Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেন ক্ষমা চাইলেন পাকিস্তানি মডেল সুলেহা?

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২১, ২:১৯ পিএম

কর্তারপুরে অবস্থিত শিখ সম্প্রদায়ের পবিত্র স্থান গুরুদুয়ার দরবার সাহিবে খালি মাথায় ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েন পাকিস্তানি মডেল সুলেহা। এ ঘটনায় পরে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।

জানা গিয়েছে, সুলেহা পাকিস্তানে 'মন্নত' নামের একটি অনলাইন ক্লোদিং স্টোর চালান। সম্প্রতি তিনি 'গুরুদ্বারা দরবার সাহিব কমপ্লেক্সে' একটি ফোটোশুট করেন। সেখানে ছবিতে দেখা গিয়েছে, তিনি গুরুদ্বারের দিকে পিছনে ফিরে পোজ দিচ্ছেন এবং তার মাথা অনাবৃত, কোনও কাপড় নেই! তার এই ভিডিও শুটের ছবি এবং আরও কিছু ছবি ওই স্টোরের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হয়েছে, যাকে 'হাইলি অবজেকশনেবল' অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

মান্নত ক্লোথিং নামের একটি পোশাকের ব্রান্ড সোমবার ইন্সটাগ্রামে তাদের পেইজে সুলেহার ফটোশুটে তোলা ছবি পোস্ট করে। এসব ছবি কর্তারপুর সাহিবে শুট করা। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নজরে পড়ে শিরোমনি আকালি দলের মুখপাত্র মানজিন্দর সিং সিরসা ও অন্যদের। তারা দেখতে পান দরবার সাহিবে ছবি শুটিং করার সময় ওই মডেলের মাথা ছিল অনাবৃত। গুরুদুয়ার দরবার সাহিবে মাথা আবৃত করে রাখা বাধ্যতামূলক।

এটা ওই স্থানের পবিত্রতার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। এ নিয়ে শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলে ইন্সটাগ্রামে ক্ষমা চেয়ে মডেল সুলেহা বলেছেন, তিনি আসলে কাউকে আঘাত দিতে এসব ছবি তোলেননি। তিনি কর্তারপুর সাহিব সফরে গিয়েছিলেন, তারই স্মৃতি এসব ছবি। ইন্সটাগ্রামে তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি আমি ইন্সটাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করি, যেটা কোনো ফটোশুট বা অন্য কিছু ছিল না। কর্তারপুর এবং শিখ সম্প্রদায়ের ইতিহাস জানতে গিয়েছিলাম আমি। এসব ছবির মধ্য দিয়ে কারো অনুভূতিতে আঘাত দিতে চাইনি বা এর মধ্যে অন্য কোনো বিষয় নেই। তারপরও যদি কেউ মনে করেন এর মধ্য দিয়ে তাদেরকে আমি আহত করেছি অথবা তারা মনে করে থাকেন, তাদের সংস্কৃতিতে সম্মান দেখাইনি, তাহলে আমি দুঃখিত। পোশাকের ওই ব্রান্ড এবং মডেল সুলেহা উভয় পক্ষই দাবি করেছেন ওই ছবি কোনো ফটোশুটের নয়। তবু সুলেহা বলেছেন, তিনি শিখদের সংস্কৃতিতে সম্মান জানান। ভবিষ্যতে বিষয়টি মনে রাখবেন এবং দায়িত্বশীল হবেন।

'দিল্লি শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটি'-র প্রেসিডেন্ট পরমজিৎ সিং সারনা এই ঘটনায় তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, বিষয়টি ভীষণই আপত্তিকর এবং তা শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করেছে। এখানেই না থেমে তিনি সংশ্লিষ্ট পাক কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, এবার থেকে গুরুদ্বারগুলিতে ইংরেজি এবং উর্দুতে নির্দেশিকা থাকা জরুরি যে, সেখানে আগত ভিজিটরসরা যেন কাঙ্ক্ষিত আচরণ করেন, তারা যেন শিখ 'কোড অফ কন্ডাক্ট' মেনে চলেন। কেউ যেন গুরুদ্বারের দিকে পিছন ফিরে না দাঁড়ান বা সেখানে যেন তাদের মাথা অনাবৃত না থাকে।

এদিকে শিখ মুখপাত্র সিরসার টুইটের পর এ ঘটনায় তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তান পুলিশ। তারা বলেছে, এই ফটোশুটের আদ্যোপান্ত সব জানার জন্য তদন্ত করছে তারা। এ জন্য কাউকে দায়ী পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিখ সম্প্রদায়ের কাছে অবশ্যই ওই ডিজাইনার এবং মডেলকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, কর্তারপুর সাহিব একটি ধর্মীয় স্থান। সেটা ছবি ধারণের স্থান নয়। সূত্র: টাইমস নাউ, এনডিটিভি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ