পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩১তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিল গতকাল বুধবার বাদ জোহর কয়েক লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে মিলাদ-ক্বিয়াম ও আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছে। আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন ছারছীনা দরবার শরীফের পীর আলহাজ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ। এসময় লাখো মুসল্লির আমিন আমিন ক্রন্দন ধ্বনিতে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এর আগে মাহফিলের দ্বিতীয় দিন গত মঙ্গলবার বাদ এশা বরিশালের ডিআইজি এস. এম. আক্তারুজ্জামান আগত মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। হানাহানি, অরাজকতা, গুজবে কান দেওয়া ও আত্মীয়ের হক নষ্ট করা ইসলাম সমর্থন করে না। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য, যা ইসলামও শিক্ষা দেয়। ইসলাম নারীদের সম্মান দিয়েছে। তাই আমাদের উচিত প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের সম্মান দেয়া। এছাড়াও সত্য যাচাই না করা পর্যন্ত কারও কোন ধরণের উস্কানিমূলক কথায় কান না দিয়ে সত্যটি জানতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তা না হলে সত্য প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য্যরে সাথে অপেক্ষা করতে বলেন।
মাহফিলের শেষ দিন বাদ ফজর জিকিরের তা’লীম দেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও পীর ছাহেবের বড় ছাহেবজাদা আলহাজ হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন। এছাড়াও বিষয়ভিত্তিক কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ওলামায়ে কেরামগণ তাদের তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ পেশ করেন। যারা বয়ানে অংশ নেন তাদের মধ্যে- মাওলানা রুহুল আমিন আফসারী, হাফেজ মাওলানা মো. বোরহান উদ্দীন ছালেহী, মাওলানা সিরাজুম মুনীর তাওহীদ, মাওলানা ওসমান গণি ছালেহী প্রমুখ।
মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জমইয়াতে হিজবুল্লাহর নায়েবে আমীর ও বরিশাল জামে এবাদুল্লাহ মসজিদের খতিব আলহাজ মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ, ঢাবির আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. হাফেজ মাওলানা মো. রুহুল আমিন, বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব, পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান, নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম, সহকারী পুলিশ সুপার রিয়াজ হোসেন, স্বরূপকাঠী পৌর মেয়র গোলাম কবির, গৌরনদী পৌর মেয়র হারিছুর রহমান, নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবির মোহাম্মদ হোসেন, মরহুম পীর ছাহেবের সফরসঙ্গী মাওলানা আবু জাফর মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা প্রমূখ।
মাহফিলে মুনাজাতপূর্ব আলোচনায় আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর আলহাজ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ আগত মুসল্লিদের বাইয়াত করিয়ে তওবা, ইস্তেগফার ও জিকির-আজকার এর মাধ্যমে দ্বীনের উপর মজবুত থাকার উপদেশ দেন। পাশাপাশি তিনি এই ফেতনার যুগে আক্বীদা আমল নিয়ে যেভাবে টানা হেচড়া চলছে সে থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।
সমবেত জনতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- পানিতে ও স্থলে যা কিছু বিপর্যয় হয় তা সব কিছু মানুষের হাতের কামাই সুতরাং বর্তমান বিশ্বে করোনা মহামারী ও আমাদের কর্মফল। আল্লাহ তায়ালা বালা মুসীবত দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন এবং এর মধ্য থেকে অনেককে শাহাদাতের মর্যাদা প্রদান করেন।
মুনাজাতের পূর্বে পীর ছাহেবের পক্ষ হতে সরকারের নিকট দুইটি দাবি পেশ করা হয়- দেশে যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষক দরকার তেমনি ৯৫% মুসলমানদের দেশে প্রতিটি মুসলমানের জীবনে ইসলামী শিক্ষা অপরিহার্য দরকার। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও তিনি জানান, একটি চক্র সরকারকে ব্যবহার করে তাদের ভেতরে থেকে অনৈসলামিক কার্যকলাপ বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে এ সকল বিতর্কিত লোকজন থেকে ফিরে থাকার আহ্বান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।