Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতিতে মতৈক্য

প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বিশ্বের পরাশক্তিগুলো। সিরিয়ায় শান্তি আনতে আবারও আলোচনা শুরু করতে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত বৃহস্পতিবার জার্মানির মিউনিখে জড়ো হন। সম্প্রতি জেনেভায় শুরু হওয়া শান্তি আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়ার পর পশ্চিমা শক্তি শান্তি ফিরিয়ে আনার গতিসঞ্চারে ব্যাপক তৎপর হয়ে ওঠে। গতকাল শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জানিয়েছেন, সিরিয়া সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বৈঠকে সিরিয়ার যুদ্ধবিরতি ফের বাস্তবায়ন এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত মানবিক সাহায্য সরবরাহে সম্মত হয়েছেন। জন কেরি রাশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠক করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, জেনেভায় স্থগিত শান্তি আলোচনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনরায় শুরু করতে হবে। সিরিয়ার বিবদমান পক্ষগুলোর অনমনীয়তা এবং কার্যকর অসহযোগিতার কারণে জেনেভা বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়।
বিবিসি জানিয়েছে, জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই চুক্তি হবে বলে সমঝোতায় পৌঁছেছে বৃহৎ শক্তির দেশগুলো। বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, সিরিয়ায় অবরুদ্ধ অঞ্চলগুলোতে জরুরি ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যাপারেও একমত হয়েছেন তারা। তবে এই যুদ্ধবিরতি ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত নুসরা ফ্রন্টের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছেন কেরি। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির উদ্যোগের সাফল্য নির্ভর করবে সব পক্ষ একে কতটুকু সম্মান জানায় তার ওপর। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বলেন, আশাবাদী হওয়ার কারণ রয়েছে। কেননা আজ আমরা একটি বড় কাজ করেছি। জাতিসংঘের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী সিরিয়ার যুদ্ধে এখন পর্যন্ত আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৬৫ লাখ মানুষ। যদিও সিরিয়া শান্তি আলোচনার প্রাক্কালে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চাইলেও রাশিয়া পহেলা মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি শুরুর প্রস্তাব দিয়েছিল। মস্কো এ প্রস্তাব দিয়ে নিজেদের এবং সিরিয়া সরকারের জন্য বিদ্রোহীদেরকে নির্মূল করার লক্ষ্যে তিন মাস সময় নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে বলেই মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। কেরির বক্তব্যেও তারই আভাস পাওয়া গেছে। এ কারণেই সাংবাদিক সম্মেলনেও কেরি বলেন, সন্ত্রাসীদের পরিবর্তে পশ্চিমাদের দৃষ্টিতে উদার বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে রুশ বিমান হামলা চালাচ্ছে। বৈঠকের পর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, এই বিরতি (যুদ্ধ) তখনই কার্যকর হবে যদি রাশিয়া তার হামলা বন্ধ করে। অবশ্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, বিমান হামলা চলবে।
সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে এমন সময় সমঝোতা হলো যখন রুশ বিমান বাহিনীর হামলার সহায়তায় সিরীয় সরকারি বাহিনী দেশটিতে বিদ্রোহীদের দখলে থাকা অঞ্চল একের পর এক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। সরকারি বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ আলেপ্পোর দিকেও এগিয়ে যাচ্ছে। আলেপ্পো এখনো বিদ্রোহী পক্ষের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিরিয়ার আলেপ্পোয় তীব্র লড়াইয়ের মুখে উদ্বাস্তু হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। সেখানে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনাদের অভিযানে সহায়তা করছে রাশিয়ার বিমান বাহিনী। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতিতে মতৈক্য

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ