Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরবরাহ চেইন সঙ্কট নিরসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এশিয়া-ইউরোপ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সরবরাহ চেইন উন্নত করা এবং ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিত করতে সম্মত হয়েছে এশিয়া ও ইউরোপের নেতারা। কম্বোডিয়ায় আয়োজিত ১৩তম এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ে (আসেম) এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তারা। দুদিনব্যাপী এ ভার্চুয়াল সম্মেলনে মিয়ানমার সঙ্কট ও আঞ্চলিক উত্তেজনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। খবর নিক্কেই এশিয়া। সমাপনী অনুষ্ঠানে আয়োজক দেশ কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান সেন বলেন, অধিক নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি দৃঢ় প্রত্যয়ী। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে এবং বহুপাক্ষিকতা প্রসারে এশিয়া-ইউরোপের এ অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস করি, যা আগামী দশকগুলোয় এশিয়া, ইউরোপ তথা পুরো বিশ্বের মানুষের জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে। সম্মেলন শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিচেল বলেন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন কৌশল শক্তিশালী রাজনৈতিক ইঙ্গিত বহন করে। নিরাপদ জ্বালানি, ডিজিটাল সম্পৃক্ততা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে আমরা ঐকবদ্ধভাবে কাজ করছি। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও পণ্য তৈরিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু করোনা নিয়ন্ত্রণে নেয়া কঠোর পদক্ষেপে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে এবং শ্রমস্বল্পতা দেখা দেয়। করোনা-পূর্ব সময়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে ইউরোপকে বেশ সোচ্চার দেখা গেলেও ভ্যাকসিন রফতানিতে রক্ষণবাদী অবস্থান নিচ্ছে তারা। ভেঙে পড়া বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ঠিক করা এবং বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা প্রসারে আসেম নেতারা দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। অতীতের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার জবাবে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এশিয়াকে ভ্যাকসিন সরবরাহের অঙ্গীকার করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২০২২ সালের মাঝামাঝিতেই ৭০ শতাংশ বৈশ্বিক ভ্যাকসিনেশন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়তা করতে চায় ইইউ। আমরা পুরো বিশ্বের সাথে ভ্যাকসিন সরবরাহ চালু রাখতে এবং কোভ্যাক্স সরবরাহে নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখতে চাই। আসেম সম্মেলনে ডিজিটাল রূপান্তরের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। চলমান সঙ্কট এশিয়া ও ইউরোপ উভয়েরই জন্যই ডিজিটালাইজেশন আবশ্যক করে তুলেছে। মহামারী আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে অফিসে না এসেও কাজ করা যায় এবং নগদ অর্থ ছাড়াও লেনদেন ও অর্থনীতি চালু রাখা যায়। কিন্তু এ প্রযুক্তিগুলোয় সব অঞ্চলের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি। যৌথ বিবৃতিতে এশীয় ও ইউরোপীয় নেতারা বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছেন যেন তারা জনগণের প্রয়োজনে সাড়া দিয়ে ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিত করেন। ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনা থেকে শুরু করে ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ এবং ডিজিটাল দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন আসেম নেতারা। একে অন্যের করোনা ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটকে সম্মান জানিয়ে দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপরও জোর দিয়েছেন নেতারা। এ নীতিমালা থাইল্যান্ড ও ফ্রান্সের মতো পর্যটননির্ভর অর্থনীতিগুলোর জন্য লাভজনক বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) একটি বড় অংশই আসে পর্যটন খাত থেকে। ১৯৯৬ সালের পর থেকেই দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে আসেম সম্মেলন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ব্রাসেলসে আয়োজন হয়েছিল এর আগের সম্মেলনটি। ২০২০ সালে পরবর্তী সম্মেলন কম্বোডিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীতে তা পিছিয়ে আসে। ২০২৩ সালে আসেমের পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ইউরোপের কোনো দেশে। নিক্কেই এশিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এশিয়া-ইউরোপ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ