সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির ক্ষতি ১ দশমিক ৬ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল
আবু তাহের
মা ছেলেধরা কি! মিতু অবাক হয়ে প্রশ্ন করে তার মাকে।
তুমি এই শব্দ কোথায় পেলে?
কাল স্কুলে কয়েকজন আলাপ করছিল। আমি অল্প কিছু শুনেছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি। ছেলেধরা কি মা?
মিতুর মা মিতুর দিকে মুখ করে বসে। বিষয়টি সিরিয়াস। ওকে এটা ভালো করে বুঝিয়ে দেয়া দরকার।
শোন মিতু, ছেলেধরা খুবই ভয়ংকর কিছু। দুষ্ট কিছু মানুষকে ছেলেধরা বলে। এরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের চুরি করে নিয়ে যায়। তারপর তাদেরকে বিক্রি করে দেয়। অনেক সময় মেরে ফেলে।
তাহলে তো এরা আমাকেও চুরি করে নিয়ে যেতে পারে, তাই না মা!
মিতুর কথায় মিতুর মা কেমন যেন হয়ে যায়।
ও কথা বলে না মা। তোমাকে কেউ চুরি করতে পারবে না। তুমি সব সময় সাবধান থাকবে। আমরাও থাকব।
মা ওরা কীভাবে চুরি করে?
মানুষ যেভাবে অন্যান্য চুরি করে। যেমন : ঘর থেকে চুরি করে, আবার বাহির থেকেও চুরি করে। তোমাকে ওরা হয়তো কিছু খেতে দেবে। কিংবা কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলবে। আবার খেলনাও দিতে পারে। তোমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে চুরি করে নিয়ে যাবে।
তা হলেও তো মা ওদের কিছু খাওয়া যাবে না।
হ্যাঁ, অপরিচিত কারো কিছু খাওয়া বা নেয়ার দরকার নেই।
এ জন্য তোমাকে খুব সাবধানে থাকতে হবে।
মিতু কিছুক্ষণ চুপ মেরে থাকে। তারপর পেয়েছি বলে লাফিয়ে ওঠে।
কি হলো তোমার! মিতুর মা প্রশ্ন করে।
মা আমি একটা বুদ্ধি পেয়েছি।
মিতু তার মার কানে কানে ফিসফিস করে কী যেন বলে। মিতুর মা হাসতে থাকে।
তোমার বুদ্ধি তো চমৎকার। তোমার বুদ্ধিটা দারুণ কাজে দেবে। ভালোই হলো।
এরপর বেশ কিছু দিন কেটে যায়। একদিন মিতু স্কুল ছুটির পর গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। তার মা আসার কথা। এখনো আসছে না। মিতু এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। একটু একটু ভয় লাগে। সে গেটের ভিতর ঢুকে যায়।
মিতু তোমাকে তোমার মামা নিতে এসেছে। গেটের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। দারোয়ান এসে মিতুকে জানায়।
মিতু গেটের বাহিরে উঁকি দেয়। লোকটাকে চেনা চেনা লাগছে। কিন্তু সে তার মামা নয়। লোকটাকে কোথায় যেন দেখেছে। হ্যাঁ মনে পড়েছে। তাদের মহল্লায়। মিতু গেট থেকে বের হয়। লোকটি হাসি দিয়ে মিতুর সামনে এসে দাঁড়ায়।
মিতু তোমাকে নিতে তোমার আম্মু পাঠিয়েছে। সে খুবই অসুস্থ। তুমি তাড়াতাড়ি চল আমার সাথে।
মিতু মুখ গম্ভীর করে দাঁড়িয়ে থাকে। লোকটার দিকে কড়া করে তাকায়। তারপর আচমকা বলে বসে, ‘পাসওয়ার্ড’।
মানে! লোকটা কিছুটা থতমত খেয়ে যায়।
মিতু আবার হুংকার দেয়, ‘পাসওয়ার্ড’।
লোকটি কিছু বুঝে উঠতে পারে না। মিতু দৌড় দিয়ে গেটের ভিতর চলে যায়। দারোয়ান দৌড়ে আসে মিতুর কাছে।
কি হয়েছে মিতু?
লোকটা আমার মামা নয়।
দারোয়ান দৌড়ে গেটের বাইরে যায়। কিন্তু কাউকেই দেখতে পায় না। সাথে সাথে মিতুর মা এসে হাজির। মিতু দৌড়ে মায়ের কাছে আসে।
কী হয়েছে মিতু?
মা, এক লোক এসেছিল আমাকে নিতে। আমি তার কাছে পাসওয়ার্ড জানতে চাইলে সে বলতে পারেনি। আমি দৌড়ে গেটের ভিতর চলে এসেছি।
খুব ভালো করেছ মা। বলতে বলতে মিতুকে কোলে নেয় মিতুর মা। মিতুর মা দারুণ খুশি। আজ মিতু তার নিজের বুদ্ধির জোরে বেঁচে গেল। সেদিন রাতে মিতু তার কানে কানে বলেছিল, মা কেউ যদি আমাকে নিতে আসে তবে তাকে আমি পাসওয়ার্ড জিজ্ঞাসা করব। তারপর মিতু একটা শব্দ বলে। যদি মা ওই লোক এই পাসওয়ার্ড না বলতে পারে তবে বুঝব সে আমাকে নিতে আসেনি। কারণ তাকে তুমি পাঠালে সে পাসওয়ার্ড বলতে পারবে। তুমি তাকে পাসওয়ার্ড বলে দিবে।
মিতুর বুদ্ধিতে মিতুর মা দারুণ খুশি হলো। আর আজ সেই বুদ্ধিতেই মিতু বেঁচে গেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।