরিদর্শন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ওই দিন বিকেলে তিনি ঢাকা থেকে নয়াদিল্লীর উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।