Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাজশাহী কাটাখালির মেয়র আব্বাস সাময়িক বরখাস্ত

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:১২ এএম | আপডেট : ৬:১৯ পিএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তি করা আব্বাস আলীকে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব ফারজানা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ৩১(১) ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো মেয়র অথবা কোনো কাউন্সিলর অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে অথবা তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে, সেক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় মেয়র অথবা কাউন্সিলর কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পৌরসভার স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে মেয়র অথবা কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে।
যেহেতু মো. আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রেফতার হওয়ায় তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারি ও সেবা গ্রহণকারী সাধারণ নাগরিক পৌর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে যা পৌরসভার স্বার্থের পরিপন্থী ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমীচীন নয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে বলে পৌর মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা যুক্তিযুক্ত। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ৩১(১) ধারা অনুসারে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর কাকরাইলের ‘ঈশা খাঁ হোটেল’ থেকে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে আব্বাস আলী বিতর্কিত মস্তব্য করেন। এ-সংক্রান্ত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া অডিওর কণ্ঠ নিজের বলে স্বীকার করেছেন আব্বাস আলী।

গত ২৯ নভেম্বর ফেসবুক লাইভে এসে আব্বাস আলী বলেন, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার বড় হুজুরের পরামর্শে প্রভাবিত হয়ে তিনি ম্যুরাল না রাখার বিষয়টি কথাচ্ছলে বলেছিলেন। এটা তিনি ভুল করেছেন বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ক্ষমা চান। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া অডিওটি রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইতিমধ্যে কাটাখালী পৌরসভার কাউন্সিল ও পৌর আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ জানিয়েছে। আব্বাস আলীকে অপসারণে অনাস্থা এনেছেন কাউন্সিলররা। এ অনাস্থা প্রস্তাবসংবলিত অপসারণের আবেদনপত্র ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছেন কাউন্সিলররা। আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

উল্লেখ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণকে কেন্দ্র করে কটূক্তি এবং নির্মাণ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য দেন নৌকা প্রতীকে দুবারের নির্বাচিত মেয়র আব্বাস আলী। এ নিয়ে একটি অডিও ফাঁস হয়। সেই অডিওর জের ধরে ডিজিটাল আইনে করা মামলায় বুধবার ১ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন তিনি।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বৈঠকে আব্বাসকে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে গত ২৫ নভেম্বর রাতে ১২ কাউন্সিলর রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর অনাস্থা পত্র ও রেজুলেশন জমা দেন। এরপর গত ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মেয়র আব্বাসকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরখাস্ত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ