মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের দাপটে অতিষ্ঠ আমেরিকা! সমস্যার কারণটা কিন্তু ভারী অদ্ভূত। আসলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশ ছেয়ে গিয়েছে এক বিশেষ ধরণের চীনা ন্যাশপাতি গাছে। আর সেখানেই সমস্যা। এতে পরিবেশের ভারসাম্য তো নষ্ট হচ্ছেই, তার উপর বিকট গন্ধে অস্থির হচ্ছেন আমেরিকার বাসিন্দারা।
গাছের গন্ধে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার ঘটনা যথেষ্ট বিরল। সেই 'বিরল' অভি়জ্ঞতাই সঞ্চয় করে ফেলেছে আমেরিকা। ওই দেশের নাগরিকদের দাবি, এই ন্যাশপাতি গাছ থেকককে পচা মাছের দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এমনকী গাছগুলো কেটে ফেলতে পারলে পুরস্কৃত করা হবে, এমনটাও বলা হচ্ছে। তবে এতেও কোনও সুরাহা হচ্ছে না।। পুরস্কারের বিনিময়ে গাছ কাটতে চাইছেন না কেউই।
রাতারাতি যে গাছটি সমগ্র আমেরিকার কাছে 'ভিলেন' হয়ে দাঁড়িয়েছে তার নাম ক্যালেরি পিয়ার। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম পাইরুস ক্যালেরিয়ানা। বিশ শতকে ওই গাছটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এই গাছের সাদা ফুলের সৌন্দর্য আমেরিকানদের মনে ধরেছিল। তবে উদ্যানবিদদের মতে, ভিন প্রদেশের গাছ অন্য দেশে রোপন করলে তারা এক সময় দেশীয় প্রজাতির গাছের বাড়বাড়ন্ত নষ্ট করে দেয়। খুব দ্রুত নিজেদের জায়গার বিস্তার ঘটাতে শুরু করে। এতে অন্য গাছেদের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সংকট দেখা দেয়। যা পরিবেশের পক্ষে মোটেও সুখকর নয়।
ঠিক এমনটাই ঘটছে আমেরিকার বেশ কয়েকটি প্রদেশে। জানা গিয়েছে, বিশ শতকের শুরু থেকেই মূলত চিন ও ভিয়েতনামের বিভিন্ন এলাকা থেকেই এই বিশেষ প্রজাতির গাছ আমেরিকায় আসতে শুরু করে। ১৯৬০ সালের পর চিন থেকে আসা এই গাছ তার ফুলের মোহে আবিষ্ট করে মার্কিন মুলুকের বাসিন্দাদের। সেই কারণে প্রত্যেকেই নিজেদের 'লন'-এ নতুন বিদেশী গাছ রোপন করতে শুরু করেন। এক সময় সাদা ফুলের ওই গাছে ছেয়ে যায় আমেরিকার উত্তর-পূর্ব এবং মধ্য-পশ্চিমাংশের বিভিন্ন প্রদেশের শহরতলি। কিন্তু, এক্ষেত্রে মূলত দু'টি সমস্যা হচ্ছে। এক, আমেরিকায় যেসব গাছ জন্মায়, তা ধ্বংস করছে ক্যালেরি পিয়ার ট্রি। দুই, সাদা ফুল যতই দৃষ্টিনন্দন হোক না কেন, তাতে অদ্ভূত ধরণের গন্ধ রয়েছে। গাছ বাড়ায়, গন্ধও বাড়ছে।
নর্থ ক্যারোলিনার প্রশাসন পরিবেশ বাঁচাতে ক্যালেরি পিয়ার 'নিধন যজ্ঞ' শুরু করতে চাইছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে সমস্ত ক্যালেরি পিয়ার গাছ কেটে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে সে রাজ্যে। কিন্তু এত গাছ কাটবে কে! তার উপর দুর্গন্ধ। গাছ কাটার জন্য বারবার পুরস্কার ঘোষণা করেও ফল মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। তবে এবার প্রশাসনের তরফ থেকে নোটিশ জারি করে বলা হয়েছে, নিজের বাড়ির বা সংলগ্ন এলাকার গাছ কেটে ফেলতে হবে বাড়ির মালিককেই। শুধু তাই নয়, যারাই গাছ কাটবেন, তাদের পুরস্কৃত করবে সরকার।
আমেরিকার একেবারের উত্তর-পূর্বের প্রদেশ মেইন। সেখানকার অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো। কারণ, এখনও সেখানে দেশীয় গাছেদের উপর আক্রমণ শানাতে পারেনি ক্যালেরি। তবে গাছে ফুল ফুটলেই এখন বিরক্তি জন্মায় সেখানকার বাসিন্দাদের মনে। তাঁদের দাবি, ওই ফুল থেকে পচা মাছের মতো গন্ধ বেরোয়। সেই কারণেই নর্থ ক্যারোলিনার মতো মেইন প্রশাসনও গাছ কেটে ফেলার লোক খুঁজতে আরম্ভ করেছে। কিন্তু, সেক্ষেত্রেও ফল একইরকম।
এ প্রসঙ্গে মেইনের কৃষি ও বনসৃজন বিভাগের এক উদ্যানতত্ত্ববিদ বলেন, ‘মানুষ ফুলের মোহে ভুলে গাছ লাগিয়েছিল। একবারও ভাবেনি এতে পরিবেশের কী ক্ষতি হতে পারে। এখন নিজেরাই দুর্গন্ধে অস্থির।’ সূত্র: টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।