নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম থেকে : এক ভেন্যুতে তিন তিনটি ফরমেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকÑ নিজেকে চেনানোর ভাল মঞ্চই যেনো পেয়েছেন সাব্বির রহমান রুম্মান। ২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারী টি-২০ অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি (২৬ রান) তার। যে বছরের ২১ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংসে নিজের আক্রমণাত্মক মেজাজটাও দেখিয়েছেন সাব্বির। টি-২০ থেকে ওয়ানডে, ওয়ানডে থেকে টেস্টÑ সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটের সিড়ি বেয়ে টেস্টে পদার্পনে আদৌ কি মানিয়ে নিতে পারবেন এই লোয়ার অর্ডার। এটাই ছিল প্রশ্ন। টেস্ট অভিষেকের সামনে দাঁিড়য়ে আশ্বস্ত করার মতো উত্তর দিয়েছিলেন সাব্বির মিডিয়াকেÑ‘ শেভাগ টেস্টে পারলে আমি কেন পারব না?’ মাঠে সেই উত্তরটাই দিয়েছেন টেস্ট অভিষেকে।
প্রথম ইনিংসটা কাটেনি ভাল। তবে তৃতীয় দিনে মাত্র ২৭ রানে বাংলাদেশের শেষ ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার মধ্যেও সাব্বির ছিলেন ব্যতিক্রম, স্টোকসের বলে ¯িøপে ক্যাচ দিয়ে আসার আগে করেছিলেন ১৯ রান। তবে টেস্ট অভিষেকে বন্ধু নাসিরের জায়গাটা নড়বড়ে করে দিয়ে পাকা হয়ে থাকতে এসেছেন, তার জানান দিয়েছেন গতকাল। স্কোরশিটে ১৪০ উঠতে ৫ ব্যাটসম্যান হারানোর যন্ত্রনায় যেখানে ম্যাচের সব আশা শেষ হওয়ার কথা, সেখানে হতোদ্যম নন সাব্বির। তাকে স্পিন ভীতিতে তটস্থ করতে কুক এন্ড কোং যখন ঘিরে ধরেছে ফিল্ডিংয়ে, তখন সেই ফিল্ডিং পজিশন ভেঙ্গে রক্ষনাত্মক ফিল্ডিং সাজাতে ইংল্যান্ড দলকে বাধ্য করেছেন সাব্বির। মঈন আলীকে পর পর ২ বলে লং অফ এবং লং অনের উপর দিয়ে ছক্কায় টেস্ট মেজাজের বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাননি যারা, তাদেরকে রক্ষণাত্মক ব্যাটিং অ্যাপ্রোচটাও দেখিয়েছেন সাব্বির। মুশফিকুরের সঙ্গে ৬ষ্ঠ জুটিতে ৮৮ রানে নেতৃত্বটা আসলে দিয়েছেন ২৪ বছরের এই ছেলেটিই। গ্যারেথ বেটিকে লং অফ দিয়ে বাউন্ডারিতে অভিষেক টেস্ট ফিফটি উদযাপনে লেগেছে তার ২ ঘণ্টা ৪ মিনিট। ৪র্থ দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৫৩/৮,জয় থেকে ৩৩ রান দূরে বাংলাদেশÑ তা সাব্বিরের অ্যাপ্রোচের কারনেই। দিনের ভয়ংকর শেষ ঘন্টায় মুশফিকুর, মিরাজ, রাব্বীর ফিরে যাওয়ায় ৪র্থ দিনেই ম্যাচের সমাপ্তির শংঙ্কা দেখেছে যারা,তাদেরকে আশ্বস্ত করতে ফ্লাড লাইটের আলোয় শেষ ৭ ওভার কি রক্ষণাত্মক মেজাজেই না খেলেছেন সাব্বির। ইনিংসের শুরুতে স্ট্রাইক রেট যার ১০০’র উপরে, ৪র্থ দিন শেষে সেই সাব্বিরের অবিচ্ছিন্ন ইনিংসটি ৫৯ রানেরÑযে ইনিংসে পার করেছেন ইতোমধ্যে ১৭৮ মিনিট।
৩৪ রানের মাথায় পেয়েছিলেন একবার লাইফ, ব্রডের বলে উইকেট রক্ষক বেয়ারস্ট’র হাত থেকে ক্যাচ পড়ে যাবার পর আর করেননি ভুল। ইনিংসের শুরুতে ব্রডের বাউন্সার হেলমেটে আঘাত হানার পরও ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন এই লোয়ার অর্ডার বাংলাদেশের আশা। পুরো দলের বোঝা একাই নিয়েছেন টেস্ট অভিষেকে। এতেই অভিভুত হাতুরুসিংহেÑ ‘দ্বিতীয় ইনিংসে সে যেভাবে খেলেছে, আমি তাতে খুবই খুশি। বিশেষ করে মাথায় আঘাত পাওয়ার পরও খেলে গেছে। দিনটা কাটিয়ে দিয়েছে। প্রচন্ড চাপের মধ্যেও এখানে দারুণভাবে মনোযোগ ধরে রেখেছে।’
৯৯ টেস্ট খেলা ইংল্যান্ড পেস বোলার স্টুয়ার্ট ব্রড শেষ বিকেলে যেভাবে বলে রিভার্স সুইং করিয়েছেন,তাতেও হতোদ্যম নন সাব্বির। সাব্বিরের শরীরি ভাষা দেখে রীতিমতো মুগ্ধ স্টুয়ার্ট ব্রডÑ‘ সাব্বির দারুণ খেলেছে, মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিটা ছিল খুবই কার্যকরী। তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আমার ভালো লেগেছে, সারাদিন অনেক চাপ নিয়েছে।’
সাব্বিরের পারফরমেন্সে যেখানে মুগ্ধ হাতুরুসিংহে, মুশফিক,তামীম,মাহামুদুল্লাহ’র ব্যাটিংকেও দিয়েছেন প্রশংসাপত্র সেখানে সাকিবের প্রথম ইনিংসের আউটটাকে মানতেই পারছেন না হাতুরুসিংহে। লিডের স্বপ্ন দেখানো প্রথম ইনিংসে উল্টো ৪৫ রানে পিছিয়ে পড়ার কারন একটাই, তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় বলে মঈন আলীকে ডাউন দ্য উইকেটে সাকিবের প্রলুদ্ধ হওয়া। সেই আক্ষেপই করেছেন হেড কোচ হাতুরুসিংহে ‘এখন যে অবস্থায় আছি প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়ে ভালো করলে এর চেয়ে এগিয়ে থাকতে পারতাম। সেটা না হওয়াতে আমি কিছুটা হতাশ। প্রথম ইনিংসের বিষয়টি আমাদের মেনে নিতেই হচ্ছে। ভাল ইনিংস খেলার জন্য যথেষ্ট সুযোগ সে নেয়নি। ওই সময়ে সাকিব ওই শটটা না খেললে আরও ভালো খেলতে পারতো। এই আউট আমাদের জন্য ইতিবাচক কিছু দেয়নি। সব মিলিয়ে সত্যিই আমি হতাশ। আমি নিশ্চিত, আমাদের মতো সাকিব নিজেও অনেক অনেক হতাশ।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।