পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩১তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিলে আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরীফের পীর আলহাজ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ বলেছেন, হাদীসে উল্লেখ আছে- বণী ইসরাইল সম্প্রদায় ৭২ ফেরকায় বিভক্ত হয়েছিল। নবীজী (সা.) বলেন, অচিরেই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, তন্মধ্যে একটি দল ব্যতীত সকলেই জাহান্নামী হবে। সেই নাজীদল হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত। মনে রাখতে হবে জাহান্নামী ৭২ দলের সবাই ইসলামের দাবিদার হবে এবং ইসলামের অনুশাসনও পালনকারী হবে কিন্তু তাদের আক্বীদা ও বিশ্বাসে ইসলামের মৌলিক বিষয়ের বিরোধিতা বিদ্যমান থাকায় তারা জাহান্নামী হবে।
উদাহরণ দিয়ে পীর ছাহেব বলেন, হযরত আলী (রা.)-কে কাফের মনে করে যে ব্যক্তি শহীদ করেছিলো সেই আব্দুর রহমান বিন মুলজেম একজন মস্তবড় আবেদ ও জাকের ব্যক্তি ছিল। কিন্তু খারেজী মতবাদে বিশ্বাসী হবার কারণে সে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী নবীজী (সা.) এর আদরের জামাতা হযরত আলী (রা.) কে পর্যন্ত কাফের সাব্যস্ত করতে দ্বিধা বোধ করেনি এবং তাকে হালালুদ্দম মনে করে শহীদ করেছিল।
গতকাল মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ মাগরিব পীর ছাহেব এ কথা বলেন। সমবেত জনতাকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পূর্বেকার খারেজী, রাফেজী ও মুতাজিলা ফেরকার অস্তিত্ব না থাকলেও নতুন নতুন মোড়কে তাদের আক্বীদা এখনও সমাজে বিদ্যমান আছে। বাতেল আক্বীদার কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একদল লোক তারা হায়াতুন নবীতে বিশ্বাস করে না, তারা নবীজীকে সাধারণ মানুষ মনে করে। আরেকদল নিজেদেরকে সালাফী দাবি করলেও ইমাম আযম আবু হানীফা (রহ.) যিনি একজন তাবেয়ী ছিলেন তাকে গালি দেয়, অন্য এক দল সাহাবায়ে কেরামকে সত্যের মাপকাঠী মানতে রাজি নয়। তারা পীর-মুরীদী এবং তরীকা-তাসাউফকে শিরক জ্ঞান করে। কেউ আবার ইজমা-কিয়াসকে দলীল হিসেবে মানতে চায় না। অনেকে কবর জিয়ারত করাকে হারাম মনে করে। তারা হজ্বের সময়ে মদীনা শরীফে জিয়ারতে যেতেও বাঁধা দিয়ে থাকে। কাদিয়ানী, শিয়া, বাহায়ী ইত্যাদি বাতিল ফিরকার কথা বাদ দিলাম। একদল লোক নবীওয়ালা কাজ করে অথচ তারা বলে নবীজীর গোনাহ ছিল।
পীর ছাহেব বলেন, তাই সাবধান! অনেকেই ধোকার জাল বিস্তার করে আমাদের ঈমানকে গ্রাস করার জন্য ফাঁদ পেতে আছে। যারা বাহ্যিক চাকচিক্য ও মুখরোচক স্লোগানে বিভ্রান্ত হয়ে সেসব ফাঁদে ধরা পড়বে তারা নিশ্চিত হালাক হবে। তাই হক্ব আক্বীদা জেনে তার উপর মজবুত থাকতে হবে। তিনি সকলকে ফুরফুরা শরীফের শাহ্সূফী আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী এবং ছারছীনার দাদা হুজুর শাহ্সূফী নেছার উদ্দীন আহমদ (রহ.) এর পথ ও মত অনুসরণের প্রতি উৎসাহিত করেন।
মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ ফজর জিকিরের তা’লীম দেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমীর ও পীর ছাহেবের বড় ছাহেবজাদা আলহাজ মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন। এছাড়াও বিষয়ভিত্তিক কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ওলামায়ে কেরামগণ তাদের তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ পেশ করেন। যারা বয়ানে অংশ নেন তাদের মধ্যে- মাওলানা মো. রূহুল আমিন ছালেহী, মাওলানা. মাহমুদুম মুনীর হামীম, মাওলানা মো. আবদুল গফ্ফার কাসেমী, মাওলানা কাজী মফিজ উদ্দীন, মুফতী হায়দার হুসাইন, মাওলানা. শামসুল আলম মুহেব্বী প্রমুখ।
আজ মাহফিলের শেষ দিন। বাদ জোহর পীর ছাহেব দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ কামনা করে তিন দিনব্যাপী মাহফিলের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন ইনশাআল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।