গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ১৩ জন ভর্তিচ্ছুকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার তাদেরকে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। আটককৃত ১৩ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদÐ দেয়া হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেট রবীন্দ্র চাকমা পাবলিক পরীক্ষা আইন ১৯৮০ সালের ৯ (খ) ধারায় তাদের এ কারাদÐ দেন।
আটককৃতদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ ভবন থেকে আল ইমরান, ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে শোভন ও নওরীন, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ থেকে জাহিদ খান, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্র থেকে আকাশ খন্দকার, ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে সাদিক আহমেদ, ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে অবনী রায়কে আটক করা হয়। এছাড়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে সাদমান ইয়াসির, বদরুন্নেছা মহিলা কলেজ থেকে মাহমুদুল হাসান তারেক, ভবানি স্কুল থেকে আল আমিন, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ইসতিয়াক আহমেদ, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল থেকে সঞ্চিতা রানী দাস এবং মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ থেকে জুলকার নাইনকে আটক করা হয়।
আটককৃত শিক্ষার্থীদের মাঝে, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী জুলকারনাইন জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তার ২৩৩ নং কক্ষে একজন শিক্ষক এসে তাকে আশ্বস্ত করে যান। একই কেন্দ্রর আরেক পরীক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ জানান যে, রুবেল নামে এক বড়ভাইয়ের মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভজিৎ নামে এক ছাত্রলীগ নেতার সাথে তার ৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। ইডেন কলেজ থেকে আটক পরীক্ষার্থী নওরিন জাহান জানান, তার বোরহান নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ঢাবি ছাত্রলীগ পরিচয় দাতা মাসুম নামে একব্যক্তি তাদের সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে উত্তর মেসেজ করে দেন। মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী সঞ্চিতা দাস জানান, তার ৫০৩ নং কক্ষের দায়িত্বরত পরিদর্শক তার নিকট মোবাইল ডিভাইস আছে জানা সত্তে¡ও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
আটককৃত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে, তাদেরকে কেন্দ্র প্রবেশের সময় ভালভাবে চেক করা হয়নি এবং চক্রের সদস্যরা তাদেরকে ৪ থেকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে সব ধরনের সহায়তা করার ও কেন্দ্রের পরিদর্শককে ম্যানেজ করার আশ্বাস দেন।
অনেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে জানা যায় যে, তাদের অভিভাবকরা এবং কোচিং সেন্টার থেকে অনেক ক্ষেত্রে তাদের এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ সাংবাদিকদের বলেন, আটককৃত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বøুটুথ ডিভাইস ও মোবাইল জব্দ করা হয়। গত তিনটি পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেও অন্যান্য বছরের ন্যায় জালিয়াত চক্র এ বছরও চুপ নেই। তারা এইবার সেট কোড উহ্য থাকায় সরাসরি উত্তর দিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করতে চেয়েছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেট রবীন্দ্র চাকমা বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইন ১৯৮০ সালের ৯ (খ) ধারা অনুযায়ী তাদের দুই বছর করে কারাদÐ দেয়া হয়েছে। তবে তাদের আপিলের সুযোগ রয়েছে। এদিকে আটককৃত শিক্ষার্থীরা তাদের জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। বরাবরের মতো এবারও উদ্ভাস ও ইউসিসি নামের দুটি কোচিং সেন্টারের নাম আসে আটক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এ দুটি কোচিং সেন্টারের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দিবে বলে সাড়ে তিন থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত কন্ট্রাক্ট করে। শিক্ষার্থীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ও মোবাইলের ম্যাসেজ দেখে জালিয়াত চক্রের মূল হোতাদের ধরার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর আমজাদ আলী।
সকাল ১০টায় ‘ক’ ইউনিটের ১,৭৪৫টি আসনের বিপরীতে ৯০ হাজার ৪২৭ ভর্তিচ্ছু পরীক্ষায় অংশ নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৫৮টি ও ক্যাম্পাসের বাইরে ২৯টিসহ মোট ৮৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় ভর্তিচ্ছুরা। পরীক্ষায় জালিয়াতি ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।