বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকার দাম কমালেও যশোরের বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। এলপি গ্যাসের দাম কমানো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নীতিমালা মানছে না যশোরের খুচরা দোকানিরা। কোম্পানিভেদে বেসরকারি খাতের ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ১২শ’ ৫০ টাকা থেকে থেকে ১৩শ’ টাকা পর্যন্ত। যা সরকারি বেঁধে দেওয়া মূল্যে বিক্রি হওয়ার কথা ১ হাজার ২২৮ টাকায়। খুচরা দোকানিরা বলছেন, তারা আগেই বেশি দামে কিনেছেন। এখন কোম্পানিগুলো দাম না কমালে নির্ধারিত দামে তাদের পক্ষে বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ নিয়ে অনেক সময় ক্রেতাদের সঙ্গে ঘটছে বিক্রেতাদের বাগবিতন্ডাও।
ব্যবসায়ী ও সংশ্রিষ্ঠসূত্র জানাগেছে, দেশের বাজারে এলপি গ্যাস আসার পর থেকেই জরুরি এ পণ্যটি নিয়ে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে মানুষের ঘরে ঘরে রান্নার এ গ্যাস পৌছে গেলে শুরু হয় অর্থ আদায়ের প্রতিযোগিতা। এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করে। চলতি বছরের গত ১২ এপ্রিল এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন দেশে প্রথমবারের মত এলপি গ্যাসের ১২ কেজির সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারণ করে ৯৭৫ টাকা। পর্যায়ক্রমে কমিশন গত ১০ অক্টোবর এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এক হাজার ২৫৯ টাকায় ১২ কেজির এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারণ করে। কিন্তু ঐ সময়ে এ দামে যশোরের কোথাও এলপি গ্যাসের বেঁচাকেনা হয়নি। শহরের বিভিন্ন দোকানে ১৩শ’ থেকে সাড়ে ১৩শ’ টাকায় এলপি গ্যাস বিক্রি হয়েছে। সর্বশেষ গত ২ ডিসেম্বর ১২ কেজি ওজনের এলপি গ্যাসের দাম মূল্য সংযোজন করসহ ১ হাজার ৩১৩ টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার ২২৮ টাকা করা হয়েছে। যা গত শুক্রবার থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলো বিইআরসি। কিন্তু বিইআরসি নির্দেশনার বৃদ্ধআঙ্গুল দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা সিলিন্ডার প্রতি ২৫ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। শহরতলীর কোন কোন জায়গায় অতিরিক্ত মূল্যের অনেক বেশী হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
যশোর শহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার বাসিন্দা সেলিম হোসেন বলেন, কয়েক মাস থেকে বাড়তি দামে গ্যাস কিনতে হচ্ছে। সরকার এলপিজির মূল্য বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু বাজারে এর প্রভাব নেই। সবাইকে বেশি দামেই গ্যাস কিনতে হচ্ছে। কার্যকর করতে না পারলে এমন ঘোষণার দরকার কী? নতুন খয়েরতলা ভাস্কর্য মোড় এলাকার বাসিন্দা ফারহান জানান, গতকাল ওমেরা গ্যাস নিয়েছি ১২৬০ টাকা আর বসুন্ধরা এলপি গ্যাস নিলাম ১৩ শ’ টাকা। অতৎ ৩ ডিসেম্বর থেকে সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু ৬ তারিখ বাজারে এসে দেখি দাম ঠিকই আছে। এমনকি সরকার সিলিন্ডারের দাম কমিয়েছে এ কথা বলায় বিক্রেতা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এ বিষয়ে শহরের হযরত গরীব শাহ মোড়ে এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী কাদের এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারীর ছেলে সাজ্জাদুল কাদের অর্ণব বলেন, ৩ ডিসেম্বর থেকে নতুন দামে সিলিন্ডার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। কিন্তু আমাদের দোকানে যে সিলিন্ডারগুলো রয়েছে সেগুলো আরও আগের কেনা। যে কারণে পুরোনো দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন মাল আসলে নতুন যে রেট হয়; সেই দামেই বিক্রি করবো। সদর উপজেলা পরিষদের সামনে গ্যাস ব্যবসায়ী নাহিদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী তরিকুল ইসলাম বলেন, যদি ডিলাররা আমাদের কম দামে সিলিন্ডার দিতেন তাহলে আমরা অবশ্যই সরকারের দেওয়া নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারতাম। এলাকার ডিলাররা এখনো দাম কমাননি, যে কারণে আমরা কমাতে পারছি না।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, সরকার যেহেতু এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সেহেতু বেশি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তারা ইতিমধ্যে খোঁজখবর নিচ্ছেন। যদি কোন ব্যবসায়ী গ্রাহকের কাছ থেকে এলপি গ্যাসের অতিরিক্ত মূল্য আদায় করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।